বেশ অনেকদিন পরে নবান্নের মিটিংয়ে মুখ্য়মন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের রুদ্র রূপ দেখল বাংলা। মন্ত্রী, আমলা, পুলিশকর্তা কাউকেই রেয়াত করলেন না তিনি। বিজেপির দাবি, আসলে এবারের লোকসভা ভোটে শহরাঞ্চলে বিরাট ধাক্কা খেয়েছে তৃণমূল। এরপরই মাথায় হাত পড়ে গিয়েছে তৃণমূলের। তার জেরেই এই ধরনের চমক ধমক।
সোমবার একেবারে নাম করে ধমক দেন বাংলার মুখ্য়মন্ত্রী। মন্ত্রী সুজিত বসুর নাম ধরে ধমক দেন। আর কলকাতা হাওড়ার রাস্তার অবস্থা নিয়ে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেন তিনি। মমতা বলেন, এবার কি আমাকে রাস্তা ঝাঁট দিতে বেরোতে হবে? শুধু উপর দেখলে হবে? নীচে দেখতে হবে না? রাস্তা দেখে না, আলো দেখে না। শুধু ট্যাক্স বাড়ানো আর লোক বসাচ্ছে। এছাড়া প্রশাসন কোনও ব্যবস্থা নিচ্ছে না।
মমতা বলেন, অনেক ভদ্রতা দেখিয়েছি। তার মানে এটা নয় যে গায়ের জোরে জমি দখল করবেন এট নয়।…
জায়গা দখল নিয়ে এতদিন অভিযোগ করতেন বিরোধীরা। এবার এনিয়ে নিশানা করলেন খোদ মমতা। তিনি বলেন, কোথাও জবরদখল হলে কেন ব্যবস্থা নিচ্ছেন না? অনেকে আছেন এর মধ্যে। নাম বলে কাউকে অস্বস্তিতে ফেলতে চাই না। তবে একটা গ্রুপ তৈরি হয়েছে। খালি জায়গা দেখলেই তাঁরা লোক বসাচ্ছেন বাংলার আইডেন্টিটি নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। এ সবে রাজ্যের ভাবমূর্তি নষ্ট হচ্ছে।
মমতা বলেন, কোথাও ম্যানহোলের ঢাকনা খোলা থাকলে সেটাও খুলে নিয়ে বিক্রি করে দেন অনেকে। তার জন্য় একটা সিস্টেম কেন হচ্ছে না? কেন জল অপচয় হচ্ছে? …কেউ টাকা খেয়ে কেউ টাকা খাইয়ে এসব করাচ্ছেন। মমতার সাফ কথা, রাম শ্য়াম যদু মধু যেই হোন, আমিও যদি হই ছাড়বেন না। লোভ বেড়ে যাচ্ছে। লোভটাকে কমাতে হবে। সরকারি জমি দখল করে একের পর এক বিল্ডিং তৈরি হচ্ছে। রাজ্য সরকার নতুন রাস্তা তৈরি করেছে। তার রক্ষণাবেক্ষণও হচ্ছে না। কেন এসব হবে? দেখার দায়িত্ব কেবল আমার?
এমনকী সুজিত বসুর নাম করে তিনি বলেন, রাজারহাটে সুজিত লোক বসাচ্ছে কম্পিটিশন করে।
সেই সঙ্গে বিজেপিকেও একহাত নেন তিনি।
মমতা বলেন, গরু পাচারের সবথেকে বেশি টাকা খায় বিজেপি, কয়লা পাচারের সবথেকে বেশি টাকা খায় বিজেপি। পুর পরিষেবা সংক্রান্ত বৈঠকে এদিন মুখ্য়মন্ত্রী একের পর এক অভিযোগ করেন।
‘অফিসাররা ভাগ দিচ্ছে বিজেপিকে। বাংলা থেকে মোটা টাকা খাচ্ছে বিজেপি। গরু কয়লা, পাথর, বালি সবথেকে বেশি খায় বিজেপি। টাকা যায় পুলিশের মাধ্য়মে। ওভারলোডিং ট্রাক থেকে যায়। আমাদের কিছু লোক আছে…যাতে ইডি সিবিআই না ধরে।’
তিনি জানিয়ে দেন, টাকা তোলার মাস্টার চাই না, কাজ করলেই তবে টিকিট মিলবে। আমি জনসেবক চাই। যারা করবেন তারা থাকুন। না হলে আউট…তা তিনি যত বড় নেতাই হোন না কেন…