মৌনী অমাবস্যায় মহাকুম্ভে অমৃত স্নানের ভিড়ে পদপিষ্টের মর্মান্তিক ঘটনায় আজও হাহাকার, আর্তনাদ মেলা প্রাঙ্গন জুড়ে। প্রয়াগরাজে আয়োজিত মহাকুম্ভে ভিড়ের চাপে বুধবার ভয়াবহ পরিস্থিতি তৈরি হয়। এপর্যন্ত মহাকুম্ভে পদপিষ্ট হয়ে ৩০ জনের মৃত্যু হয়েছে। ৬০ জন আহত। এই আহতদের তালিকায় রয়েছেন এক বঙ্গতনয়াও। তিনি শোনালেন তাঁর ভয়াবহ অভিজ্ঞতার কথা। কেমন ছিল সেই বিভীষিকাময় সময়?
এই ঘটনার বিবরণ দিয়েছেন এক প্রত্যক্ষদর্শী পূণ্যার্থী। বঙ্গতনয়া শুক্লাদেবনাথও সেদিন মৌনী অমাবস্যর তিথিতে মহাকুম্ভর আয়োজনে উপস্থিত ছিলেন। চোখের সামনে তিনি কী দেখেছেন? ‘আনন্দবাজার’-এ প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে তিনি তুলে ধরেছেন তাঁর অভিজ্ঞতার কথা। মঙ্গলবার রাত ১ টা নাগাদ তিনি স্নান সেরে কুম্ভমেলা চত্বরে ভিড়ের মধ্যে দিয়ে এগোচ্ছিলেন। শুক্লাদেবী জানিয়েছেন, যেদিকে তাকিয়েছেন শুধু মানুষের সমাগমনই দেখেছেন। কোনও নির্দেশিকা তখন আর চোখে পড়েনি। ফেরার সময় তিনি বুঝতে পারছিলেন ভিড় বেড়েছে। ভিড় একটা সময় এতটাই ছিল যে শুক্লাদেবী বলছেন,'এত ভিড়ের মধ্যে নিঃশ্বাস নিতে কষ্ট হচ্ছিল।' এরপর তিনি বলেন,' কয়েকজন পা মাড়িয়ে দিলেন, টাল সামলাতে না পেরে পড়ে গেলাম। তখনই ঘাড়ের উপর এসে পড়ল পিছনের মানুষজন।' তিনি বলছেন, শুনতে পাওয়া গেল, ‘গির গ্যায়া, গির গ্যায়া উন লোগো কো বাঁচাও।’ এদিকে, তখন সকলের একটাই উদ্দেশ্য দ্রুত সঙ্গমে পৌঁছানো। বঙ্গ তনয়া বলছেন,' যাঁরা পড়ে যাচ্ছেন, তাঁদের উপর দিয়েই মানুষ চলে যাচ্ছেন। আমিও চিৎকার করছি, তবে সেই শব্দ কারো কানে ঢুকছে কি না সন্দেহ। কতজন পড়েছিলেন আমার উপরে? ১০-১২ জন হতে পারে। বা তার থেকেও বেশি। মনে হচ্ছিল নিঃশ্বাস বন্ধ হয়ে আসছে। পাথর চাপা পড়েছি।'
এদিকে, মহাকুম্ভে পদপিষ্ট হওয়ার ঘটনায় তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন যোগী আদিত্যনাথ। উত্তর প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী, তিন সদস্যের একটি জুডিশিয়াল কমিশন গঠনের নির্দেশ দিয়েছেন। মৃতদের পরিবারের প্রত্যেককে ২৫ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়ারও ঘোষণা করেছেন উত্তর প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ। এর আগে, কুম্ভমেলায় সদ্য অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছিল। সেই ঘটনার পর আসে খবর।