জাল পাসপোর্ট মামলায় এবার পুলিশের ভুমিকায় ক্ষোভ প্রকাশ করলেন বিচারক। যারা এই সমস্ত পাসপোর্ট ভেরিফাই করেছিলেন তাদের বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে? তা জানতে চান বিচারক। কিন্তু, পুলিশের কাছে সন্তোষজনক জবাব না পাওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন আলিপুর আদালতের চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট সৌভিকে দে। কেন তাদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করা হয়নি তা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন বিচারক।তাঁর মতে, ভেরিফিকেশন সংক্রান্ত বিষয়ে একটুও তদন্ত এগোয়নি।
আরও পড়ুন: ভুয়ো পাসপোর্টচক্রে যাচাই স্তরেই সবচেয়ে বেশি গলদ, কারা জড়িত? তদন্তে সিট
বৃহস্পতিবার মামলাটি ওঠে আলিপুর আদালতে। বিচারক পুলিশের উদ্দেশ্যে বলেন, ভেরিফিকেশন পিওনরা করে না। তাহলে যারা এই সমস্ত জাল পাসপোর্টের ভেরিফিকেশন করেছেন তাদের বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে কিনা তা এদিন জানতে চান বিচারক। উল্লেখ্য, পুলিশ পাসপোর্ট ভেরিফিকেশন করে থাকে। সে ক্ষেত্রে কারও বিরুদ্ধে কোনও মামলা রয়েছে কিনা তা খতিয়ে দেখা হয়। শুধু তাই নয়, সংশ্লিষ্ট আবেদনকারী ভারতীয় নাগরিক কিনা তাও খতিয়ে দেখে পুলিশ। তারপরে পাসপোর্ট এর অনুমোদন দেওয়া হয়। অভিযোগ উঠেছে, বাংলাদেশি নাগরিকরা খুব সহজেই জাল পাসপোর্ট বানিয়ে এরাজ্যে থাকছেন।
আলিপুর আদালতের বিচারক সৌভিক দে বলেন, যেক্ষেত্রে দেশের নাগরিকদের পাসপোর্টের জন্য বারবার ভেরিফিকেশন করা হয় সেখানে কী ভাবে পুলিশের নজরদারি এড়ানো হচ্ছে। যাঁরা এই ভেরিফিকেশনের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন তাদের বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে? তা জানতে চান বিচারক। তবে উত্তরে তদন্তকারী অফিসার জানান, তদন্ত এগোচ্ছে। তাতেই উষ্মা প্রকাশ করে বিচারক বলেন, তদন্ত এগোয়নি। গল্প শোনানো হচ্ছে।এদিকে, সরকারি আইনজীবী জানান, এই সব ঘটনার পিছনে বড় কোনও চক্র রয়েছে। কারা সেই চক্র চালাচ্ছে তা জানার চেষ্টা করা হচ্ছে।
ইতিমধ্যেই এই ঘটনায় পুলিশ আগে ৫ জনকে গ্রেফতার করেছিল। যাদের মধ্যে রয়েছে- বারাসতের বাসিন্দা সমরেশ বিশ্বাস এবং তাঁর ছেলে রিপন বিশ্বাস। এ ছাড়া রয়েছেন ডাকঘরের দুই কর্মী তারকনাথ দাস এবং দীপক মণ্ডল। পুলিশ দাবি করেছে, ভুয়ো পাসপোর্ট চক্রের মাস্টারমাইন্ড সমরেশ কীভাবে তার নিজের পরিবারের সদস্যদেরকে তার গ্যাং চালানোর জন্য ব্যবহার করেছিল। এমনকী তার ছেলে রিপন তার চোখ এবং কানের মতো কাজ করেছিল। শুধু তাই নয়, তার স্ত্রী রেখা ভারতীয় পরিচয়পত্র ইস্যু করা কেন্দ্রগুলিতে বাংলাদেশিদের গাইড করার জন্য কুরিয়ার হিসাবে কাজ করছিলেন। এছাড়াও গ্রেফতার করা হয়েছে ভুয়ো নথি তৈরির কাজে বিশেষজ্ঞ দীপঙ্কর দাসকে। বুধবার দত্তপুকুর থেকে গ্রেফতার করা হয় মোক্তার আলম নামে আরও এক যুবককে। এদিন দীপক মণ্ডল এবং দীপঙ্কর দাসকে আদালতে পেশ করা হলে তাদের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দেন বিচারক।