কলকাতার প্রাণকেন্দ্র ধর্মতলা। এখানে সকাল থেকে রাত পর্যন্ত বহু মানুষের আনাগোনা লেগে থাকে। অফিসপাড়া থেকে শুরু করে নানা জায়গায় যাতায়াতের মধ্যবর্তী এলাকা এই ধর্মতলা বা এসপ্ল্যানেড। এবার এখান থেকে বাস স্ট্যান্ড সরিয়ে নেওয়ার নির্দেশ দিল কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ। বিচারপতি দেবাংশু বসাক এবং বিচারপতি শম্পা সরকারের বেঞ্চ রাজ্য সরকারকে বাস স্ট্যান্ড সরাতে পদক্ষেপ করতে বলেছে। কারণ কদিন পর ইস্ট–ওয়েস্ট মেট্রোর সম্প্রসারণ হবে। আর ভবিষ্যতে তিনটি মেট্রোর সংযোগস্থল হিসেবে ধর্মতলার গুরুত্ব বাড়বে। তখন ট্র্যাফিকের চাপ সামলানো কঠিন হয়ে পড়বে। তার উপর এই এলাকায় বায়ুদূষণ কমাতে বিকল্প ব্যবস্থা করতে হবে। তাই রাজ্য সরকার রেল ইন্ডিয়া টেকনিক্যাল অ্যান্ড ইকোনমিক সার্ভিসের (রাইটস) মাধ্যমে সমীক্ষা করার ব্যবস্থা করে।
কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশ এবং পরিবেশের স্বার্থে উদ্যোগ নেয় রাজ্য সরকার। আর ওই রাইটসের সমীক্ষাও হয়ে যায়। ওই সমীক্ষা রিপোর্টে উঠে এসেছে, ধর্মতলায় বহু ঐতিহাসিক ভবন এবং পর্যটন কেন্দ্র রয়েছে। তাই সেখানে বড় প্রকল্প গড়ে তোলা কঠিন। তাই বিকল্প পথ হিসেবে তারা মাল্টি লেভেল কার পার্কিং করার পরামর্শ দেয়। এই প্রকল্পের আনুমানিক ব্যয় প্রায় ৪৫০ কোটি টাকা। এই বিষয়টি নির্মাণের প্রস্তাব নিয়ে ইতিমধ্যেই পরিবহণ, পূর্ত, কলকাতা পুলিশ, কলকাতা পুরসভা এবং কেএমডিএ’র সঙ্গে একাধিক বৈঠক হয়েছে।
আরও পড়ুন: পুলিশ বাহিনীকে সতর্ক থাকার নির্দেশ দিল লালবাজার, ‘অপারেশন সিঁদুর’–এর পরই পদক্ষেপ
ওই বৈঠক হয় কলকাতা পুরসভার কনফারেন্স রুমে। মেয়র ফিরহাদ হাকিমের নেতৃত্বে ওই গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন পরিবহণ মন্ত্রী স্নেহাশীষ চক্রবর্তী, পুলিশ কমিশনার মনোজ ভার্মা সহ রাইটস–এর প্রতিনিধিরা। এখানেই রাইটস–এর পক্ষ থেকে মাল্টি লেভেল পার্কিংয়ের নকশা পেশ করা হয়। ওই নকশায় দেখা যায়, এই পার্কিংয়ের বেসমেন্ট ব্যবহার করা হবে বাস পার্কিং করার জন্য। সেখানে বাসগুলি অস্থায়ীভাবে থামতে পারবে। তাতে যাত্রীরাও উপকৃত হবেন বলে মনে করা হচ্ছে। এই কাজ বাস্তবে রূপ পেলে জায়গার সঙ্কট কেটে যাবে। আবার শহরে দূষণ কমবে।
কলকাতা পুরসভা সূত্রে খবর, রাইটস–এর সঙ্গে বৈঠক ছাড়াও আর একটি বৈঠক হয়। সেখানে ভবিষ্যতে রুফটপ বা বেসমেন্টে নতুন করে কোনও রেস্তোরাঁ অথবা ক্যাফে খোলার অনুমতি দেওয়া হবে না বলে সিদ্ধান্ত হয়। কলকাতা পুরসভা একটি স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসিডিওর (এসওপি) তৈরি করেছে। আর সেটা মুখ্যসচিবের দফতরে পাঠানো হয়েছে। এই বিষয়ে মেয়র ফিরহাদ হাকিম বলেন, ‘ধর্মতলা এলাকায় বাস স্ট্যান্ড কেমন করে সরানো যায় এবং এলাকার উন্নয়ন করা যায় সেটা নিয়ে রাইটস একটি বিস্তারিত প্রেজেন্টেশন দিয়েছে। আগামীদিনে আরও কয়েকটি বৈঠক করে সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করা হবে।’