মহাকুম্ভের পদপিষ্টের ঘটনায় শোকপ্রকাশ করলেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, ‘মহাকুম্ভে মর্মান্তিক পদপিষ্টের ঘটনায় আমি গভীরভাবে শোকাহত। যে ঘটনায় কমপক্ষে ১৫ জন নিরীহ মানুষের মৃত্যু হয়েছে (উত্তরপ্রদেশ সরকারের তরফে অবশ্য হতাহতের সংখ্যা প্রকাশ করা হয়নি)। মৃত পুণ্যার্থীদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানাচ্ছি। গঙ্গাসাগর মেলা থেকে আমি শিখেছি যে বিশাল জনসমাবেশে যেখানে পুণ্যার্থীদের জীবন জড়িত থাকে, সেখানে পরিকল্পনা এবং পরিষেবা সর্বোচ্চ হতে হবে। মৃতদের আত্মার জন্য শান্তিকামনা করছি।’
পদপিষ্টের ঘটনা হতাহতের সংখ্যা নিয়ে লুকোছাপা প্রশাসনের
যদিও এখনও পর্যন্ত সরকারিভাবে মহাকুম্ভের পদপিষ্টের ঘটনায় হতাহতের সংখ্যা প্রকাশ করা হয়নি। বুধবার সকাল ১০টার দিকে উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ শুধুমাত্র জানিয়েছেন যে ত্রিবেণী সংগমের কাছে আখাড়া মার্গে ব্যারিকেড টপকাতে গিয়ে কয়েকজনের গুরুতর আঘাত লেগেছে। তাঁদের হাসপাতালে ভরতি করা হয়েছে। কতজন সেরকমভাবে আহত হয়েছেন, সেটাও জানাননি যোগী।
উত্তরপ্রদেশ সরকারের তরফে হতাহতের সংখ্যা প্রকাশ করা না হলেও নাম গোপন রাখার শর্তে বুধবার সকালের দিকেই কয়েকজন ব্যক্তি ‘হিন্দুস্তান টাইমস’-কে জানিয়েছেন যে কমপক্ষে ১৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। হাসপাতালে কমপক্ষে ১৫ জনের মৃতদেহ আনা হয়েছে বলে তাঁরা জানিয়েছেন। সেইসঙ্গে মহাকুম্ভের চত্বরে কয়েকজনকে রাস্তায় শুয়ে থাকতে দেখা গিয়েছে। তাঁদের প্রায় পুরো শরীরই চাদর দিয়ে ঢাকা ছিল। সামনে বসে হাউ-হাউ করেও কাঁদতে দেখা গিয়েছে কয়েকজনকে।
এই ঘটনার জন্য দায়ি যোগী সরকার, অভিযোগ রাহুলের
স্বভাবতই সেই বিষয়টি নিয়ে প্রশ্ন ওঠার পাশাপাশি ভিআইপি সংস্কৃতি নিয়েও রোষের মুখে পড়েছে উত্তরপ্রদেশ সরকার। উত্তরপ্রদেশেরই রায়বরেলির কংগ্রেস সাংসদ রাহুল গান্ধী অভিযোগ করেছেন, মহাকুম্ভ মেলা আয়োজনের ক্ষেত্রে যোগী সরকারের অব্যবস্থাপনা এবং সাধারণ পুণ্যার্থীদের পরিবর্তে ভিআইপিদের উপরে যে যাবতীয় নজর দেওয়া হচ্ছে, সেটার কারণেই পদপিষ্টের ঘটনা ঘটেছে।
বিশেষ যোগে মৌনী অমাবস্যা!
শুধু রাহুল নন, ভিআইপি সংস্কৃতি এবং যোগী সরকারের অব্যবস্থাপনা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন সাধুরাও। সংশ্লিষ্ট মহলের বক্তব্য, মৌনী অমাবস্যা হওয়ায় বুধবার যে মহাকুম্ভে পুণ্যার্থীদের ভিড় উপচে পড়বে, তা অজানা ছিল না। বিশেষত ১৪৪ বছরের পরে বিরল 'ত্রিবেণী যোগ' পড়ায় ভিড়টা যে আরও বেশি হবে, তা জানা ছিল। আর সেই ভিড় সামলানোর জন্য উত্তরপ্রদেশ প্রশাসন আদৌও প্রস্তুত ছিল কিনা, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।
(আপডেট: বুধবার সন্ধ্যা ৬ টা নাগাদ মহাকুম্ভের ডিআইজি বৈভব কৃষ্ণ জানিয়েছেন, ৩০ জনের মৃত্যু হয়েছে। আহত হয়েছেন ৬০ জন।)