প্রতিবার শীতের আগে ভারতে চলে আসে পরিযায়ী পাখির দল। এরপর শীত কমে যেতেই ফের তারা ফিরে যায় তাদের নিজেদের দেশে। বছরের পর বছর ধরে এটাই একটা সাধারণ রীতি। তবে এবার দুটি বিষয় দেখে হতবাক বিশেষজ্ঞরা। দেখা যাচ্ছে কিছুটা আগেই গরম পড়ে যাচ্ছে। তার জেরে পরিযায়ী পাখিদের একাংশ আগেভাগেই ফিরে যাচ্ছেগত নিজের দেশে। কিন্তু অপর অংশের ভাবগতিক কিছুটা অন্যরকম। তারা কার্যত ওড়িশাকেই তাদের নিজের ঘর মনে করে পাকাপাকিভাবে থাকতে শুরু করেছে। তবে ওড়িশার জলভূমি সংলগ্ন এলাকায় তাদের জন্য় পর্যাপ্ত খাবার রয়েছে। তবে তাদের এই বদলে যাওয়া আচরণ পর্যবেক্ষণ করছেন বিশেষজ্ঞরা।
এদিকে ওড়িশায় সাধারণত প্রায় ২৫০ প্রজাতির পাখির দেখা মেলে। তার মধ্য়ে ১১৫ প্রজাতির পাখি বিদেশি। আর বাকি দেশীয় পাখি। স্কিমার, স্পট বিলড ডাক, রিভার টার্ন সহ বিভিন্ন প্রজাতির পাখি আগে পরিযায়ী পাখি বলেই গণ্য করা হত। কিন্তু তাদের অনেকেই এখন পাকাপাকিভাবে থাকে ওড়িশায়। চিল্কা হ্রদ, সাতকোশিয়া, হিরাকুঁদ সহ বিভিন্ন এলাকায় থাকে তারা।
টাইমস অফ ইন্ডিয়ার প্রতিবেদন অনুসারে জানা গিয়েছে, গহর আবেদিন নামে এক পাখি বিশেষজ্ঞ জানিয়েছেন, যে পাখিগুলো ফিরে যায়নি তারা এখানেই থেকে গিয়েছে। তিনি জানিয়েছেন, কিছু পাখি স্থানীয় আবহাওয়ার সঙ্গে মানিয়ে নিয়েছে। তারা প্রচন্ড ঠান্ডা এলাকা থেকে এসেও এখানে মানিয়ে নিয়েছে। তারা আর ফিরে যেতে চায়নি। গত বছর পাঁচেক ধরে দেখা যাচ্ছে কিছুটা আগে গরম পড়ে যাচ্ছে। আর পরিযায়ী পাখিদের একাংশ আগে ফিরে যাচ্ছে। আবহাওয়ার পরিবর্তনের জেরে এটা হচ্ছে। এদের নিয়ে আরও গবেষণা করা দরকার।
মূলত তারা যেখান থেকে আসা সেখানে জলভাগ বরফ হয়ে যায়। সেকারণে তারা অক্টোবর থেকে উড়তে শুরু করে। এরপর নভেম্বরে পৌঁছায় দেশে। চিফ ওয়াইল্ড লাইফ ওয়ার্ডেন জানিয়েছেন, আবহাওয়ার পরিবর্তন একটা বড় প্রভাব ফেলছে। গরমকালে একবার পাখি গণনা করতে হবে। এর ফলে বোঝা যাবে কারা ফিরে গেল আর কারা থেকে গেল।
তবে আবেদিন আরও একটা তাৎপর্যপূর্ণ কথা বলেছেন। তিনি জানিয়েছেন, পরিযায়ী পাখিদের একাংশ তাদের রুট বদলে ফেলছে। তারা সাধারণত ওড়িশা থেকে ফেরার পথে পাকিস্তানের রুটে যেত। কিন্তু কিছুক্ষেত্রে পাকিস্তানে তাদের একাংশকে মেরে ফেলা হয়। এর জেরে তাদের অনেকেই এই রুট এড়িয়ে চলছে। তারা ওই রুট দিয়ে আর যেতে চাইছে না।