নন্দিতা রায় এবং শিবপ্রসাদের সিনেমা মানেই অন্য ধাঁচের গল্প। এবার একেবারে বাস্তবকে সিনেমার পর্দায় ফোটাতে চলেছেন এই দুই পরিচালক। কিছু মাস আগে আরিয়াদহের কুখ্যাত অপরাধী জয়ন্ত সিংহের গ্রেপ্তারের খবর শিরোনাম ছিনিয়েছিল, এই ঘটনার নেপথ্যে যিনি ছিলেন, তিনি হলেন ব্যারাকপুরের এসপি শ্রীমন্ত বন্দ্যোপাধ্যায়। এবার এই পুলিশ আধিকারিকের জীবন দেখানো হবে সিনেমার পর্দায়।
গত ১২ বছর ধরে এই সিনেমাটি তৈরি করার পরিকল্পনা করছিলেন নন্দিতা এবং শিবপ্রসাদ। ১৯৯৮ থেকে ২০০৫, এই ৭ বছর পশ্চিমবঙ্গের বুকে হওয়া এক মারাত্মক অপরাধকে ঘিরে তৈরি হতে চলেছে শিবপ্রসাদ-নন্দিতার নতুন সিনেমা ‘বহুরূপী’ - এর গল্প।
কিন্তু কাকে নিয়ে এই গল্প?
যে ৭ বছর পশ্চিমবঙ্গ পুড়ছিল অপরাধের আগুনে, ঠিক তখনই শ্রীমন্ত বন্দ্যোপাধ্যায় একটি মুখ্য ভূমিকা পালন করেছিলেন ওই অপরাধ দমন করতে। এই শ্রীমন্ত বন্দ্যোপাধ্যায়ের জীবনী নিয়েই তৈরি হবে শিবপ্রসাদ নন্দিতার আগত সিনেমা ' বহুরূপী'।
(আরও পড়ুন: আম্বানি পরিবারের বিয়েতে আছে কলকাতা কানেকশনও! জেনে নিন, কী কী দিল কলকাতা)
ছবি নিয়ে কী বললেন শিবপ্রসাদ?
ছবি প্রসঙ্গে শিবপ্রসাদ বলেন, ‘শ্রীমন্ত ছিলেন এক প্রকার বাংলার ‘সিংঘম'। কোনও কিছুকেই ভয় পেতেন না তিনি। অন্যায় দেখলেই রুখে দাঁড়াতেন শ্রীমন্তদা। এবার সেই চরিত্রই ফুটিয়ে তুলবে আবীর। পর্দায় আবিরের নাম হবে সুমন্ত ঘোষাল।’
এই প্রথম উর্দি পরা পুলিশের ভূমিকায় অভিনয় করবেন আবির চট্টোপাধ্যায়। কেমন লাগলো এই সিনেমায় অভিনয় করতে? জানাতে গিয়ে অভিনেতা বলেন, ' বাস্তবের চরিত্রকে যখন সিনেমার পর্দায় তুলে ধরা হয় তখন দু ভাবে প্রস্তুতি নেওয়া যেতে পারে। এক, যার জীবনে তুলে ধরা হচ্ছে তাঁর সঙ্গে সরাসরি কথা বলা, তাঁর মতো নিজেকে তৈরি করা। দ্বিতীয়ত, যার চরিত্র নিয়ে চিত্রনাট্য তৈরি হচ্ছে, তাঁর সঙ্গে কথা বলে চিত্রনাট্য যেভাবে এগোচ্ছে, সেইভাবে নিজেকে ক্যামেরার সামনে তুলে ধরা।
(আরও পড়ুন: দ্রুতগতিতে মাছ কমছে গঙ্গায়, বড় পদক্ষেপ ‘সিফরি’র)
আবির দ্বিতীয় পন্থা অবলম্বন করেছিলেন। তিনি প্রথমে চিত্রনাট্য শুনেছিলেন এবং তারপর দেখা করেছিলেন শ্রীমন্ত বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে। সবশেষে নিজের অভিনয়ের মাধ্যমে সবটুকু তুলে ধরার চেষ্টা করেছেন। তবে যার চরিত্রে তিনি অভিনয় করলেন সেই শ্রীমন্তদা আসলে কেমন? প্রশ্নের উত্তরে আবির বলেন, 'অল্প কথায় বর্ণময় জীবন। তবে মানুষটি আর পাঁচটা মানুষের মত নয়। দীর্ঘ সময় ধরে ঝুঁকিপূর্ণ জীবন যাপন করতে যথেষ্ট সাহস লাগে।'
তবে শিবপ্রসাদের কথায়, 'মানুষটি বেজায় রসিক। মজা করতে খুব ভালোবাসেন। কিন্তু যখন উর্দি গায়ে দেন, তখন একেবারে অন্য মানুষ হয়ে যান। যেদিন শ্রীমন্তদা শুটিং দেখতে এসেছিলেন, সেদিন ৭টি থানার ওসি শুধুমাত্র তাঁকে দেখতে শুটিং ফ্লোরে এসেছিলেন।'