কেন্দ্রীয় সরকার ইতিমধ্যেই জনগণনার কাজ শুরু করার ইঙ্গিত দিয়েছে। তার জেরে ওয়াকিবহাল মহলের আশা, ২০২৯ সালের সাধারণ নির্বাচনের সময় সংসদ ও রাজ্যগুলির বিধানসভায় মহিলা জনপ্রতিনিধিদের নির্বাচনের ক্ষেত্রে ৩৩ শতাংশ সংরক্ষণের সিদ্ধান্ত বাস্তবায়িত করা সম্ভব হবে।
উল্লেখ্য, ইতিমধ্যেই ভারতের কেন্দ্রীয় ও প্রাদেশিক আইনসভাগুলিতে মহিলা জনপ্রতিনিধিদের জন্য ন্যূনতম ৩৩ শতাংশ প্রতিনিধিত্ব সংরক্ষিত করেছে (সংশোধিত আইন প্রণয়নের মাধ্যমে) কেন্দ্রীয় সরকার। কিন্তু, জনগণনা বা আদম শুমারি না হলে এই সংরক্ষণের বাস্তবায়ন সম্ভব নয়।
সংশ্লিষ্ট ওই সংশোধনী অনুসারে, ২০২৩ সালে সংবিধানের ১১৮তম সংশোধনী করার পর, প্রথম জনগণনা সংক্রান্ত প্রাসঙ্গিক পরিসংখ্যান প্রকাশিত হলে, তারপরই সংসদে এবং সংশ্লিষ্ট সমস্ত রাজ্যের বিধানসভাগুলিতে মহিলাদের ৩৩ শতাংশ সংরক্ষণ কার্যকর করা যাবে।
যদিও সংশোধিত আইনের বিধিতে স্পষ্টভাবে জানানো হয়নি, কীভাবে মহিলাদের জন্য সংরক্ষিত আসনগুলিকে চিহ্নিত করা হবে।
সংশোধনীতে বলা হয়েছে, বর্তমানে তফসিলি জাতি ও উপজাতির জন্য মোট যত আসন সংরক্ষিত রয়েছে, তার অন্তত এক-তৃতীয়াংশ আসন মহিলাদের জন্য নির্দিষ্ট করা যেতে পারে। যাঁরা মহিলা হওয়ার পাশাপাশি তফসিলি জাতি ও উপজাতিভুক্তও হবেন।
এক্ষেত্রে এই আসনগুলিতে মহিলা প্রার্থীদের সংরক্ষণ পর্যায়ক্রমে হতে পারে। সংশ্লিষ্ট রাজ্য ও কেন্দ্র শাসিত অঞ্চলগুলিতে মহিলাদের জন্য সংরক্ষিত আসনগুলি প্রয়োজনে অদল-বদল (রোটেশনাল) করা যেতে পারে।
এভাবে মহিলাদের জন্য সংরক্ষিত আসন বাছাইয়ের ক্ষেত্রে অন্তত ৫০ শতাংশ রাজ্যের অনুমোদন থাকতে হবে। এবং মহিলাদের জন্য সংরক্ষিত আসনের মেয়াদ থাকবে ১৫ বছর।
প্রসঙ্গত, ২০০০ সালের পর প্রথম আদম শুমারির ফলাফল প্রকাশিত না হওয়া পর্যন্ত, ৪২তম সংশোধনীর মাধ্যমে লোকসভা ও বিধানসভা আসনগুলির সীমানা পুনরায় নির্ধারণ বা তাদের পুনর্বিন্যাস প্রক্রিয়া স্থগিত করে দেওয়া হয়েছিল।
২০০১ সালে সেই সীমানা নির্ধারণ বা তাদের পুনর্বিন্যাস প্রক্রিয়া স্থগিত করে দেওয়ার মেয়াদ আরও ২৫ বছর বাড়ানো হয়। যার অর্থ হল, ২০২৬ সালের পর প্রথম যে আদম শুমারি প্রকাশিত হবে, তার ভিত্তিতেই সীমানা নির্ধারণের অনুশীলন নতুন করে করা যাবে।
অর্থাৎ, ওই আদম শুমারি প্রকাশিত হলে লোকসভা ও বিধানসভা আসনগুলির পুনর্বিন্যাস ঘটানো যাবে। যারে জেরে নতুন নির্বাচনী কেন্দ্র যেমন গঠিত হবে, তেমনই বর্তমান নির্বাচনী কেন্দ্রগুলির সীমানাও বদলে যাবে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এর ফলে দু'টি বিরাট পরিবর্তন হতে পারে। প্রথমত - খুব স্বাভাবিকভাবেই কেন্দ্র বা আসনের সংখ্যা বাড়বে। এবং দ্বিতীয়ত - ৩৩ শতাংশ সংরক্ষণ নিশ্চিত করে মহিলা জনপ্রতিনিধিদের প্রতিনিধিত্ব বাড়ানো হবে।