সাত বছর আগে টিবি রোগে আক্রান্ত হন তুষার। সেই থেকেই চিকিৎসকদের পরামর্শ মতো আলাদা বিছানায় ঘুমাতেন স্ত্রী তনুশ্রী। আর ওই বাড়িতেই একটি গ্রামীণ ব্যাঙ্কের গ্রাহক পরিষেবা কেন্দ্র খুলেছিলেন তনুশ্রী। সেখান থেকেই দু’বছর আগে যুবক শ্যামল বেরার সঙ্গে তনুশ্রীর পরিচয় হয়। সেখান থেকেই প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে।
স্বামীকে খুন করার অভিযোগ উঠল গৃহবধূ ও তার প্রেমিকের বিরুদ্ধে।
পরকীয়া সম্পর্কে স্ত্রীকে বাধা দিয়েছিলেন স্বামী। এটাই ছিল স্বামী অপরাধ। তাই তাঁকে ভালবাসার দিনেই পৃথিবী থেকে সরিয়ে দেওয়া হল। তাও নির্মমভাবে। স্ত্রী আর তার প্রেমিক এই ঘটনায় যুক্ত বলে অভিযোগ। বেহুঁশ করার পর অণ্ডকোষ টিপে শ্বাসরোধ করে স্বামীকে খুন করার অভিযোগ উঠল গৃহবধূ ও তার প্রেমিকের বিরুদ্ধে। দু’জনকেই গ্রেফতার করেছে পুলিশ। শিহরণ জাগানো ঘটনাটি ঘটেছে পূর্ব মেদিনীপুরের ময়নায়। এই খুনের ঘটনায় স্ত্রী ও তার প্রেমিকের তিনদিনের পুলিশ হেফাজত হল। ধৃত তনুশ্রী বেরা ও তার প্রেমিক শ্যামল বেরাকে তমলুক সিজেএম আদালতে তোলা হয়। তদন্তে অগ্রগতির জন্য ধৃতদের জেরা করা প্রয়োজন বলে পুলিশের পক্ষ থেকে হেফাজতে নেওয়ার আবেদন করা হয়। বিচারক সেই আবেদন মঞ্জুর করেন।
ঠিক কী ঘটেছে ময়নায়? স্থানীয় সূত্রে খবর, ময়না থানার রায়চক এলাকার বাসিন্দা তুষারকান্তি বেরা (৪৯)। তাঁর স্ত্রী তনুশ্রী বেরা। তাঁদের দুটি সন্তান আছে। কারখানায় শ্রমিকের কাজ করতেন তুষার। সাত বছর আগে টিবি রোগে আক্রান্ত হন তুষার। সেই থেকেই চিকিৎসকদের পরামর্শ মতো আলাদা বিছানায় ঘুমাতেন স্ত্রী তনুশ্রী। আর ওই বাড়িতেই একটি গ্রামীণ ব্যাঙ্কের গ্রাহক পরিষেবা কেন্দ্র খুলেছিলেন তনুশ্রী। সেখান থেকেই দু’বছর আগে যুবক শ্যামল বেরার সঙ্গে তনুশ্রীর পরিচয় হয়। সেখান থেকেই প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। কিন্তু সেটা বুঝতে পেরে বাধা দিয়েছিল স্বামী তুষার। তাই পথের কাঁটা সরিয়ে দিতে প্রেমিক শ্যামলকে সঙ্গে নিয়ে স্বামীকে খুনের চক্রান্ত করে ওই গৃহবধূ।
কেমন করে খুন করা হল? পুলিশ সূত্রে খবর, স্বামীকে মারার জন্য তাঁর ডালে ৩০টি ঘুমের ট্যাবলেট মিশিয়ে দিয়েছিল তনুশ্রী। ভাত খাওয়ার সময় গরম ডালের বাটিতে ৩০টি ঘুমের ট্যাবলেট মিশিয়ে দেওয়া হয়। সেই খাবার খেয়ে বেহুঁশ হয়ে পড়েন তুষারকান্তি বেরা। তারপর বালিশ চাপা দিয়ে এবং অণ্ডকোষ চেপে খুন করা হয় স্বামীকে। মৃতের স্ত্রী তনুশ্রী বেরা এবং তার প্রেমিক শ্যামল বেরা পরিকল্পনা করে ওই ঘটনা ঘটিয়েছে। এদিন সকালে মৃত্যুর খবর জানাজানি হতেই চাঞ্চল্য ছড়ায়। স্বামী হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে বলে সবাইকে জানায় তনুশ্রী। ময়নাতদন্তে আপত্তি জানাতেই সন্দেহ হয় প্রতিবেশীদের। তবে মৃতদেহটি উদ্ধার করে তমলুক জেলা হাসপাতালে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠায় ময়না থানার পুলিশ। আর তনুশ্রীকে জেরা করতেই প্রকাশ্যে আসে গোটা ঘটনা।