শেখ হাসিনাকে ভারত থেকে বাংলাদেশে ফেরানোর আবেদন করে দিল্লিকে 'নোট ভার্বাল' দিয়েছিল ইউনুসের সরকার। তবে এবার সেই নিয়ে আপত্তি জানিয়েছে আওয়ামি লিগ। ইউনুস সরকারের বক্তব্য, ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের যে বন্দি প্রত্যর্পণের চুক্তি হয়েছিল, তাতেই শেখ হাসিনাকে ফিরিয়ে দেওয়া হোক বাংলাদেশে। তবে আওয়ামি লিগের বক্তব্য, এই অন্তর্বর্তী সরকার বেআইনি। পাশাপাশি দলের আরও বক্তব্য, ২০১৩ সালে ভারত এবং বাংলাদেশের যে বন্দি প্রত্যর্পণ চুক্তি হয়েছিল, তার অধীনে আসে না 'ভুয়ো রাজনৈতিক কারণে করা মামলা'। আওয়ামি লিগের অভিযোগ, হাসিনাকে খুনের ষড়যন্ত্র করে বাংলাদেশে ফেরাতে চাইছে ইউনুসের সরকার। (আরও পড়ুন: 'ইতিহাস আমার প্রতি সদয় হবে', মিডিয়ার ওপর যখন 'অভিমান' করেছিলেন মনমোহন)
আরও পড়ুন: শনিতে শেষ যাত্রা, 'প্রাক্তন' মনমোহনকে শ্রদ্ধা জ্ঞাপন বর্তমান প্রধানমন্ত্রী মোদীর
আওয়ামি লিগের বিবৃতিতে বলা হয়, 'তারা বিচারের নামে সুকৌশলে শেখ হাসিনাকে হত্যা করতে চায়। বাংলাদেশ আওয়ামি লিগ মনে করে যে, দুই দেশের মধ্যে প্রত্যর্পণ চুক্তির অধীনে কোনও তাৎপর্যই নেই এই তথাকথিত অন্তর্বর্তী সরকারের প্রত্যর্পণের অনুরোধের। কারণ রাজনৈতিক কারণে মিথ্যা মামলা এই চুক্তির আওতায় পড়ে না। উপরন্তু, যদি ভুল বিচারের ঝুঁকি থাকে তবে এই চুক্তিটি প্রযোজ্য নয়। আজ সারা বিশ্ব জানে বাংলাদেশে আইনের শাসন বা বিচার নেই।' (আরও পড়ুন: বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের বাড়ি পোড়ানোর ঘটনায় পদক্ষেপ পুলিশের, ধৃত ৪)
আরও পড়ুন: 'সারা বিশ্ব স্পষ্ট ভাবে শুনুক…', ৯১'র বাজেটে কী বলে স্বপ্ন দেখিয়েছিলেন মনমোহন?
উল্লেখ্য, প্রত্যর্পণ চুক্তির আওতায় শেখ হাসিনাকে ফেরত চেয়ে গত ২৩ ডিসেম্বর দিল্লির বাংলাদেশ হাইকমিশন থেকে ভারতের বিদেশ মন্ত্রকে কূটনৈতিক নোট পাঠানো হয়েছিল। তবে এই নিয়ে ভারত এখনও কিছু বলেনি সেভাবে। এদিকে এই ইস্যু নিয়ে বাংলাদেশের বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র সম্প্রতি বলেন, 'কূটনৈতিক পত্র হস্তান্তর করা হয়েছে। এখনও সরকারি চ্যানেলে আমরা কোনও উত্তর পাইনি। এই মুহূর্তে আমরা কোনও মন্তব্য করব না, বরং ভারতের সরকারের জবাবের জন্য অপেক্ষা করব। সেই জবাবের ওপর ভিত্তি করে পরবর্তী পদক্ষেপ নির্ধারণ করা হবে। যদি বন্দিবিনিময় চুক্তি দেখা যায়, তাহলে সেখানে কোনও সময়সীমার উল্লেখ নেই। তাই ভারতের উত্তর পাওয়ার জন্যে আমাদের অপেক্ষা করতে হবে। আমরা একটা সময় পর্যন্ত বিষয়টি দেখব। যেকোনো জিনিসের একটা জবাব দেওয়ার একটা স্বাভাবিক সময় আছে। সেই সময়ের মধ্যে জবাব না এলে এটার আরেকটা তাগিদপত্র দেওয়া হবে। আবার জানানো হবে। গতকাল মাত্র চিঠি দেওয়া হয়েছে। এর পরবর্তী পদক্ষেপ কী হবে, এখনই বলা মুশকিল হবে।' অর্থাৎ, প্রশাসনিক আমলা বুঝিয়ে দিলেন, বাংলাদেশি রাজনীতিবিদরা যতই হাসিনাকে ফেরানো নিয়ে হম্বিতম্বি করুক, এই ইস্যুতে আদতে তাদের প্রত্যক্ষ ভাবে কিছু করণীয় নেই। (আরও পড়ুন: '১৫০ গ্রাম'? বীর্যই তো মেলেনি… আরজি কর কাণ্ডের নেপথ্যে এক জনই? সামনে নয়া রিপোর্ট)
আরও পড়ুন: বাংলাদেশ সচিবালয়ের আগুনে তদন্ত কমিটি গঠন করেও বাতিল, তারপর...
এদিকে জুলাই বিল্পবের সময় আন্দোলনকারীদের হত্যার মামলায় বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে রেড নোটিশ জারি করা হয়েছে বলে সম্প্রতি দাবি করেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর মহম্মদ তাইজুল ইসলাম। উল্লেখ্য, এর আগে গত ১৭ অক্টোবর জুলাই-অগস্টে সংঘটিত গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগের পৃথক মামলায় শেখ হাসিনা ও ওবায়দুল কাদেরসহ ৪৬ জনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছিল আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। তারপর ১০ নভেম্বরে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তরফ থেকে ইন্টারপোলের রেড নোটিশ জারির বিষয়ে পদক্ষেপ করতে পুলিশকে চিঠি দিয়েছিলেন চিফ প্রসিকিউটর মহম্মদ তাইজুল ইসলাম।