তিনি সকালম্যান! তিনিই ছিলেন একসময় সানডে সাসপেন্সের মূল আকর্ষণ। এখন রেডিয়ো ছাড়লেও, তাঁর গলার আওয়াজটা স্পষ্ট! আরও বিশেষ করে বললে, তাঁর প্রতিবাদের ভাষা। শিরদাঁড়াটা যে এখনও সোজা, তা প্রমাণ করেছেন আরজি কর কাণ্ডে মুখ খুলে।
মীর মহিলাদের ‘কম নাইট ডিউটি’ প্রসঙ্গে তুললেন সোজা সাপটা প্রশ্ন। তাঁর মনে চিন্তা, এখন আর মেয়েদের নাইট ডিউটি আবশ্যক নয়। আরজি করের মহিলা ডাক্তারের মৃত্যুর পর অনেক মহিলাই ভয় পাবে। অথবা বাড়ির লোক চাইবে না, তাদের মেয়েরা রাতে হাসপাতালে যাক। আর মহিলা নার্স কাজ করতে না পারার অর্থ হল, আসবে পুরুষ নার্স। তাহলে মহিলা রোগীরা সুস্থ থাকবে তো? তারা যে কখনো পুরুষ নার্সের লালসার শিকার হবে না, তা কে নিশ্চিত করবে? সেই দায়িত্ব কে নেবে?
মীরের স্ত্রী সোমা ভট্টাচাৰ্য পেশায় একজন ডাক্তার। তাই খুব কাছ থেকেই এই পেশাকে দেখেছেন, প্রতিনিয়ত দেখছেন। এর আগে আরজি করের পর চিকিৎসকদের প্রতিবাদ নিয়ে কথা বলতে গিয়েই তিনি বলেছিলেন, চিকিৎসকরা মোটেই এত সহজে কাজে ফিরবেন না। কোথাও কেটে গেলে যেমন রক্ত আটকানোর জন্য চেপে ধরতে হয় তেমনই এখানে যতক্ষণ না সঠিক বিচার আসছে, তাঁরা নিজেদের প্রতিবাদ চালিয়ে যাবেন।
আরজি কর কাণ্ডের পর মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মুখ্য উপদেষ্টা আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায় রাতের কাজের জায়গায় মেয়েদের নিরাপত্তা নিে কথা বলতে গিয়ে মোট ১৭টি পয়েন্ট তুলে ধরেন। আর সেখানে একটি হল, যতটা সম্ভব মহিলাদের রাতের শিফট থেকে অব্যাহতি দেওয়ার চেষ্টা করতে হবে। তারপর ফের প্রতিবাদে গলা চড়িয়েছে সমাজ। আওয়াজ তুলেছেন তারকারা। কেন রাতের উপর দখল থাকবে না মেয়েদের উঠছে প্রশ্ন, কাজের জায়গায় মহিলাদের নিরাপত্তা দেওয়ার দায়িত্ব সরকার নিতে বাধ্য, সকলেরই এক মত। এই তালিকায় মিমি, স্বস্তিকা, পরমব্রত, কৌশিকীরাও রয়েছেন।
কৌশিকীকে প্রতিবাদে বলতে শোনা যায়, ‘রাতে তাহলে গান গাইতে আসব না আমি?’ পরমব্রত বলেন, ‘এটা আমি মানতে পারছি না যে, মহিলাদের নাইট ডিউটি কম রাখব। তাহলে মানেটা কী হল। রাত্রিবেলা মহিলাদের সুরক্ষা দেওয়ার দায়িত্ব কার! এটা তো আমরা চাইছি। যাতে কেউ কারও অধিকার থেকে বঞ্চিত না হয়। সুরক্ষিত করার দায়িত্ব তো প্রশাসনের। বা যেখানে যিনি কাজ করবেন, শুধু হসপিটাল নয়, সেই কতৃপক্ষের। তা বলে মেয়েরা নাইট ডিউটি করতে পারবেন না, ইয়ার্কি হচ্ছে নাকি?’
আর স্বস্তিকা লেখেন, ‘নাইট ডিউটি থেকে অব্যহতি নয় কর্মক্ষেত্রে নারী সুরক্ষা আইন চাই! মেয়েদের জন্য কোন গণ্ডি বা লক্ষণ রেখা টানবেন না! সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়েছেন আইনসভায় আইন প্রণয়ন করুন!’