স্বামী–স্ত্রী দু’জনেই ভূগোলের শিক্ষক–শিক্ষিকা। যোগ্যতার নিরিখে দু’জনেই এসএসসি পরীক্ষা দিয়ে চাকরি পেয়েছিলেন। কিন্তু সুপ্রিম কোর্টের রায়ের পর এক লহমায় ছেলে এবং বউমা চাকরিহারা। আর এই খবর জানতে পেরেই শিক্ষকের মা এবং শিক্ষিকার শাশুরি হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গেলেন। এই ঘটনায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে বীরভূমে। অর্ণব যশ বীরভূমের চাতরা গণেশলাল হাইস্কুলে ভূগোলের একমাত্র শিক্ষক ছিলেন। আর তাঁর স্ত্রী চন্দ্রাণী দত্ত বীরভূমের নওয়াপাড়া হাইস্কুলের ভূগোলের শিক্ষিকা ছিলেন। এখন এই পরিবারের দু’জনেরই আয় বন্ধ হয়ে গেল। এমনকী পরিবারের সদস্য নিজের মাকেও হারালেন।
গতকাল সুপ্রিম কোর্টের রায়ে ২৬ হাজার শিক্ষক–শিক্ষাকর্মীর চাকরি চলে গিয়েছে। তাঁদের মধ্যেই একসঙ্গে চাকরি হারিয়েছেন অর্ণব এবং চন্দ্রানী। সঙ্গে হারালেন নিজের পরিবারের সদস্যকেও। একদিকে সামাজিক সম্মান নষ্ট অপরদিকে আয়ের পথও বন্ধ এটাই মেনে নিতে পারেননি অর্ণবের মা মঞ্জুলা যশ। এই অবস্থায় হতাশা গ্রাস করেছে এখন গোটা পরিবারকে। গোটা পরিবারে এখন শোকের ছায়া। হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে অর্ণবের মা মঞ্জুলা যশের। পরিবারের সদস্যদের দাবি, ছেলে–বউমার চাকরি হারানোর মতো খারাপ খবর সহ্য করতে পারেননি তিনি।
আরও পড়ুন: বিদ্যুতেও সেরার শিরোপা পেয়ে এগিয়ে বাংলা, কেন্দ্রীয় পুরস্কার পেয়ে অভিনন্দন মমতার
স্থানীয় সূত্রে খবর, পূর্ব বর্ধমানের সোনাকুড় গ্রামের বাসিন্দা অর্ণব যশ এবং চন্দ্রাণী দত্ত। বর্ধমানের বামচাঁন্দাইপুরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল অর্ণবের অসুস্থ মাকে। আজ, শুক্রবার সকালে তাঁর মৃত্যু হয়েছে। সুপ্রিম কোর্টের রায় ঘোষণার পরই অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি। আর ছেলে–বউমার চাকরি নেই শুনে আরও অসুস্থ হয়ে পড়েন মঞ্জুলা দেবী। প্রচণ্ড মানসিক যন্ত্রণায় ছিলেন এই বৃদ্ধা। আর আজ শেষমেশ মারা গেলেন। সুপ্রিম কোর্টের রায়ের জেরে পূর্ব বর্ধমান জেলায় চাকরি বাতিল হয়েছে ১০২৫ জনের। তার মধ্যে ৭৫০ জন শিক্ষক–শিক্ষিকা। আর ২৭৫ জন শিক্ষাকর্মী। এর মধ্যে গ্রুপ–ডি এবং ক্লার্কও আছে।