কোয়ালিফায়ার ২-তে ধুন্ধুমার ইনিংস খেলেছে পঞ্জাবকিংসকে আইপিএলের ফাইনালে তুলেছেন শ্রেয়স আইয়ার। একটা সময় মনে হচ্ছিল, ম্যাচ পঞ্জাবের হাত থেকে বেরিয়ে যেতে পারে। কিন্তু সেই সময়ই অসম্ভবকে কার্যত সম্ভব করে দেখিয়েছেন শ্রেয়স আইয়ার। তিনি অনবদ্য ৪১ বলে ৮৭ রানের ইনিংস খেলে দলকে জিতিয়েছেন। অশ্বিনী কুমার ১৯তম ওভার বোলিং করতে যখন এসেছিলেন, তখনই শ্রেয়স ঠিক করে নিয়েছিলেন খেলা শেষ ওভার পর্যন্ত নিয়ে যাবেন না। ম্যাচে একটা সময় এতটাই টেনশন ছিল যে শ্রেয়স যখন অর্ধশতরানও করলেন, তখনও ব্যাট তুলে খুবই একটা সেলিব্রেশন করতে দেখা যায়নি তাঁকে। কারণ এই লড়াই স্রেফ তাঁর দলের ছিল না, এই লড়াই ছিল শ্রেয়সের ব্যক্তিগত লড়াইও, জবাব দেওয়ার লড়াই।
জসপ্রীত বুমরাহকে যখন বারবার হার্দিক পাণ্ডিয়া কাজে লাগানোর চেষ্টা করছিলেন, তখন শ্রেয়স মাথা ঠান্ডা করেই সেই বলগুলো খেলছিলেন। বুরমাহ মানেই স্লগ ওভারে একের পর এক ইয়র্কার। যা খেলতে গিয়ে গত ম্যাচে ওয়াসিংটন সুন্দর মাঠেই গড়াগড়ি খেয়েছিলেন। শ্রেয়সও জানতেন, তাঁর বিরুদ্ধেও বুমরাহ-র এমন বিষাক্ত ইয়র্কার আসবে, তবে শ্রেয়স তৈরি ছিলেন। তাই তো বিন্দুমাত্র সমস্যায় না পড়ে তিনি বুমরাহর এক ইয়র্কারে এমন শট মারলেন, যা কার্যত বাকরুদ্ধ করে দিল তারকা ক্রিকেটারদেরও।
১৮তম ওভারের দ্বিতীয় বলে বুমরাহ একটা পারফেক্ট ইয়র্কার দিয়েছিল। মানে Toe Crushing ইয়র্কার যাকে বলে, পুরো ব্লক হোলে। কিন্তু শ্রেয়স এতটাই টেকনিকগত দিক থেকে নিখুঁত ছিলেন যে সেই বলটিও থার্ড ম্যানের দিকে খেলে দেন, সঠিক সময় ব্যাট নামিয়ে। এরপর রিস টপলিকে হার মানিয়ে সেই বল বাউন্ডারি হয়ে যায়। যা দেখেই আরসিবির কিংবদন্তি ক্রিকেটার এবি ডিভিলিয়ার্স বলেই ফেলেন, এটাই এবারের আইপিএলে তাঁর দেখা সেরা শট।
এবি ডিভিলিয়ার্স এই শটের পরই বলেন, ‘আমার কাছে এটা আইপিএলের সেরা শট। বলটা মিডল স্টাম্পে লাগত, দুর্দান্ত ইয়র্কার ছিল। ব্যাটের নিচে লাগার কথা ছিল, ওই বলটা কোনওভাবেই সামলানো যায়না। আমি এই বলটা খেললেও হয়ত বোল্ড হয়ে জেতাম। আর ও এই বলটাতেই চার মেরেছে বিশ্বের সেরা বোলারের বিরুদ্ধে, মুম্বইকে পাল্টা চাপে ফেলে দিয়েছে। অনবদ্য। নিখুঁত টেকনিক, সঙ্গে শক্তির মিশেল। কি অসাধারণ ক্রিকেটার ’।
২৬.৭৫ কোটিতে পঞ্জাবে যাওয়া শ্রেয়স এই মরশুমের শুরু থেকেই রয়েছেন ভালো ফর্মে। করেছেন ৬০০র বেশি রান, ব্যাটিং গড়ও ৫০র বেশি। এবি বলছেন, ‘আমি ওর খেলা দেখে কোথা দিয়ে বলা শুরু করব জানি না, আমি ওর ভক্ত। কিন্তু আজকে ওর ইনিংসটা মানে সব কিছুর উর্ধ্বে। সমস্ত সাধুবাদ ওর প্রাপ্য। এত চাপের মধ্যে ডু অর ডাই ম্যাচে ও একাই লড়ে গেছে সমস্ত প্রতিকুলতাকে ছাপিয়ে। ওর ছয় মারাগুলো দেখতে এত ভালো লাগছিল। ধৈর্য দেখাচ্ছিল, কোনওরকম অযথা আগ্রাসন দেখায়নি। হেড পজিশনও ঠিক ছিল, আগামী দিনে আরও অনেক রান করবে। আমি ওকে স্যালুট জানাতে চাই ’।