রবীন্দ্র জাদেজার অলরাউন্ড ক্ষমতা তাঁকে ভারতীয় ক্রিকেট দলের একজন গুরুত্বপূর্ণ সদস্য করে তুলেছে। বিশেষ করে সীমিত ওভারের ক্রিকেটে। তবে ওয়ানডেতে তার ব্যাটিং ফর্ম উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। ২০২২ সালের শুরু থেকে তিনি ওয়ানডেতে একটিও হাফসেঞ্চুরি করতে পারেননি। নিঃসন্দেহে যা উদ্বেগজনক পরিসংখ্যান। আরও বেশি সমস্যা হল, প্রায় গত এক বছর ধরে ১০০-এর বেশি স্ট্রাইক রেটে তিনি কোনও ইনিংস খেলতে পারেননি।
জাদেজাকে প্রায়ই ফিনিশারের ভূমিকায় দায়িত্ব দেওয়া হয়ে থাকে। যে কারণে তাঁকে সাত নম্বরে ব্যাটিং করানো হয়। আধুনিক ওডিআই ক্রিকেটের প্রেক্ষাপটে, এই ভূমিকাটি কেবল রান সংগ্রহ করাই নয়, বরং চিত্তাকর্ষক গতিতে রান তোলার জন্যও খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ডেথ ওভারে দ্রুত রান করার ক্ষমতা রাখাটা কিন্তু ভারতের সাফল্যের জন্য গুরুত্বপূর্ণ হবে।
২০২৩ বিশ্বকাপ যত ঘনিয়ে আসছে, জাদেজার ব্যাটিং ফর্ম আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে। হার্দিক পান্ডিয়ার সঙ্গে তাঁর ফিনিশিং ক্ষমতা ভারতের লোয়ার অর্ডারের ব্যাটিংকে উল্লেখযোগ্য ভাবে শক্তিশালী করতে পারে। যাইহোক, এই অংশীদারিত্বের উন্নতির জন্য, জাদেজাকে অবশ্যই তাঁর ফর্ম ফিরে পেতে হবে এবং সেই প্রভাবশালী ক্যামিওগুলি খেলতে শুরু করতে হবে, যা তাঁর ট্রেডমার্ক হয়ে গিয়েছে।
আরও পড়ুন: গুয়াহাটিতেই আমরা দলের সকলকে পেয়ে যাব- প্রস্তুতি ম্যাচের আগেই ভরসা দিলেন দ্রাবিড়
যদি ২০২৩ সালের শুরু থেকে রবীন্দ্র জাদেজার ওডিআই ব্যাটিং পরিসংখ্যানের দিকে তাকানো যায়, তবে অন্যান্য লোয়ার অর্ডারের ব্যাটারদের তুলনায় একটি লক্ষণীয় বৈষম্য ধরা পড়বে। তাঁর পারফরম্যান্স হতাশাজনক। বিশেষ করে তাঁর স্ট্রাইক রেট উল্লেখযোগ্য ভাবে কম। লোয়ার অর্ডারে ব্যাট করার সময়ে জাদেজা শেষ ১১ ইনিংসে ২৭৩ বল খেলে মাত্র ১৭৩ রান সংগ্রহ করেছেন। এটি ইঙ্গিত করে যে, তিনি উল্লেখযোগ্য অবদান না রেখেই যথেষ্ট সংখ্যক ডেলিভারি গ্রহণ করেছেন। আর ২০২২ সাল থেকে যদি দেখা যায়, তবে জাদেজা ১৪টি ইনিংস খেলে মোট ২২৫ রান করেছেন। গড় ২৮.১। সর্বোচ্চ মাত্র ৪৫।
আরও বিস্ময়ের ব্যাপার হল, রবীন্দ্র জাদেজা গত দশ বছরেরও বেশি সময় ধরে ভারতের মাটিতে ওডিআই ক্রিকেটে একটিও হাফসেঞ্চুরি করেননি। ওয়ানডে-তে ঘরের মাঠে তাঁর শেষ হাফসেঞ্চুরি ২০১৩ সালের ১৫ জানুয়ারি করেছিলেন জাড্ডু। কোচির নেহেরু স্টেডিয়ামে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে।
আরও পড়ুন: প্রথম চার নয়, চ্যাম্পিয়ন হতে প্রত্যয়ী বাবররা সাত বছর বাদে এলেন ভারতে- ভিডিয়ো
পাশাপাশি তাঁর ২৪.৭১ গড় নির্দেশ করে যে, তিনি ব্যাট হাতে রীতিমতো লড়াই করছেন। কিন্তু ফর্মের দেখা নেই। ২০২৩ সালে সব ইনিংস মিলিয়ে তিনি মাত্র ১২টি চার এবং একটি ছক্কা মেরেছেন। বাউন্ডারি মারার ক্ষমতা একজন ফিনিশারের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়, এই পরিসংখ্যানটি এমন একটি ক্ষেত্র নির্দেশ করে, যেখানে জাদেজাকে উল্লেখযোগ্য ভাবে উন্নতি করতে হবে।
যাইহোক, তার সাম্প্রতিক পারফরম্যান্সের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দিক হল, তাঁর স্ট্রাইক রেট, যা দাঁড়িয়েছে ৬৩.৩৭। আধুনিক ওডিআই ক্রিকেটের প্রেক্ষাপটে, একেবারেই গ্রহণযোগ্য নয়, বিশেষ করে একজন ফিনিশার হিসাবে মনোনীত খেলোয়াড়ের জন্য। একটি ইনিংসের শেষ পর্যায়ে, যেখানে দ্রুত রান সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ, সেখানে স্ট্রাইক রেট ৬৩.৩৭ অপর্যাপ্ত এবং হতাশাজনক।
আমরা যদি ইফতিখার আহমেদ (১০৭.১১), ডেভিড মিলার (১২০.৮৯) এবং গ্লেন ফিলিপসের (৮৭.২০) মতো অন্যান্য লোয়ার অর্ডারের ব্যাটসম্যানদের সঙ্গে জাদেজার স্ট্রাইক রেট তুলনা করি, তবে পার্থক্যটি স্পষ্ট হয়ে চোখে পড়বে। এই খেলোয়াড়রা দ্রুত স্কোর করার ক্ষেত্রে আরও কার্যকর ভূমিকা নিচ্ছে, যা একটি ওডিআই ইনিংসের শেষের দিকে খুবই গুরুত্বপূর্ণ।