করোনা যেন আবার ধীরে ধীরে ফিরে আসছে! বছরখানেক আগে সারা বিশ্বকে কাঁপিয়ে দিয়েছিল এই ভাইরাস। সেই স্মৃতি এখনও টাটকা। অনেকেই ভেবেছিলেন, ভয় কাটিয়ে এবার নিশ্চিন্তে ফেরা যাবে আগের জীবনে। কিন্তু, করোনা নিয়ে উদ্বেগজনক পরিসংখ্যান সামনে আসছে। আবারও ধীরে ধীরে থাবা বসাচ্ছে করোনা। রাজ্যে এক দিনেই ব্যাপক সংখ্যায় বাড়ল করোনা রোগী।
আরও পড়ুন: করোনার ভ্রূকুটি দেশজুড়ে! সক্রিয় রোগী ৩০০০ পার, বাংলায় পরিস্থিতি কেমন?
দেশজুড়ে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা শনিবার পর্যন্ত পৌঁছেছে ৩ হাজার ৭৫৮-এ। এর মধ্যেই পশ্চিমবঙ্গের পরিস্থিতি ভাবিয়ে তুলছে চিকিৎসক এবং স্বাস্থ্যকর্তাদের। রাজ্যে এখনও পর্যন্ত মোট করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ২৮৭। একদিনেই নতুন করে সংক্রমিত হয়েছেন ৮২ জন। অথচ, ২৬ মে পর্যন্ত এই সংখ্যাটা ছিল মাত্র ১২। অর্থাৎ ছয় দিনের ব্যবধানে সংক্রমণ প্রায় ২০ গুণ বেড়েছে।
এই হঠাৎ সংক্রমণ বৃদ্ধিকে গুরুত্ব দিয়ে দেখছে রাজ্য সরকার। রাজ্যের স্বাস্থ্য দফতর সম্প্রতি একগুচ্ছ নির্দেশিকা জারি করেছে। বলা হয়েছে, গত দুই সপ্তাহে যেসব ব্যক্তি করোনা পজিটিভ হয়েছেন, তাঁদের নমুনা সংগ্রহ করে পাঠাতে হবে জিন বিশ্লেষণের (জিনোম সিকোয়েন্সিং) জন্য। কলকাতার ‘স্কুল অফ ট্রপিক্যাল মেডিসিন’-এর ভাইরোলজি ইউনিটে এই নমুনাগুলি পরীক্ষা করা হবে।
এ ছাড়াও সমস্ত বেসরকারি ল্যাবগুলিকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, তারা যেন বিগত দু’সপ্তাহের মধ্যে যেসব কোভিড পজিটিভ নমুনা সংগ্রহ করেছে, তা অবিলম্বে সরকারের নির্ধারিত কেন্দ্রে পাঠিয়ে দেয়। এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে যাতে ভাইরাসের প্রকৃতি বা রূপ বদল ঘটেছে কি না, তা বোঝা যায়।
রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, এবার থেকে প্রতিটি করোনা পজিটিভ নমুনারই জিন বিশ্লেষণ করা হবে। যদিও বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, এখনই আতঙ্কিত না হয়ে সাবধান হওয়াই একমাত্র উপায়। কারণ অধিকাংশ আক্রান্তই বাড়িতেই চিকিৎসা নিচ্ছেন, কারও অবস্থা গুরুতর নয়। তবে পরিস্থিতি যাতে নিয়ন্ত্রণের বাইরে না যায়, তাই আগেভাগেই ব্যবস্থা নিতে চাইছে প্রশাসন। চিকিৎসক মহল বলছে, আতঙ্ক নয়, সচেতনতা জরুরি। মাস্ক পরা, সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা এবং নিয়মিত হাত ধোওয়া এই নিয়মগুলি মানলেই সংক্রমণ অনেকটাই কমানো সম্ভব।