জনপ্রিয় গায়ক ও সুরকার আদনান সামি তাঁর গায় ও গায়কীর জন্য বেশ জনপ্রিয়। 'তেরা চেহরা', 'লিফট কারা দে', 'মাহিয়া'র মতো গান গেয়ে জনপ্রিয়তা পান আদনান। ২০১৬ সালে ভারতের নাগরিকত্ব দেওয়া হয় পাকিস্তানি বাবার সন্তান আদনানকে। সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে তিনি জানিয়েছেন, পাকিস্তানে বসবাসকারী তাঁর মায়ের শেষকৃত্যেও তাকে অংশ নিতে দেওয়া হয়নি। তাঁর ভিসা প্রত্যাখ্যান করে দেয় পাকিস্তান।
'আপ কি আদালত'-শোয়ে এসে আদনান সামি বলেন, ২০২৪ সালের অক্টোবরে যখন তাঁর মা মারা যান, তখন তিনি পাকিস্তানে গিয়ে শেষকৃত্যে যোগ দেওয়ার চেষ্টা করেছিলেন। আদনান বলেন, ভারত সরকার তাৎক্ষণিকভাবে তাঁর পরিস্থিতি বুঝতে পেরে তাঁকে সেদেশে যাাওয়ার অনুমতি দিয়েছিল। কিন্তু তিনি পাকিস্তানে ভিসার জন্য আবেদন করলে সেখান থেকে তাঁর ভিসা প্রত্যাখ্যান করা হয়।
গায়কের কথায়, 'আমি ভিসার জন্য আবেদন করেছিলাম, কিন্তু ওরা সেটা প্রত্যাখ্যান করে দেয়। আমি বললাম, 'আমার মা মারা গিয়েছেন', কিন্তু তারপরও ওরা আমাকে ভিসা দেয়নি। আমি যেতে পারিনি। হোয়াটসঅ্যাপ ভিডিওতে মায়ের শেষকৃত্য দেখেছি।'
সাক্ষাৎকারে আদনান আরও স্পষ্ট করে জানান, টাকার জন্য তিনি ভারতের নাগরিকত্ব নেননি। তিনি পাকিস্তানে কোটি কোটি টাকার সম্পত্তি ছেড়ে এদেশে চলে এসেছেন। এখানে এসে সবকিছুই তাঁকে নতুন করে গড়ে তুলতে হয়েছে। তিনি বলেন যে একজন শিল্পীর ভালবাসা প্রয়োজন এবং এই ভালবাসার কারণেই তিনি ভারতে এসেছিলেন।
গত বছর (২০২৪) মায়ের মৃত্যুর পর সোশ্যাল মিডিয়ায় একটা ছবি শেয়ার করে আবেগঘন পোস্ট করেছিলেন আদনান সামি। লিখেছিলেন, বেগম নওরিন সামি খান ১৯৪৭-২০২৪। সঙ্গে লেখেন, ‘ভীষণই দুঃখের সঙ্গে জানাচ্ছি যে আমার প্রিয় মা বেগম নওরিন সামি খান প্রয়াত। আমর পরিবার এই মুহূর্তে গভীর শোকের মধ্যে রয়েছে। তিনি একজন অবিশ্বাস্য মহিলা যিনি ভালবাসা এবং আনন্দ ভাগ করে নিয়েছেন সবসময়। মায়ের স্পর্শ, ভালোবাসা মিস করব। আমার মায়ের আত্মার শান্তি কামনা করবেন। আল্লাহ আমাদের প্রিয় মানুষকে যেন জন্নত স্থান দেন।’
প্রসঙ্গত, আদনান সামি জন্মসূত্র পাকিস্তানি। যদিও ভারতীয় নাগরিক হওয়ার আগে তিনি কানাডার নাগরিক ছিলেন। গায়কের তাঁর বাবা পাক আর্মির সদস্য হিসাবে ভারতের বিরুদ্ধে লড়াই পর্যন্ত করেছেন। তবে বহু বছর ধরে এদেশেই বাস আদনানের। তিনি আর দেশে ফেরেননি। তবে ২০১৬ সালে মোদী সরকার আদনানকে এদেশের নাগিরকত্ব প্রদান করেছেন। ঝুলিতে এসেছে পদ্মশ্রী সম্মানও। তবে এরজন্য সমালোচনার মুখেও কম পড়তে হয় না তাঁকে। বিশেষত, পাকিস্তানের একটা বড় অংশ ‘বেইমান’ তকমা দেগে দিয়েছেন আদনানের নামের পাশে।