কালীঘাট মেট্রোয় চুম্বনে লিপ্ত এক যুগল। কিছুদিন আগেই ভাইরাল হয়েছিল এমনই একটা ভিডিয়ো। আর যুগলের এমন কাণ্ড ঘিরে সমালোচনার ঝড় উঠেছিল। কেউ কেউ যদিও তাঁদের সমর্থনেও গলা চড়িয়েছেন। যেমন বিরসা দাশগুপ্ত, শ্রীলেখা মিত্ররা যুগলের সমর্থনেই কথা বলেছেন। তবে এনিয়ে নৃত্যশিল্পী-অভিনেত্রী মমতা শঙ্করের সম্পূর্ণ ভিন্ন মত।
ঠিক কী বললেন মমতা শঙ্কর?
আনন্দবাজারকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন মমতা শঙ্কর। বলেন, ‘এর মতো খারাপ জিনিস হয় না। আমি এর বিরুদ্ধে। কারণ, এরপরে সমস্ত কিছু করার সাহস হয়ে যাবে। স্থান-কাল-পাত্র বলে কোনও ব্যপার থাকবে না! এটা কী, আমরা কী! জন্তুরাও তো আমাদের থেকে অনেক ভালো। এই জন্যই তো এসব হচ্ছে আজকাল, এত রেপ হচ্ছে, আজকাল এতকিছু হচ্ছে। বাচ্চাদের হাতে ফোন যাচ্ছে, ওরা ছোট থেকেই এইসব দেখছে। ওদের মূল্যবোধ কোথায় যাবে!’
মমতা শঙ্কর আরও বলেন, ‘ভালোবাসা মানুষের মধ্যে থাকবেই, তবে সেটার আরও মাধুর্য বাড়ে যখন সেটার একটা আব্রু থাকে। বিদেশ থেকে যেগুলো খারাপ জিনিস, যেগুলো ওরা বর্জন করছে, সেগুলোকে আমরা নিচ্ছি।’
প্রসঙ্গত এর আগে শাড়ির আঁচল নামিয়ে পরা নিয়ে কথা বলে বিতর্কে জড়িয়েছিলেন মমতা শঙ্কর। তাঁর কথায় ‘রাস্তার মেয়ে’, ‘ল্যাম্পপোস্টের নীচে দাঁড়ানো মেয়ে’-র মতো কিছু শব্দবন্ধ ব্যবহার করা নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়েছিল। যদিও শিল্পীর বক্তব্য ছিল স্পষ্ট।
তিনি বলেছিলেন, ‘আজকাল শাড়ি পরব, কিন্তু আঁচল ঠিক থাকবে না! এটা না আমি বুঝতে পারি না। ক্ষমা করবেন এটা বলছি বলে, আগে যাঁদের আমরা রাস্তার মেয়ে বলতাম, যাঁরা ল্যাম্পপোস্টের নীচে দাঁড়িয়ে থাকেন, এইরকম মেয়ে বলতাম। তাঁরা ওইরকম ভাবে দাঁড়াতেন। কিংবা গ্রামে কাজ করতে করতে তাঁর হয়তো আঁচল সরে যেত। সেটা কোনও দোষের ছিল না। আর ওঁরা (যৌনকর্মী) তো পেশার তাগিদে পুরুষদের আকর্ষণ করার জন্য ও ভাবে শাড়ি পরে থাকেন। তাঁদেরও আমি শ্রদ্ধা করছি। কারণ তাঁরা তাঁর পেশার দাগিদে সেটা করছেন। কিন্তু আজকাল তাঁরা বিনা কারণে ওইরকমভাবে শাড়ি পরেন। তারপর লোকে কিছু বললে, তাঁরা রেগে যান। বলেন, মেয়েদের নিচু করা হচ্ছে। আরে মেয়েরাই তো মেয়েদের নিচু করছি আমরা। আমি এটার প্রতিবাদ করি। কারণ, মেয়েদের একটা শালীনতার জায়গা আছে, যেখানে ছেলেরা মেয়েদের শ্রদ্ধা করবে।’ আর তাঁর এই বক্তব্য নিয়েই বিতর্ক তৈরি হয়।
পরে আরও এক সাক্ষাৎকারে মমতা শঙ্কর বলেছিলেন, ‘কেউ শুনলই না ভালো করে আমি কি বলেছি। আমি মান্ধাতা আমলের নই। আমি অত্যন্ত মডার্ন। কিন্তু আমার মনে হয় নিজের ডিগনিটিও রাখা উচিত। আমার মনে আছি আমি আর আমার বউদি তনুশ্রী, তখন আমার বয়স ১৫, আমেরিকান কনসুলেটের প্রোগ্রামে যেতাম খুব। সেখানে অভিনেত্রী জয়শ্রী রায় আসতেন। উনি শাড়ি পরতেন, ব্লাউজ ছাড়া। ভিতরে না পরতেন কোনও সায়া বা অন্তর্বাস। ওঁকে কিন্তু দেখে কখনও খারাপ লাগেনি। আচলটা কোনওদিন এক ফোঁটা সরত না। এত গ্রেসফুল ছিলেন মহিলা।’
আবার বেশকিছুদিন আগে মেয়েদের মদ্যপান করা নিয়ে মমতা শঙ্করের মন্তব্য নিয়েও চর্চা হয়েছিল। তিনি বলেছিলেন, ‘মেয়েরা মদ্যপান করবে না এটা যেমন আমি মানি না। তেমনই এটাও মনে করি, স্বাধীনতার অর্থই মদ্যপান নয়। আর এটা শুধু মেয়েদের জন্য প্রযোজ্য নয়। রাস্তায় মদ্যপান করা কখনওই শোভনীয় নয়। এটা কুরুচিকর এবং অন্যায়। আর শালীনতার সংজ্ঞাটা নারী-পুরুষ উভয়ের ক্ষেত্রেই এক, তেমন স্বাধীনতারও। ’