দুগ্ধ উৎপাদনে গুরুত্বপুর্ণ পদক্ষেপ রাজ্য সরকারের। আইভিএফ পদ্ধতির মাধ্যমে গাভীর প্রসব বৃদ্ধিতে জোর দেওয়া হচ্ছে। মাংস ও ডিম উৎপাদনে ইতিমধ্যেই স্বনির্ভর হয়েছে রাজ্য সরকার। এবার দুধের উৎপাদন বাড়ানোই হল প্রধান লক্ষ্য। সেই লক্ষ্যেই ল্যাবরেটরিতে টেস্টটিউবে বকনা বাছুর পেতে কাজ শুরু হয়েছে। এর লক্ষ্য হল বেশি পরিমাণে দুধ উৎপাদন ক্ষমতাসম্পন্ন বকনা বাছুরের সংখ্যা বাড়ানো। তাতে সাফল্য আসছে বলেই জানাচ্ছেন আধিকারিকরা।
আরও পড়ুন: প্রাণীজ প্রোটিন উৎপাদনে বাংলার সেরা হওয়া নিয়ে মমতার দাবি ঘিরে প্রশ্ন শুভেন্দুর
পশ্চিমবঙ্গের প্রাণীসম্পদ বিকাশ সংস্থার কর্মকর্তারা জানান, দুধ উৎপাদনে মূল চ্যালেঞ্জ হল গাভীর সংখ্যা বৃদ্ধি এবং তাদের থেকে বেশি দুধ পাওয়া নিশ্চিত করা। গত দু’বছর ধরে ক্রোমোজোম বিশ্লেষণের মাধ্যমে কৃত্রিম প্রজনন পদ্ধতিতে কাজ চলছে। এতে শুধু বকনা বাছুরের জন্ম হবে। এই প্রক্রিয়ায় ৯৪ শতাংশ সফলতা এসেছে বলে দাবি আধিকারিকদের। এই পদ্ধতির মাধ্যমে বকনা বাছুরের জন্ম বাড়ানোর দিকে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। এরজন্য অন্যান্য রাজ্য যেমন উত্তরাখণ্ড ও মহারাষ্ট্র থেকে উন্নত সিমেন আনা হচ্ছে। জানা যাচ্ছে, অন্য রাজ্যের উপর নির্ভরশীলতা কমানোর জন্য আমেরিকা ও ফ্রান্স থেকে উন্নত প্রযুক্তি ও যন্ত্রপাতি আনা হচ্ছে রাজ্যে। আধিকারিকরা জানাচ্ছেন, এর জন্য পরিকাঠামো গড়ে তোলা হবে হরিণঘাটা অঞ্চলে। সেখান থেকে বকনা ভ্রূণের জন্য সস্তায় উন্নত প্রজাতির সিমেন সরবরাহ করা সম্ভব হবে। এর ফলে গাভীর দুধ উৎপাদন উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়বে বলে তাঁরা জানিয়েছেন।
পশ্চিমবঙ্গের গোসম্পদ বিকাশ সংস্থার এক আধিকারিক জানান, সাধারণ কৃত্রিম প্রজননে সর্বাধিক দুধ উৎপাদনের জন্য সাত প্রজন্ম অপেক্ষা করতে হয়। কিন্তু আইভিএফ পদ্ধতিতে ‘এলিট বুল’ বা অতি উন্নত প্রজাতির ষাঁড়ের মাধ্যমে প্রথম প্রজন্মেই বেশি দুধ পাওয়া সম্ভব। এছাড়া, এই পদ্ধতিতে একই সময়ে একাধিক গাভীর জন্ম সম্ভব।
সূত্রের খবর, সরকারি ল্যাবরেটরিতে ইতিমধ্যে ৭৪৫ টি আইভিএফ প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছে। যা ৩০ শতাংশ সফল হয়েছে। এতে ৫৭টি টেস্টটিউব বকনা বাছুর জন্ম নিয়েছে। তাদের মধ্যে কিছু ভিন রাজ্যে পাঠানো হয়েছে। আগামীতে এসব ভ্রূণ সংরক্ষণ করে গ্রাম পর্যায়ে গৃহপালিত গাভীতে প্রতিস্থাপন করা হবে। এরফলে দুধের উৎপাদন বাড়বে বলে মনে করছে দফতর।