আর জি কর মেডিকেল হাসপাতালের চিকিৎসক তরুণীর মৃত্যুর পর কেটেছে দু-সপ্তাহ। ঘটনার পরদিনই ধরা পড়েছিল এক অভিযুক্ত সঞ্জয় রায়। তারপর থেকেই সেভাবে এগোয়নি মামলার গতিপ্রকৃতি। সিবিআই তদন্তভার হাতে পেলেও এখনও কোনও আশার বাণী শোনাতে পারেনি কেন্দ্রীয় সংস্থা। ক্রমেই ধৈর্য্যের বাঁধ ভাঙছে সাধারণ মানুষের।
দফায় দফায় চলছে মিছিল, অবস্থান বিক্ষোভ। আম জনতার পাশাপাশি প্রতিবাদে সরব টলিউডও। শনিবার রাতে রং ভুলে আর্টিস্ট ফোরামের প্রতিবাদ অবস্থানে একমঞ্চে পাওয়া গেল দেব, রূপা গঙ্গোপাধ্যায়, রুদ্রনীলদের। সবার কন্ঠে একটাই স্বর-'জাস্টিস অফ আর জি কর'।
দেবের সঙ্গে হাতে হাত ধরে বিচার চাইলেন বিজেপি নেত্রী রূপা গঙ্গোপাধ্যায়। এদিন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কেও আক্রমণ করতে ছাড়লেন না মহাভারত-এর দ্রৌপদী। আর জি করের ঘটনার পর মেয়েদের সুরক্ষার কথা মাথায় রেখে রাত্রি সাথী অ্যাপ চালু করেছে রাজ্য সরকার। সেই নিদানে উল্লেখ করা হয়েছিল, যতটা সম্ভব মেয়েদের নাইট ডিউটি থেকে অব্যাহতি দেওয়া হবে। মমতা সরকারের এমন বাণী না-পসন্দ শুভবুদ্ধিসম্পন্ন মানুষের। অনেকের কাছেই এটা ‘পাগলের প্রলাপ’ ঠেকেছে। এবার প্রকাশ্যে মমতার এই ভাবনার সমালোচনায় মুখর রূপা গঙ্গোপাধ্যায়।
মিডিয়ার মুখোমুখ হয়ে তিনি বলেন, ‘সময়সীমা বেঁধে দিয়ে মেয়েদের নাইট ডিউটি আটকানো প্র্যাক্টিকালি পসিবল নয়। রাত ৮টার পর কি প্লেন উড়বে না! হাসপাতালে মহিলা ডাক্তাররা রোগী দেখবেন না? উনি এসব কথা বললে তো চলবে না। মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রীর কল্পনাপ্রসূত ভাবনা এগুলো। এত বোকা কথা ওঁনার থেকেই আশা করা যায়’।
রূপা গঙ্গোপাধ্যায় আরও বলেন, পশ্চিমবঙ্গে কোণায় কোণায় ঘুরে তিনি নারী-নির্যাতনের বহু ঘটনা দেখেছেন। এই রাজ্যে বছরে ৩৫-৪০ হাজারের মতো নারী নির্যাতনের ঘটনা হয় বলে তিনি দাবি করেন। বলেন, ‘ওই ডাক্তার মেয়েটির মা’র কথা যখন শুনছি না… বলছেন- ওকে যখন মারছিল ও হয়ত কত মা-মা করে ডেকেছি আমি ঘুমিয়ে ছিলাম তখন। এই কথাগুলো প্রত্যেক মায়ের বুকে বাজছে'।
ওদিকে আরজি কর মামলার জট খুলতে আপতত পলিগ্রাফ টেস্টে ভরসা রাখছে সিবিআই। রবিবার চিকিৎসককে খুন ও ধর্ষণে অভিযুক্ত সঞ্জয় রায়ের পলিগ্রাফ টেস্ট করতে প্রেসিডেন্সি জেলে পৌঁছেছে সিবিআই। সঞ্জয় রায়, সন্দীপ ঘোষ-সহ সাতজনের পলিগ্রাফ টেস্ট হবে। অনুমতি দিয়েছে শিয়ালদা কোর্ট।