কোটা বিরোধী আন্দোলনের ঝাঁঝ কমলেও এখনও সম্পূর্ণ স্বাভাবিক হয়নি। সদ্য মেট্রো রেল পরিদর্শনে গিয়ে চোখের জল ফেলেছিলেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এবার বিস্ফোরক অভিযোগ তুললেন প্রধানমন্ত্রী। এই আন্দোলনে ছদ্মবেশে অনুপ্রবেশ করে জামাত শিবির বলে অভিযোগ তাঁর। বাংলাদেশে নিযুক্ত স্পেনের রাষ্ট্রদূত গ্যাব্রিয়েল মারিয়া সিসতিয়াগা ওচহোয়া ডি চিনচিক্রুর সঙ্গে দেখা করে এই বিস্ফোরক তথ্যই জানালেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। কোটা বিরোধী আন্দোলনে এখনও পর্যন্ত মোট ১৪৭ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। তবে সংখ্যা বাড়তে পারে বলেও দাবি তাঁর।
এদিকে আগামীকাল ৩০ জুলাই পর্যন্ত বন্ধ রয়েছে ভারত–বাংলাদেশ মৈত্রী এক্সপ্রেস। দেশের অভ্যন্তরেও নানা ট্রেন বাতিল রেখেছে হাসিনা সরকার। পরিস্থিতি এখনও যে জটিল তা বোঝা যাচ্ছে। কারণ এই আবহে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রবিবার স্পেনের রাষ্ট্রদূতকে জানান, জনগণের কল্যাণে সরকার যেগুলি গড়ে তুলেছে সেগুলিকে টার্গেট করেই হামলা করা হয়েছে। কোভিড হাসপাতাল থেকে শুরু করে মেট্রো রেল, এক্সপ্রেসওয়ে, সেতু ভবন, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ভবন ও ডেটা সেন্টারের কথা উল্লেখ করেছেন প্রধানমন্ত্রী। এই গোটা পরিস্থিতি নিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘সেনার সদস্যরা সর্বোচ্চ ধৈর্য দেখিয়েছেন। আওয়ামি লিগের প্রায় ২১ জন হিংসায় নিহত হন। আমি দলীয় পরিচয় বিবেচনা করিনি। এখন সবকিছুর উন্নতি হচ্ছে।’
আরও পড়ুন: বিরাট প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছে তৃণমূল কংগ্রেস, বিজেপির বিরুদ্ধে সরব হবে তৃণমূল ছাত্র পরিষদ
কোটা বিরোধী আন্দোলনে বাংলাদেশে রক্তগঙ্গা বয়ে গিয়েছে। তার সঙ্গে ঘটেছে একের পর এক হিংসার ঘটনা। ঢাকার মীরপুর ১০ ও কাজিপাড়ায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে দুটি মেট্রোরেল স্টেশন। সেগুলিকে পুনরায় চালু করতে জাপানের কাছে সহযোগিতা চেয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বাংলাদেশে জাপানের রাষ্ট্রদূত আইওয়ামা কিমিনোরি প্রধানমন্ত্রীর অফিসে সৌজন্য সাক্ষাৎ করতে গেলে এই সহায়তা চান। এখন দেখার জাপান সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেয় কিনা। মেট্রো রেলের ক্ষতি দেখেই চোখে জল চলে এসেছিল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার। ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে তাই তিনি কেঁদে ফেলেছিলেন।
এবার সেই ক্ষতিগ্রস্ত মেট্রো রেল মেরামত করতে এবং জনগণের জন্য আবার চালু করতে জাপানের সাহায্য চাইলেন। যা অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। এই আন্দোলন বাংলাদেশের অনেক ক্ষতি করে দিল বলে মনে করেন শেখ হাসিনা। বনানীতে ক্ষতিগ্রস্ত সেতু ভবন পরিদর্শন করার পর সাংবাদিকদের গোটা বিষয়টি জানান প্রধানমন্ত্রী। জাপানের রাষ্ট্রদূত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে বলেছেন, ‘তারা প্রথমে মেট্রো স্টেশনগুলির ক্ষয়ক্ষতি খতিয়ে দেখবেন। আর তার পর সিদ্ধান্ত নেবেন কেমন করে বাংলাদেশের স্টেশনগুলি আবার চালু করতে সাহায্য করতে পারেন।’ এই আন্দোলনকে কেন্দ্র করে ব্যাপক হিংসায় যে হতাহত হয়েছে তাতে সমবেদনা জানান জাপানের রাষ্ট্রদূত।