মাত্র পাঁচ মাসের ব্যবধান। আবার নতুন করে মৈপীঠে দেখা দিল বাঘের আতঙ্ক। আর তার জেরে গ্রামবাসীরা স্বেচ্ছায় গৃহবন্দি হয়েছেন। আতঙ্কে কাঁটা হয়ে রয়েছেন দক্ষিণ ২৪ পরগনার মৈপীঠের বাসিন্দারা। আজ, মঙ্গলবার সকালে মাকরি নদী পেরিয়ে লোকালয় ঘেঁষা জঙ্গলে হাজির হয়ে পড়েছে দক্ষিণরায় বলে খবর। স্থানীয় গ্রামবাসীদের চোখে পড়েছে বাঘের উপস্থিতি। তাই আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে গোটা এলাকায়। পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে, তড়িঘড়ি খবর দেওয়া হয়েছে বন দফতরে। আর তৎপর হয়েছে বন দফতরও।
এদিকে এই ঘটনায় আতঙ্কে সিঁটিয়ে আছে গোটা গ্রাম। বন দফতর এলাকায় নজরদারি শুরু করেছে। মৈপীঠে অনেকেই এখন বাড়ি থেকে বের হচ্ছেন না। বনকর্মীরা ঘটনাস্থলে গিয়ে এলাকা পরিদর্শন করেছেন। তাঁরা নজর রাখছেন। স্থানীয় গ্রামবাসীদের অনেকের দাবি, বাঘের গর্জন শুনেছেন তাঁরা। জঙ্গলে স্থানীয় বাসিন্দারা বাঘের উপস্থিতি টের পান। মাকড়ি নদীর পাড়ে মেলে পায়ের ছাপ। এই পরিস্থিতিতে এলাকাজুড়ে তীব্র আতঙ্ক তৈরি হয়েছে। মাকড়ি নদী পেরিয়ে লোকালয় সংলগ্ন জঙ্গলে বাঘ এসেছে দাবি গ্রামবাসীদের।
আরও পড়ুন: নতুন মহকুমা হচ্ছে ফরাক্কা, মন্ত্রিসভার বৈঠকে মিলল ছাড়পত্র, কথা রাখলেন মুখ্যমন্ত্রী
স্থানীয় সূত্রে খবর, আজ মঙ্গলবার সকালে শৌচালয় যাওয়ার সময় ঘর থেকে বের হন মৈপীঠের নগেদাবাদের এক বাসিন্দা। তাঁরই নজরে পড়ে যায় হলুদ ডোরাকাটা দক্ষিণরায়। তখন থেকেই তিনি কাঁপতে থাকেন। আজমলমারির জঙ্গল থেকে বেরিয়ে মাকরি নদী পেরিয়ে লোকালয় ঘেঁষা জঙ্গলে হাজির হয়েছে দক্ষিণরায়। এই ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই নতুন করে আতঙ্ক গ্রাস করেছে মৈপীঠের গ্রামবাসীদের। খবর পেয়ে এসে গিয়েছে বন দফতর। এই বাঘকে ঘন জঙ্গলে ফেরাতে খাঁচা পাতার কাজও শুরু হয়েছে। বাঘবন্দি না হওয়া পর্যন্ত স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলতে পারছেন না গ্রামবাসীরা। তবে গ্রামবাসীদের বাড়িতে থেকে বেরনোয় নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে পুলিশ।
আগে জোড়া বাঘের আতঙ্ক সহ্য করেছেন গ্রামবাসীরা। মৈপীঠে আগেও বাঘের হানা দেওয়া থেকে শুরু করে পায়ের ছাপ এবং দরজায় আঁচড় দেখেছেন গ্রামবাসীরা। আর কুলতলি, মৈপীঠ সংলগ্ন এলাকায় বাঘের যাতায়াত সেক্ষেত্রে নতুন নয়। দু’মাস আগেও মাতলা এবং মাকড়ি নদী পেরিয়ে বাঘকে দেউলবাড়ি গ্রামের ধান খেতে ঢুকতে দেখেন মৎস্যজীবীরা। গ্রামবাসীরাই তখন রাত জেগে পাহারার ব্যবস্থা করেন। বনদফতরের দীর্ঘ চেষ্টার পর সে সময় বাঘ ফিরেছিল। নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক এক বন দফতরের অফিসার গ্রামবাসীদের আতঙ্কিত না হওয়ার পরামর্শ দিয়ে বলেন, ‘বাঘের পায়ের ছাপ জঙ্গলে মিলেছে। জাল দিয়ে ঘেরার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। নদীর পাড়ের একদিকেও জাল দেওয়া হচ্ছে।’