রিপোর্ট বলছে, যে সম্পত্তির কথা বলা হচ্ছে, তার মধ্যে রয়েছে এর নূর-উস-সাবাহ প্রাসাদ, হাবিবির বাংলো, আহমেদাবাদ প্রাসাদ, দার-উস-সালাম, কোহেফিজ সম্পত্তি এবং ফ্ল্যাগ স্টাফ হাউস সহ কিছু এলাকা।
শর্মিলা ঠাকুর, সইফ আলি খানের পতৌদি পরিবার এবার আইনি বিপাকে।
মুম্বইতে তাঁর বাড়ির ভিতরে ঢুকে হয়েছিল হামলা, গুরুতর আহত হন সইফ আলি খান। সেই হামলার পর সদ্য লীলাবতি হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেয়েছেন সইফ আলি খান। আর তারপরই এবার আরও এক বিপাকে সইফ, শর্মিলাদের পরিবার। মধ্যপ্রদেশ হাইকোর্টের একটি রায়ের পর সইফদের নবাবি পরিবারের ১৫ হাজার কোটি টাকার সম্পত্তি সরকারের কাছে চলে যেতে পারে বলে সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। এর নেপথ্যে রয়েছে শত্রু সম্পত্তি আইন, ১৯৬৮। কী রয়েছে এই আইনে? যার হাত ধরে সইফ আলি খানদের পরিবারের ১৫ হাজার কোটির সম্পত্তি (বেশিরভাগটই মধ্যপ্রদেশে রয়েছে, বিশেষত ভোপালে) সরকারের কাছে যেতে পারে? আগে দেখা যাক, শত্রু সম্পত্তি আইন কী? দেখা যাক, সেই আইন অনুুযায়ী পতৌদি পরিবারের কোর্টের লড়াইয়ের ইতিহাস।
শত্রু সম্পত্তি আইন, ১৯৬৮ কী?
১৯৬৮র শত্রু সম্পত্তি আইন অনুযায়ী,যে সমস্ত ব্যক্তি ভারত ছেড়ে দেশভাগের পর পাকিস্তানে চলে গিয়েছেন, তাঁদের সম্পত্তি কেন্দ্রীয় সরকার নিজের হাতে নিতে পারে। মূলত, দেশভাগের পর যাঁরা ভারত ছেড়ে পাকিস্তানের নাগরিকত্ব নিয়েছেন তাঁদের সম্পত্তি ক্রোক করতে পারে সরকার। ভারত-পাকিস্তানের ১৯৬৫ সালের যুদ্ধের পর এই আইন পাশ করে দিল্লি। আর সেই আইনের প্রেক্ষিতে ১৫ হাজার কোটির সম্পত্তি সংক্রান্ত আইনি লড়াই লড়ছে পতৌদি পরিবার। দেখা যাক, পতৌদিদের পারিবারিক ইতিহাস ও তার সঙ্গে এই আইনের সম্পর্ক।
ভোপালের শেষ নবাব ছিলেন হামিদুল্লাহ খান। তাঁর তিন মেয়ের মধ্যে বড় মেয়ে আবিদা সুলতান চলে গিয়েছিলেন পাকিস্তান। সালটা ১৯৫০। দেশভাগের পরই তিনি পাকিস্তান চলে যান, সেখানে নেন নাগরিকত্ব। ভারতীয় নাগরিকত্ব তিনি ছেড়ে দেন। দ্বিতীয় কন্যা সাজিদা সুলতান ভারতে থাকেন। তিনি পতৌদি বংশের যৌগ্য উত্তরসূরি বিবেচিত হন। তাঁরই পরিবারের সদস্য সইফ আলি খান, শর্মিলা ঠাকুররা। সজিদা সুলতানের নাতি হলেন সইফ আলি খান। বংশ পরম্পরায় তিনিই সম্পত্তির উত্তরসূরি। এদিকে, সরকার আবেদার স্থানান্তরকে উদ্ধৃত করে দাবি করেছে যে সম্পত্তিগুলি ‘শত্রুর সম্পত্তি’, কারণ পরিবারের অংশ আবেদা পাকিস্তানে বসবাস করছেন। এরপর ২০১৫ সালে পতৌদি পরিবার কোর্টের মুখাপেক্ষী হয়। তার আগে, শত্রু সম্পত্তি বিভাগের কাস্টডিয়ান, ভোপাল নবাবের সম্পদকে সরকারি সম্পত্তি বলে ঘোষণা করেন। এরপরই কোর্টের দ্বারস্থ হন সইফরা। যে সম্পত্তির কথা বলা হচ্ছে, তার মধ্যে রয়েছে এর নূর-উস-সাবাহ প্রাসাদ, হাবিবির বাংলো, আহমেদাবাদ প্রাসাদ, দার-উস-সালাম, কোহেফিজ সম্পত্তি এবং ফ্ল্যাগ স্টাফ হাউস, যেখানে সাইফ আলি খান শৈশবেও থেকেছেন বলে খবর। তবে হাইকোর্ট সম্প্রতি বলেছে, ২০১৭ সালের সংশোধিত শত্রু সম্পত্তি আইনের আওতায় একটি বিধিবদ্ধ প্রতিকার আছে। আর সংশ্লিষ্ট পক্ষকে ৩০ দিনের মধ্যে নিজেদের মতামত পেশ করার নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট। এক মাসের মধ্যে যদি নিজেদের মতামত দাখিল করেন, তাহলে তাহলে যোগ্যতার ভিত্তিতে আবেদন বিচার হবে। এদিকে, সদ্য নিজের বাড়িতে হামলাকারীর থুরি কোপে আহত হয়ে হাসপাতাল থেকে বাড়ি ফিরেছেন সইফ। তারপরই কোর্টের তরফে এই ধাক্কা নিঃসন্দেহে পতৌদি পরিবারের জন্য অস্বস্তির খবর।