মাঝরাতে ঘুমের মধ্যেই হামলা করা হল। আর তার জেরে নিহত হয়েছে যুবক। যুবকের গলার নলি কেটে খুন করা হয় বলে অভিযোগ। আর এই ঘটনার নেপথ্যে রয়েছে স্ত্রীর প্রথম স্বামী। শুনতে অবাক লাগলেও ঘটেছে এমনই ঘটনা। আর এই ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়েছে পূর্ব মেদিনীপুরের পটাশপুরে। পরিবার সূত্রে খবর, গোপনে পাড়ার এক গৃহবধূকে বিয়ে করেছিল নিহত যুবক। প্রতিশোধ নিতে তার প্রথম স্বামী এমন খুন করেছে বলে অভিযোগ। মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। আর খুনিকে নাগালে পেতে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। তবে স্ত্রীকে আটক করা হয়েছে।
এই ঘটনা যখন ঘটে তখন স্বামী–স্ত্রী পাশাপাশি ঘুমিয়েছিলেন। স্ত্রীর দাবি, মাঝরাতে পাশে শুয়ে থাকা স্বামী রক্তে ভাসছেন অনুভব করে চমকে ওঠেন। তারপর দেখেন গলা কাটা। তখন ওই ঘটনা দেখে চিৎকার করতেই এলাকার লোকজন ছুটে আসেন। খবর দেওয়া হয় পটাশপুর থানায়। আজ, মঙ্গলবার পুলিশ গিয়ে মৃতদেহ উদ্ধার করে। তখনই পুলিশ জানতে পারে এই স্ত্রীর আগেরপক্ষের স্বামী আছে। তাই নিহতের স্ত্রী ও শাশুড়িকে থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। নিহত যুবকের নাম দীপঙ্কর গিরি (৩৫)। পূর্ব মেদিনীপুর জেলার পটাশপুর–২ ব্লকের পাঁচেট এলাকার বাসিন্দা।
আরও পড়ুন: মদের আসরে বউকে নিয়ে দুই সুরাপ্রেমীর ঝামেলা, খুন সহকর্মী, অভিযুক্ত গ্রেফতার দত্তপুকুরে
স্থানীয় সূত্রে খবর, চার বছর আগে বিয়ে হয়েছিল। কিন্তু প্রথম স্ত্রী দীপঙ্করকে ছেড়ে চলে যায়। তখন পাশের পাড়ার এক গৃহবধূর সঙ্গে দীপঙ্করের প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। ওই গৃহবধূর এক শিশু সন্তান আছে। সেই সমেত তাঁকে গোপনে বিয়ে করে বাড়িতে নিয়ে আসেন দীপঙ্কর। ওই গৃহবধূর প্রথম পক্ষের স্বামী সেটা জেনে ফেলে। তখন দীপঙ্করকে মারধর করার ও খুনের হুমকি দেয় বলে অভিযোগ। একাধিকবার স্ত্রী ও সন্তানকে বাড়ি ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন প্রথম স্বামী। কিন্তু গৃহবধূ দীপঙ্করকে ছেড়ে যেতে নারাজ। এটা সহ্য করতে না পেরে মাঝরাতে বাড়িতে ঢুকে গৃহবধূর এখনকার স্বামী দীপঙ্কর গিরির গলার নলি কেটে খুন করে প্রথম স্বামী।
এছাড়া বিবাহিত মহিলার সঙ্গে দীপঙ্করের সম্পর্ক গড়ে ওঠা নিয়ে তাঁর আত্মীয় শঙ্কর গিরি বলেন, ‘এখন অন্য একজনের স্ত্রী আর ছেলেকে নিয়ে থাকছিল দীপঙ্কর। ওরা বলত, সব মীমাংসা করেই এখানে এসেছে। তবে ওর স্বামী বারবার স্ত্রী, সন্তানকে নিয়ে যেতে চাইত। সম্ভবত তাই এই ঘটনা বলে মনে হচ্ছে।’ গ্রামের পঞ্চায়েত সদস্য স্বপন ঘোড়ুইয়ের বক্তব্য, ‘অনেকদিন ধরে এই বিয়ে নিয়ে টানাপোড়েন চলছিল। কিন্তু এমন নির্মম খুনের ঘটনায় তার শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।’ আর এগরার এসডিপিও দেবীদয়াল কুণ্ডুর কথায়, ‘দ্বিতীয় পক্ষের স্ত্রীর স্বামী তাপস মাইতির সঙ্গে বেশ কিছুদিন ধরে গোলমাল চলছিল। হুমকিও দিয়েছিল। সে এই কাজের সঙ্গে যুক্ত বলে মনে করা হচ্ছে। যদিও তাপস নিখোঁজ। আমরা তার খোঁজ শুরু করেছি।’