শেখ হাসিনা ও তাঁর সরকারের পতন হতেই কি সুদিন ফিরতে শুরু করল বাংলাদেশ ন্যাশনালিস্ট পার্টি (বিএনপি)-এর নেত্রী তথা বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী খালেজা জিয়ার?
এই প্রশ্ন উঠছেই। কারণ, হাসিনা দেশ ছাড়ার পরই প্রথমে খালেদা জিয়াকে তাঁর দীর্ঘদিনের বন্দিদশা থেকে মুক্তি দেওয়া হয়। দিন কয়েক আগেই প্রকাশ্যে সেনাবাহিনীর অনুষ্ঠানে যোগ দেন তিনি। আর এবার খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে চলা দুর্নীতির মামলা থেকে তাঁকে খালাস করে দিল বাংলাদেশের একটি আদালত।
সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত খবর অনুসারে, সংশ্লিষ্ট মামলায় দোষী সাব্যস্ত হলে খালেদা জিয়াকে সাতবছর হাজতবাস করতে হত।
লক্ষ্যণীয় বিষয় হল, এই একই মামলায় এর আগে (২০১৮ সালে) ঢাকার একটি নিম্ন আদালতে দোষী সাব্যস্ত হয়েছিলেন বিএনপি নেত্রী। খালেদার বিরুদ্ধে রুজু হওয়া জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় তাঁর বিরুদ্ধে যাবতীয় অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে বলেই রায় দিয়েছিল আদালত। এবং সেই রায় অনুসারে, তাঁকে কারাবাসের নির্দেশও দেওয়া হয়েছিল।
বাংলাদেশি সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুসারে, এদিন বিচারপতি একেএম আসাদুজ্জামান এবং বিচারপতি সইদ এনায়েত হোসনের বেঞ্চ খালেদা জিয়াকে বেকসুর খালাস করে।
উল্লেখ্য, এই মামলায় নিম্ন আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিল করেছিলেন খালেদা। তার ভিত্তিতেই এদিনের এই রায় দেওয়া হয়। খালেদার পাশাপাশি এই মামলার অন্য অভিযুক্তদেরও মুক্তি দিয়েছে আদালত।
প্রসঙ্গত, বেগম খালেদা জিয়া-সহ মোট চারজনের বিরুদ্ধে ২০১১ সালে এই মামলাটি রুজু করেছিল বাংলাদেশের অ্যান্টি-কোরাপশন কমিশন। তেজগাঁও থানায় দায়ের হওয়া এফআইআর-এর ভিত্তিতে এই মামলা করা হয়েছিল।
তাতে অভিযোগ করা হয়েছিল, নিজেদের ক্ষমতার অপব্যবহার করে খালেদা ও তাঁর তিন সঙ্গী ট্রাস্টের নাম করে অজ্ঞাত বিভিন্ন জায়গা থেকে বিপুল পরিমাণ অর্থ সংগ্রহ করেছিলেন।
এরপর ২০১৮ সালে সেই মামলায় দোষী সাব্যস্ত হন খালেদা। আদালত তাঁকে পাঁচবছর কারাবাসের শাস্তি দেয়। যার জেরে ওই বছরেরই ৮ ফেব্রুয়ারি খালেদাকে পুরোনো ঢাকার কেন্দ্রীয় সংশোধনাগারে পাঠানো হয়।
এরপর ২০১৮ সালের ৩০ অক্টোবর খালেদার সাজার মেয়ার পাঁচবছর থেকে বাড়িয়ে ১০ বছর করে দেয় হাইকোর্ট।
কিন্তু, করোনা অতিমারির সময় কিছুটা রেহাই পান খালেদা জিয়া। তাঁর বয়স ও স্বাস্থ্যের কথা মাথায় রেখে, ২০২০ সালে জেল থেকে সাময়িক মুক্তি দেওয়া হয় বিএনপি নেত্রীকে। কিন্তু, আদালতের শর্ত ছিল, হাজতবাস থেকে সাময়িক মুক্তি পেলেও গৃহবন্দি হয়েই থাকতে হবে খালেদাকে।
এই সময়ের মধ্যে তিনি তাঁর গুলশনের বাসভবন থেকে কোথাও যেতে পারবেন না। এবং কোনও অবস্থাতেই বাংলাদেশ ছেড়ে অন্য কোনও দেশে যেতে পারবেন না।