খেলতে খেলতে সোজা পেটে চলে গিয়েছিল ম্যাগনেটিক ব্যাটারি। সাধারণ ব্যাটারির থেকে এটি কিছুটা আলাদা কারণ এই ব্যাটারি দ্রুত অন্ত্রকে ক্ষইয়ে দিতে পারে। সম্প্রতি এর জেরেই ১৯ মাসের শিশুকে সংকটজনক অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি করতে হয়। অবশেষে চিকিৎসকদের তৎপরতায় বাঁচানো গিয়েছে দুধের শিশু অগস্ত্যকে।
সবুজ বমি আর পেটে ব্যথা
আপনমনে খেলা করতে করতেই ব্যাটারি গিলে ফেলেছিল অগস্ত্য। কিন্তু সঙ্গে সঙ্গে বাড়ির লোক বিষয়টি টের পাননি। পরে যখন সবুজ বমি আর পেটে ব্যথা শুরু হয়, তখনই সন্দেহ হয়। দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে গেলে দেখা যায় পেটের মধ্যে রয়েছে একটি ম্যাগনেটিক ব্যাটারি। প্রাথমিকভাবে এন্ডোস্কোপি করে ব্যাটারিটি বার করার চেষ্টা হয়। কিন্তু পাকস্থলির মধ্যে একেবারে গেঁথে গিয়েছিল ওই ব্যাটারি। তারপরেই অধ্য পন্থা নিতে হয়। ল্যাপারোস্কপিক (কিহোল) পদ্ধতিতে ওই ব্যাটারিটি বার করে আনা হয়। অস্ত্রোপচারের দায়িত্বে ছিলেন শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ শুভাশিষ সাহা (কনসালটেন্ট, পেডিয়াট্রিক সার্জেন, মণিপাল হাসপাতাল, মুকুন্দপুর)।
আরও পড়ুন - জাকারিয়া স্ট্রিট স্পেশাল মহব্বত কা শরবত বানান বাড়িতেই, রইল রুহ-আফজার রেসিপি
তিন দিনের মধ্যেই সুস্থ
ল্যাপারোস্কোপিক সার্জারিতে পেটের খুব ছোট ছোট স্থানে কেটে মাধ্যমে অত্যন্ত সতর্কতার সঙ্গে ব্যাটারিটি বের করা হয়। অন্যান্য অঙ্গের যাতে কোনও ক্ষতি না হয়, সেদিকেও নজর রাখা হয়। আবার একই প্রযুক্তিতে সেলাই করে পুনরায় আগের মতো করে দেওয়া হয়। উন্নত প্রযুক্তির জন্য শিশুটির শরীরে কোনও দৃশ্যমান কাটা চিহ্ন এখন আর নেই। তিন দিনের মধ্যেই শিশুটি আবার খাওয়া শুরু করেছে।
আরও পড়ুন - কর্টিসল হরমোনের জেরেই বাড়ে উদ্বেগ আর দুশ্চিন্তার রোগ, নিয়ন্ত্রণে রাখবেন কীভাবে?
কতটা ক্ষতিকর এই ব্যাটারি
চিকিৎসক শুভাশিস সাহার কথায়, ‘চৌম্বক ব্যাটারি শিশুদের জন্য অত্যন্ত বিপজ্জনক। এগুলো খুব দ্রুত পেট বা অন্ত্রের আস্তরণ ক্ষয় করে দেয়। ফলে ফুটো হয়ে যেতে পারে, অভ্যন্তরীণ রক্তপাত হতে পারে বা প্রাণঘাতী সংক্রমণও ঘটতে পারে। আগস্ত্যর ক্ষেত্রে সময়টা ছিল বড় চ্যালেঞ্জ। ব্যাটারিটি পেটের দেয়ালে প্রভাব ফেলতে শুরু করেছিল। এন্ডোস্কোপি ব্যর্থ হওয়ার পর আমরা তৎক্ষণাৎ ল্যাপারোস্কোপিক সার্জারির সিদ্ধান্ত নিই। সৌভাগ্যবশত, এই মিনিমালি ইনভেসিভ পদ্ধতিতে আমরা ব্যাটারিটি নির্ভুলভাবে অপসারণ করতে পারি, কোনও অঙ্গের ক্ষতি ছাড়াই।’