লক্ষ্য ছিল সব থেকে বড় দুর্গা প্রতিমা তৈরি করে গিনিস বুক অফ ওয়ার্ল্ড রেকর্ডে নাম নথিভুক্ত করার। সারা বিশ্বকে চমকে দেওয়ার জন্য সমস্ত পদক্ষেপ নিয়েছিলেন ক্লাব উদ্যোক্তারা, কিন্তু বাদ সাধল সরকার। তাই অসমাপ্ত মূর্তির সামনেই প্রতিবাদের উৎসবে শামিল হয়েছেন ক্লাব কর্তৃপক্ষ থেকে গ্রামবাসী সকলেই।
এই বছর নদিয়ার রানাঘাটের কামালপুরের অভিযান সংঘ- এর ১১২ ফুটের দুর্গা প্রতিমা গড়তে পারত ইতিহাস। কিন্তু সমস্ত আশায় জল ঢেলে দেয় আইনি জটিলতা। কোনওভাবেই অনুমতি না পেয়ে অবশেষে মায়ের অসমাপ্ত মূর্তির সামনে খাওয়া-দাওয়ার আয়োজন করা হয়েছে। ক্লাব কর্তৃপক্ষের মতে, এটি যেমন একাধারে প্রতীকী উৎসব তেমন প্রতিবাদও।
কামালপুরের ধানতলা এলাকায় যেখানে বিশালাকার দুর্গা প্রতিমা হওয়ার কথা ছিল সেখানে এখন গেলে দেখা যাবে আকাশছোঁয়া বাঁশের কাঠামো। অসমাপ্ত দুর্গা মূর্তির মাথায় এখনও রয়েছে মুকুট, মণ্ডপের চারিদিকে বাঁধা কালো কাপড়, এমনকি মায়ের মুখও কালো কাপড় দিয়ে ঢাকা।
(আরও পড়ুন: পুজোর সময়ে ছোট ফ্ল্যাটে অতিথিরা আসবেন? কীভাবে সাজাবেন সুন্দর করে)
উৎসব বন্ধ প্রসঙ্গে উদ্যোক্তাদের দাবি, পুজো বন্ধ হওয়ার নির্দেশ পাওয়ার পরেই গোটা গ্রামে শোকের আবহ তৈরি হয়েছে। প্রতিমা সম্পূর্ণ করতে না পারায় স্বাভাবিক ভাবেই ভেঙে পড়েছেন সকলে। উৎসবের চার দিন তাই শেষ না হওয়া প্রতিমার সামনেই প্রতিবাদের আয়োজন করা হয়েছে। চারদিন মাঠে খাওয়া-দাওয়ার আয়োজন হয়েছে, যেখানে থাকবেন গ্রামের সকলেই। শুধু পুজো হবে না।
১১২ ফুট প্রতিমার প্রায় ৭০ শতাংশ কাজ হয়ে গিয়েছিল। ৬০ লক্ষ টাকা ব্যয় করে ফেলেছিলেন ক্লাব কর্তৃপক্ষ। বিশ্ব রেকর্ডের আশায় গ্রামবাসীরা চাষের জমি পর্যন্ত দিয়ে দিয়েছিলেন ক্লাব কর্তৃপক্ষকে। কিন্তু সেই সমস্ত আশা শেষ হয়ে যায় অনুমতি না পাওয়ায়। দুর্গাপুজো করতে না দেওয়ায় রীতিমতো ক্ষুব্ধ বাসিন্দারা।
(আরও পড়ুন: উত্তর কলকাতার সেরা ১০ পুজো বেছে নিল HT বাংলা, কোনগুলি এই বছর না দেখলেই নয়?)
অভিযান সংঘের সঙ্গে যুক্ত এক স্থানীয় গ্রামবাসীর মতে, গ্রামবাসীরা মিলে নতুন কিছু করার চেষ্টা করেছিলেন কিন্তু দুর্গাপুজো আটকে দেওয়া হল। তাই এই প্রতিবাদের মাধ্যমেই সারা বিশ্বকে জানানো হবে কীভাবে অযথা একটি পুজো আটকে দেওয়া হয়েছে। এই ভাবেই পুজোর চার দিন প্রতিমার সামনেই বিক্ষোভ দেখানো হবে।
প্রসঙ্গত, দেশপ্রিয় পার্কের ঘটনা টেনে এনে রাজ্য আদালত রানাঘাটে ১১২ ফুটের প্রতিমা পুজোয় অনুমতি দেয় না। এই বিষয়ে পুজো উদ্যোক্তারা কলকাতা হাইকোর্টের শরণাপন্ন হলে হাইকোর্ট বিষয়টি জেলা শাসকের ওপর ছেড়ে দেয়। আইন-শৃঙ্খলার বিষয় টেনে এনে এই পুজো করার পরামর্শ দেয় না জেলাশাসক, তারপরেই বিক্ষোভে ফেটে পড়ে ক্লাব কর্তৃপক্ষ থেকে গ্রামবাসী সকলেই।।