পহেলগাম হামলার পর ভারত–পাকিস্তানের সম্পর্ক আরও তিক্ত হয়েছে। ইতিমধ্যেই সিন্ধু জল চুক্তি বাতিল করে দিয়েছে ভারত। পাকিস্তানের নাগরিকদের সব ভিসা বাতিল করা হয়েছে। নতুন করে এখন আর কোনও ভিসা দেওয়া হবে না। আটারি সীমান্তও বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। আকাশপথও ব্যবহার করতে পারবে না পাকিস্তান। এই আবহে এবার চন্দননগর থেকে গ্রেফতার করা হল এক পাকিস্তানের নাগরিককে। এখন ভারত ছাড়ছেন বহু পাকিস্তানের নাগরিক। আর যাঁকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে সেই মহিলা বহুদিন ধরে ভারতে বসবাস করছেন। এখানে বিয়ে করার পর সন্তান রয়েছে। কিন্তু তাঁর নাগরিকত্ব নেই। তাই ওই মহিলাকে ধরল পুলিশ।
এদিকে পুলিশ সূত্রে খবর, পাকিস্তানের রাওয়ালপিন্ডি থেকে ভারতে আসেন ফতেমা বিবি। তাও প্রায় ৪০ বছর আগের কথা। গত ৪৫ বছর ধরে চন্দননগর কুঠিরমাঠ এলাকায় থাকছিলেন। বাড়িতে স্বামী–সন্তান আছে। ১৯৮০ সালে ট্যুরিস্ট ভিসা নিয়ে বাবার সঙ্গে ভারতে এসেছিলেন ফতেমা বিবি। ১৯৮২ সালে চন্দননগরে মুজফফর মল্লিকের সঙ্গে বিয়ে হয় ফতেমার। তারপর তাঁদের দুটি কন্যাসন্তান হয়। এখন তাঁরাও বিবাহিত। পুলিশের স্পেশাল ব্রাঞ্চের খাতায় ফতেমা বিবি নিখোঁজ ছিলেন ভিসা নিয়ে আসার এক বছর পর থেকেই।
আরও পড়ুন: দিঘায় ‘দক্ষিণেশ্বর মন্দিরের’ আদলে তৈরি হচ্ছে কালী মন্দির, বড় খবর পুণ্যার্থীদের
অন্যদিকে কাশ্মীরের পহেলগাঁও জঙ্গি হামলার পর ভারত সরকার পাকিস্তানের নাগরিকদের দেশে ফিরে যেতে বলেছে। যাঁরা পাকিস্তান থেকে ভারতে এসে থেকে গিয়েছেন তাঁদের খোঁজ শুরু করা হয়েছে নতুন করে। চন্দননগরের কুঠির মাঠের পাশে মসজিদের ঠিক পিছনে মুজফফর মল্লিকের বাড়ি। সেখান থেকেই আজ শনিবার ৬০ বছরের ফতেমা বিবিকে গ্রেফতার করল পুলিশ। এতদিন পর একজনকে বিদেশি নাগরিক হিসাবে গ্রেফতার করার ঘটনায় প্রতিবেশীরা অবাক। আইনি এই জটিলতা কাটিয়ে ফতেমার মুক্তি চাইছেন বাসিন্দারা। ফতেমার পাকিস্তানে এখন আর কেউ নেই। সেখানে গিয়ে তিনি কী করবেন, কোথায় থাকবেন? উঠছে প্রশ্ন।
এছাড়া পরিবার সূত্রে খবর, হুগলির নালিকুলে ফতেমার পূর্বসূরীদের বাড়ি ছিল। তাঁর বাবার সেখানেই জন্ম হয়েছিল। পরে কর্মসূত্রে পাকিস্তান পাড়ি দেন ফতেমার বাবা। আবার ১৯৮০ সালে তিনি ভারতে ফেরেন। এখন বয়সের কারণে বার্ধক্যজনিত নানা রোগে আক্রান্ত ফতেমা। হাঁটুতে অস্ত্রোপচার করতে হবে। ওষুধ খেতে হয় রোজ। ফতেমার স্বামী জানান, তাঁর স্ত্রী চন্দননগর পৌরসভার ১২ নম্বর ওয়ার্ডের ভোটার। তাঁর আধার এবং প্যান কার্ড আছে। ভারতের নাগরিকত্বের জন্য আবেদন করা হলেও এত বছরেও তা মেলেনি। যদিও পুলিশের খাতায় ফতেমা এখনও ফেরার পাকিস্তানের নাগরিক।