আরজি কর ধর্ষণ ও খুনের ঘটনায় নির্যাতিতার নাম প্রকাশ্যে আনা সংক্রান্ত ঘটনায় কলকাতা পুলিশের তৎকালীন কমিশনার বিনীত গোয়েলের পাশেই দাঁড়াল রাজ্য সরকার। উচ্চ আদালতে হলফনামা দিয়ে রাজ্যের পক্ষ থেকে জানিয়ে দেওয়া হল, এই ঘটনায় রুজু হওয়া একজোড়া জনস্বার্থ মামলা কোনওভাবেই আদালতের গ্রহণযোগ্য হতে পারে না। রাজ্যের সেই হলফনামার প্রতিলিপি মামলাকারীদেরও পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। মামলা সরল বিচারপতি জয়মাল্য বাগচির ডিভিশন বেঞ্চে।
কী ঘটেছিল?
গত বছরের অগস্ট মাসে উত্তর কলকাতার আরজি কর হাসপাতালে তরুণী চিকিৎসক পড়ুয়াকে ধর্ষণ ও খুনের ঘটনা ঘটে। ভারতের শীর্ষ আদালতের নির্দেশ অনুসারে, শ্লীলতাহানি, ধর্ষণ, অ্যাসিড হামলার মতো ঘটনাগুলিতে কখনই ঘটনার শিকার ব্যক্তি বা নিগৃহীতার নাম ও পরিচয় প্রকাশ্যে আনা যায় না। কিন্তু, সেই নির্দেশ উপেক্ষা করে কলকাতার তৎকালীন পুলিশ কমিশনার বিনীত গোয়েল এই ঘটনায় নির্যাতিতার নাম প্রকাশ্যেই উচ্চারণ করেন।
একজন পুলিশ কর্তার এমন আচরণে স্বভাবতই নানা মহলে সমালোচনা শুরু হয়। সেই ঘটনার প্রেক্ষিতে বিনীত গোয়েলের বিরুদ্ধে দু'টি জনস্বার্থ মামলা রুজু করা হয়। সেই মামলা করা হয় কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির এজলাসে। কিন্তু, প্রধান বিচারপতি আগেই এই মামলা থেকে অব্য়াহতি চেয়ে নেন। ফলত, মামলা যে অন্য বেঞ্চে সরবে তা জানাই ছিল।
এদিকে, মামলা থেকে অব্যাহতি নিলেও প্রধান বিচারপতির বেঞ্চ এই মামলা প্রসঙ্গে রাজ্য সরকারে মতামত জানতে চায়। এই মর্মে রাজ্য যাতে উচ্চ আদালতের সংশ্লিষ্ট এজলাসে তাদের হলফনামা পেশ করে, সেই নির্দেশও দেওয়া হয়।
এরপরই এই মামলা প্রধান বিচারপতির বেঞ্চ থেকে বিচারপতি জয়মাল্য বাগচির ডিভিশন বেঞ্চে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। এবং এই বেঞ্চেই রাজ্য সরকার তার হলফনামা জমা করে।
পশ্চিমবঙ্গ সরকারের বক্তব্য হল, আদালতে এই মামলার গ্রহণযোগ্যতাই নেই। কেন? কারণ, রাজ্যের দাবি, যিনি বা যাঁরা কলকাতার তৎকালীন পুলিশ কমিশনার - আইপিএস - বিনীত গোয়েলের বিরুদ্ধে মামলা রুজু করেছেন, তাঁরা আসলে এই জাতীয় মামলা রুজু করতেই পারেন না। এখন দেখার, রাজ্যের পেশ করা এই হলফনামার প্রেক্ষিতে আদালত কী সিদ্ধান্ত নেয় এবং মামলাকারীরাই বা এর কী জবাব দেন।
এদিকে, আরজি কর মামলায় ইতিমধ্য়েই দিল্লিতে গিয়ে সিবিআই কর্তাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে এসেছেন নির্যাতিতার বাবা-মা। আর তারপরই তদন্তের গতি বাড়িয়েছে সিবিআই। আজ ও কাল (৩ - ৪ মার্চ, ২০২৫) - এই দুই দিনে মোট ১১ জন তাদের কলকাতার দফতরে হাজির হতে বলে তলব করেছে সিবিআই।