প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহের প্রয়াণে শোকস্তব্ধ রাজনীতিবিদ থেকে শুরু করে দেশের বিভিন্ন মহল। বৃহস্পতিবার প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীর মৃত্যুসংবাদে শোক প্রকাশ করেছেন কংগ্রেসের রাজ্যসভার সাংসদ এবং প্রাক্তন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী পি চিদাম্বরম। তিনি প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীর শাসনকালকে ‘ইতিহাসের সোনালি অধ্যায়’ বলে উল্লেখ করেছেন। একইসঙ্গে মনমোহনের সঙ্গে কাজের অভিজ্ঞতা তুলে ধরেন।
মনমোহন সিংয়ের মৃত্যুর পরেই এক্স হ্যান্ডেলে আবেগপূর্ণ পোস্ট করেন পি চিদাম্বরম। তাতে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী হিসাবে প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কাজ করার অভিজ্ঞতা তুলে ধরে তিনি লেখেন, ‘আমি অনেক বছর ধরে তাঁর সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করেছি। আমি আগে কখনও ড. সিংয়ের চেয়ে নম্র এবং প্রচারবিমুখ একজনের সঙ্গে দেখা করিনি। তিনি কোনও কাজের জন্য কখনই কৃতিত্ব দাবি করেননি।’
প্রসঙ্গত, প্রথমে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী ও পরে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন মনমোহন। তাঁর কার্যকালের ১৯৯১ সাল থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত মেয়াদকে সোনালি অধ্যায় বলে উল্লেখ করেন মনমোহন। সে প্রসঙ্গ উল্লেখ করে চিদাম্বরম লেখেন, ‘মনমোহন সিং অর্থমন্ত্রী হওয়ার পর ভারত অন্যদিকে মোড় নিয়েছিল।’ তিনি মনমোহন সিং-এর সহানুভূতির উদাহরণ তুলে ধরেন। বিশেষ করে দরিদ্রদের জন্য, তাঁর মেয়াদকালে প্রণয়ন হওয়া বিভিন্ন নীতি যেমন এমএনআরইজিএ (মহাত্মা গান্ধী জাতীয় গ্রামীণ কর্মসংস্থান গ্যারান্টি অ্যাক্ট), পিডিএসের পুনর্গঠন (পাবলিক ডিস্ট্রিবিউশন সিস্টেম) এবং মিড ডে মিল প্রকল্পের বৃদ্ধি প্রভৃতির কথা উল্লেখ করেন চিদাম্বরম।
চিদাম্বরম আরও জানান, প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী কখনও গরিবদের কথা ভুলে যাননি। এই সত্যটি কখনও গোপন করেননি যে ভারতে কয়েক কোটি দরিদ্র আছে। তিনি সব সময় মনে করিয়ে দিয়েছেন যে সরকারের নীতিগুলি অবশ্যই দরিদ্রদের পক্ষে থাকা উচিত। চিদাম্বরম শ্রদ্ধা নিবেদন শেষ করে বলেছেন, ‘তাঁর গল্প পুরোপুরি বলা হয়নি। তার কৃতিত্ব সম্পূর্ণভাবে রেকর্ড করা হয়নি। আমি নিশ্চিত যে মনমোহন সিংয়ের সক্রিয় রাজনীতিতে ২৩ বছরের দিকে ফিরে তাকালে আমরা তার সত্যিকারের অবদান বুঝতে পারব।’
উল্লেখ্য, ভারতের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ডঃ মনমোহন সিং গতকাল রাতে এইমসে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৯২ বছর। তিনি ছিলেন ভারতের ১৩ তম প্রধানমন্ত্রী এবং দেশের প্রথম শিখ প্রধানমন্ত্রী ছিলেন।