এক বা ১০ জন নয়, একসঙ্গে ৮৬ জন অধ্যাপককে শোকজ করলেন খড়গপুর আইআইটি কর্তৃপক্ষ। বিষয়টি সামনে আসতেই শোরগোল পড়ে গিয়েছে। একসঙ্গে এতজন অধ্যাপককে শোকজ করার নজির প্রতিষ্ঠানের দীর্ঘ বছরের ইতিহাসে নেই বলেই মনে করছে অধ্যাপক মহল। বিষয়টি সামনে আসতেই শোকজ নোটিশ প্রত্যাহারের দাবিতে সরব হয়েছে খড়গপুর আইআইটি টিচার্স অ্যাসোসিয়েশন। তাদের দাবি, কোনওরকমের পদক্ষেপ করা থেকে থেকে বিরত থাকতে হবে। সেইসঙ্গে নোটিশ প্রত্যাহার না করা হলে আমরণ অনশন শুরু করার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন অধ্যাপকরা।
আরও পড়ুন: ‘তুঘলকি শাসন চালাচ্ছেন’ IIT খড়গপুরের ডিরেক্টরকে বহিষ্কারের দাবি জানালেন হিরণ
কেন শো কজ করা হল অধ্যাপকদের?
জানা যাচ্ছে, সম্প্রতি আইআইটি খড়গপুরে স্বজনপোষণের অভিযোগ তুলে সরব হয়েছিলেন প্রতিষ্ঠানটির শিক্ষকদের একাংশ। তাঁদের অভিযোগ ছিল, গত ৫ বছর ধরে প্রতিষ্ঠানে অভূতপূর্বভাবে স্বজনপোষণ করা হচ্ছে। তার ফলে আইআইটি খড়গপুরের সুনাম নষ্ট হচ্ছে। এই অভিযোগ তুলে আইআইটি খড়গপুর শিক্ষক সমিতি মানবসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রীকে একটি চিঠিও দিয়েছিল। চিঠিতে তারা এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার আবেদন জানান। আর এনিয়ে শিক্ষকেরা মূলত কাঠগড়ায় তুলেছিলেন প্রতিষ্ঠানের বর্তমান অধিকর্তা ভিকে তেওয়ারিকে।
শিক্ষক সমিতি আইআইটি খড়গপুরে পরবর্তী পরিচালক নির্বাচনের ক্ষেত্রেও একজন উচ্চ শিক্ষিত এবং অভিজ্ঞ কাউকে বেছে নেওয়ার জন্য মন্ত্রীর কাছে অনুরোধ জানায়। চিঠিতে শিক্ষকেরা অভিযোগ করেছেন, যে প্রতিষ্ঠানের ভিতরে ব্যাপকভাবে স্বজনপোষণ করা হচ্ছে। তাঁদের অভিযোগ, বর্তমান অধিকর্তার আমলেই পক্ষপাতিত্ব বেশি হচ্ছে। এটি আইআইটি খড়গপুরের চেতনার পরিপন্থী। এছাড়াও, প্রতিষ্ঠানে একাধিক গুরুত্বপূর্ণ পদে স্বজনপোষণের অভিযোগ তোলেন তাঁরা। মূলত সেই চিঠি কেন দেওয়া হয়েছে, সেই প্রশ্ন তুলেই শিক্ষক সমিতির সদস্যদের শো কজ করেন কর্তৃপক্ষ। এর পর তাঁদের বিরুদ্ধে ডিসিপ্লিনারি পদক্ষেপ করা শুরু হয়। এর প্রতিবাদ জানিয়ে ইতিমধ্যেই শিক্ষকরা রেজিস্ট্রারকে চিঠি দিয়েছেন। তারা অবিলম্বে সমিতির পদাধিকারীদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ বন্ধের দাবি জানিয়েছেন।
তাঁদের হুঁশিয়ারি, দাবি মানা না হলে সোমবার থেকে তাঁরা অনশন শুরু করবেন। যদিও আইআইটি কর্তৃপক্ষ জানাচ্ছে, নিয়ম অনুযায়ী এভাবে গণ আবেদনের ক্ষেত্রে শিক্ষকরা সই করতে পারেন না। এবিষয়ে কেন তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে না তা জানাতে বলা হয়েছে। জানা গিয়েছে, আজ রবিবার অধ্যাপকরা এ বিষয়ে আলোচনায় বসতে পারেন। পাশাপাশি তারা আইনি পরামর্শ নেবেন বলেও জানা গিয়েছে।