নিয়োগ কেলেঙ্কারি থেকে শুরু করে আরজি কর ধর্ষণ ও খুন - একের পর এক ঘটনায় বারবার প্রতিবাদে উত্তাল হয়েছে কলকাতার রাজপথ। সেই ধারায় সাম্প্রতিকতম সংযোজন হল - সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে প্রায় ২৬ হাজার শিক্ষক-শিক্ষিকা, অশিক্ষক কর্মচারী ও শিক্ষাকর্মীর এক ধাক্কায় নিয়োগ বাতিলের প্রতিবাদ। যাতে ঘৃতাহুতি দিয়েছে মুখ্যমন্ত্রীর 'স্বেচ্ছাশ্রম' প্রস্তাব! তথ্যাভিজ্ঞ মহলের একাংশ অন্তত তেমনটাই দাবি করছে।এই প্রেক্ষাপটে বুধবার (৯ এপ্রিল, ২০২৫) রাজ্যজুড়ে ডিআই অফিস অভিযান ও ঘেরাও কর্মসূচি পালন করেন সদ্য চাকরিহারা। সেই বিক্ষোভ সামাল দিতে পুলিশ যেভাবে নিরস্ত্র শিক্ষক-শিক্ষিকাদের উপর লাঠিচার্জ করেছে, তাতে সমাজের সকলস্তর থেকেই নিন্দার ঝড় উঠেছে। বুধবার এই ঘটনার সূত্রপাত হয় কলকাতায় কসবায়। সেখানে বিক্ষোভরতদের উপর পুলিশকে শুধুমাত্র লাঠিচার্জ করতেই দেখা যায়নি, এক উর্দিধারী তো এক শিক্ষকের পেটে রীতিমতো লাথি মারেন! এই দৃশ্য সংবাদমাধ্যম ও সোশাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়তেই চরম অস্বস্তি ও প্রশ্নের মুখে পড়তে হয় পুলিশ প্রশাসনকে।এবার কসবার সেই শিক্ষক পেটানো এবং শিক্ষকের পেটে লাথি মারার প্রতিবাদেও রাস্তায় নামছেন ২০১৬ সালে এসএসসি-র প্যানেলভুক্ত এবং বর্তমানে চাকরিহারা শিক্ষক-সহ সমস্ত ভুক্তভোগীরা। কসবা কাণ্ডের প্রতিবাদে আজ (বৃহস্পতিবার - ১০ এপ্রিল, ২০২৫) দুপুর ১২টা থেকে মহামিছিল করবেন তাঁরা। এই মিছিল শুরু হবে শিয়ালদা থেকে। শেষ হবে ধর্মতলায়।জানা গিয়েছে, এই মহামিছিলের ডাক দিয়েছে - 'যোগ্য শিক্ষক শিক্ষিকা অধিকার মঞ্চ ২০১৬'। তবে, যত দূর শোনা যাচ্ছে, এই মিছিলে শুধুমাত্র চাকরিহারারাই যোগ দেবেন, এমনটা নয়। শিল্পী, সাহিত্যিক, বুদ্ধিজীবী, চিকিৎসক, স্কুল-কলেজ এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীদেরও এই মিছিলে পা মেলানোর জন্য আহ্বান জানানো হয়েছে। অনুমান করা হচ্ছে, তাঁদের একটা বড় অংশ এই মহামিছিলে যোগদান করতে পারেন।এদিকে, শুক্রবার চাকরিহারাদের সঙ্গে বৈঠকে বসার কথা রয়েছে রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুর। সেই বৈঠক হবে বিকাশ ভবনে। জানা গিয়েছে, সেই বৈঠকে যোগ দিতে যাওয়ার আগে শুক্রবারই (১১ এপ্রিল, ২০২৫) এসএসসি ভবন অভিযান করবেন চাকরিহারা শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীরা। তারপর সেখান থেকেই বিকাশ ভবনের দিকে রওনা দেবেন তাঁরা।অন্যদিকে, বুধবার রাতভর এসএসসি ভবনের সামনে অবস্থান চালিয়ে গিয়েছেন চাকরিহারাদের একটি অংশ। তাঁদের বক্তব্য, এসএসসি এই গোটা নিয়োগ প্রক্রিয়া পরিচালনা করেছে। তারা জানে না যোগ্য এবং অযোগ্য চাকরিপ্রাপক কারা, এটা হতে পারে না। তারা এই বিভাজন স্পষ্ট করে দেয়নি বলেই শীর্ষ আদালত সকলের চাকরি বাতিল করে দিয়েছে।তাই, অবস্থানকারীদের দাবি - এসএসসি-কেই যোগ্য ও অযোগ্যদের তালিকা প্রকাশ করতে হবে এবং তা সুপ্রিম কোর্টের হাতে তুলে দিতে হবে। অন্যথায় তাঁরা এই অবস্থান ও আন্দোলন চালিয়ে যাবেন। শেষ পাওয়া খবর অনুসারে - দাবি আদায় না হলে অনশনেও বসতে পারেন চাকরিহারাদের একটা অংশ।