অস্ট্রেলিয়া সফরে এসে বহুবার গ্যালারির বিদ্রুপ হজম করতে হয়েছে ভারতীয় ক্রিকেটারদের। গত সফরে মহম্মদ সিরাজের পিছনে পড়ে অজি সমর্থকরা। এবার কনস্টাসের সঙ্গে ঝামেলার জেরে বিরাট কোহলির মতো সুপারস্টারকেও কটুক্তি করতে পিছ পা হয়নি মেলবোর্ন ও সিডনির গ্যালারি।
বিষয়টি যে ভারতীয় শিবিরের আঁতে ঘা দিয়েছে, সেটা বোঝা যায় রোহিত শর্মার কথায়। সিডনি টেস্টের দ্বিতীয় দিনের লাঞ্চে স্টার স্পোর্টসের সাক্ষাৎকারে রোহিত স্পষ্ট করে দেন যে, তাঁরা চান নিজেদের সাফল্য দিয়ে বিদ্রুপ করতে থাকা দর্শকদের মুখ বন্ধ করে দিতে।
রোহিত বলেন, 'এখানে ওদের (অস্ট্রেলিয়ার) দর্শকরা কতটা সক্রিয় দেখুন! আমরা সবাই চাই ওদের মুখ বন্ধ করতে। আমাকে বলুন যে, এখানে এসে কারা ২ বার সিরিজ জিতেছে? হতে পারে এবার আমাদের সিরিজ জয়ের সুযোগ নেই। তবে সিরিজ ড্র করে ট্রফি নিজেদের কাছে রাখার সুবর্ণ সুযোগ রয়েছে। আমরা না জিতলে ওদেরও জিততে দেব না। পরপর ৩ বার যদি (অস্ট্রেলিয়া সফরে) ফলাফল ইতিবাচক হয়, তার থেকে ভালো আর কী হতে পারে!
সাক্ষাৎকারে নিজের টেস্ট কেরিয়ারের ভবিষ্যৎ নিয়েও খোলামেলা মন্তব্য করেন রোহিত শর্মা। তিনি স্পষ্ট জানিয়ে দেন যে, এখনই লড়াই ছেড়ে পালিয়ে যাচ্ছেন না। তাঁর কথায়, 'অবসর নিচ্ছি না। আমি খেলা ছেড়ে পালিয়েও যাচ্ছি না। আজ ব্যাট চলছে না। কোনও নিশ্চয়তা নেই যে পাঁচমাস পরেও ব্যাট চলবে না। দু'মাস পরে ব্যাট চলবে না। আমরা ক্রিকেটে দেখেছি যে, প্রতি মিনিটে জীবন বদলে যায়। আমি এই ম্যাচের কথা ভেবে সিদ্ধান্ত নিয়েছি।'
উল্লেখ্য, সিডনি টেস্টে রোহিত শর্মার না খেলা নিয়ে বিস্তর জল্পনা শুরু হয়। তিনি ফের ভারতের হয়ে টেস্ট খেলবেন কিনা, টেস্ট থেকে অবসর নিচ্ছেন কিনা, ফের ভারতের হয়ে ক্যাপ্টেন্সি করবেন কিনা, এমন বিস্তর প্রশ্ন সামনে উঠে আসে। শনিবার সেই সব জল্পনায় জল ঢালেন রোহিত নিজে।
হিটম্যান আরও বলেন, ‘মেলবোর্ন টেস্টের পরেই আমি কোনও সিদ্ধান্ত নিইনি। সবাই নববর্ষের আবহে ছিল। তাই সেই সময় এই নিয়ে আলোচনা করিনি। এখানে (সিডনিতে) এসে কোচ ও নির্বাচকদের বলি যে, আমি রান পাচ্ছি না। এটা গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচ। যারা ফর্মে রয়েছে তাদের মাঠে নামানো উচিত। টিম ম্যানেজমেন্ট আমার সিদ্ধান্তকে সমর্থন করে। বলে, তুমি এতদিন ধরে খেলছ। তুমি ক্যাপ্টেন। যা ভালো বুঝবে সেটাই করো।’
শেষে রোহিত যোগ করেন, ‘আমি অতদূর থেকে এখানে (অস্ট্রেলিয়ায়) এসেছি খেলার জন্য। বাইরে বসে থাকার জন্য নয়। মাঠে নেমে দলকে জেতাতে চাই। তবে কখনও কখনও এটা বোঝা উচিত যে, দলের জন্য কোনটা ভালো হবে। কেননা দলই আগে। নিজে খেলব, নিজে রান করে বসে থাকব, এমন মানসিকতার খেলোয়াড় বা ক্যাপ্টেন দরকার নেই আমাদের। এটা দলগত খেলা। ১১ জন খেলে। তাই দলের স্বার্থই সবার আগে বিবেচনা করা উচিত।’