কলকাতায় মেট্রো রেলেপ যাত্রার সূচনা যাঁর নেতৃত্বে সম্ভব হয়েছিল, সেই প্রাক্তন রেলমন্ত্রী বরকত গণিখান চৌধুরীর নাম আজও কলকাতা মেট্রোতে অনুপস্থিত। তাই তাঁর স্মৃতিকে সম্মান জানিয়ে শহরের একটি মেট্রো স্টেশন তাঁর নামে নামকরণের প্রয়োজন রয়েছে। এমনই দাবি তুলল কংগ্রেস। এই দাবি জানিয়ে সম্প্রতি মালদা জেলা যুব কংগ্রেস সভাপতি সরওয়ার জাহান কলকাতা মেট্রো রেলের কাছে একটি চিঠি পাঠিয়েছেন।
আরও পড়ুন: একাধিক মেট্রো স্টেশনের নাম বদলের প্রস্তাব, নতুন নামগুলি জমা পড়েছে নবান্নে
যুব কংগ্রেস নেতা জানান, ১৯৮০-র দশকে যখন মেট্রো পরিষেবা চালুর জন্য বিভিন্ন শহরের নাম উঠে আসছিল, সেই সময় রেলমন্ত্রী হিসেবে গণিখান কলকাতার পক্ষে দৃঢ় সওয়াল করেছিলেন। প্রযুক্তিগত সম্ভাবনা, জনঘনত্ব ও শহরের আর্থ-সামাজিক প্রেক্ষাপট সবদিক বিচার করেই কলকাতাকে প্রথম মেট্রো শহর হিসেবে গড়ে তোলার পক্ষপাতী ছিলেন তিনি।
কংগ্রেসের দাবি, তাঁর দৃঢ় অবস্থান ও জোরালো যুক্তির ফলেই দক্ষিণ ভারতের শহরগুলিকে পিছনে ফেলে ভারতের প্রথম মেট্রো চালু হয় এই শহর কলকাতায়। চিঠিতে সরওয়ার জাহানের দাবি, গণিখানের ওই অবদানের পরেও কোনও আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি এখনও কলকাতা মেট্রোর মানচিত্রে প্রতিফলিত হয়নি। তাই এসপ্ল্যানেড, পার্কস্ট্রিট, শিয়ালদা কিংবা কোনও নতুন স্টেশনের নাম তাঁর নামে রাখার অনুরোধ জানানো হয়েছে কংগ্রেসের তরফে। তাঁর দাবি, এটি শুধু একজন রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বকে সম্মান জানানোর বিষয় নয়, বরং নতুন প্রজন্মও এবিষয়ে জানতে পারবে।
কংগ্রেস যুবনেতার দাবি, ভারতের প্রথম মেট্রো কলকাতা শহর পেয়েছে তাঁর নেপথ্যে গণিখানের অবদান অবিস্মরণীয়। অথচ আজ অবধি তাঁর নামটুকুও মেট্রোর কোথাও খুঁজে পাওয়া যায় না। হাত শিবির জানিয়েছে, বিষয়টি কেন্দ্রীয় স্তরে তোলার জন্য প্রস্তুতি শুরু হয়ে গিয়েছে। গনিখানের ভাইপো তথা মালদা দক্ষিণের সাংসদ ইশাখান চৌধুরী দ্রুত এই দাবির পক্ষে কেন্দ্রীয় রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণবের সঙ্গে আলোচনা করবেন বলে জানা গিয়েছে।
উল্লেখ্য, ইন্দিরা গান্ধী দ্বিতীয়বার প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর গণিখান চৌধুরীকে কেন্দ্রীয় রেলমন্ত্রীর দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। কংগ্রেসের দাবি, তিনি রেলমন্ত্রী থাকার সময়েই পশ্চিমবঙ্গের রেল পরিকাঠামোয় বেশ কিছু উল্লেখযোগ্য প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছিল। তার মধ্যে কলকাতা মেট্রো অন্যতম। তাই তাঁকে সম্মান জানিয়ে স্টেশনের নামকরণের দাবি শুধু রাজনৈতিক নয়, ঐতিহাসিক গুরুত্ব রয়েছে বলে মনে করছে কংগ্রেস।