HT Bangla Exclusive: ফলের শরবত বলতে এখন ফ্রুট জুসই বোঝেন অনেকে। কারণ বাজারেও তাই মেলে। বিভিন্ন প্যাকেজড ড্রিংকসকে, যা আদতে রাসায়নিক মেশানো, ফ্রুট জুস বলে বিক্রি করা হয়। টাটকা ফল আর শরবতের দোকান সবসময় কাছে না থাকায় অগত্যা সেগুলোই ভরসা। তবে এই আকালেও যে গুটি কয়েক দোকান আসল ফল দিয়েই চোখের সামনে ফলের শরবত বানিয়ে দেয়, তাদের মধ্যে অন্যতম কপিলা আশ্রম। একশো বছর পুরনো এই শরবতের দোকান শুধু ভারেই বিখ্যাত নয়। ধারে অর্থাৎ শরবতের গুণেও বেশ জনপ্রিয়। উত্তর কলকাতার শ্রীমানি বাজারের এই দোকান নাকি বন্ধ হয়ে যাচ্ছে, কয়েকদিন আগে সোশ্যাল মিডিয়াতে গুজব ছড়ায় এমনটাই। এই ব্যাপারে কী বলছেন দোকানের মালিক? কথা বললHT বাংলা।
আরও পড়ুন - HT Bangla Special: শহরে একের পর এক আত্মহত্যা, কপিক্যাট সুইসাইড? HT বাংলায় আলোচনায় দুই প্রবীণ মনোবিদ
কী বলছেন দোকানের মালিক?
১৯০৭ সালে হৃষিকেশ শ্রীমানির হাত ধরে শ্রীমানিবাজারে একটি ছোট্ট ভাড়া ঘরে শুরু হয়েছিল কপিল আশ্রম শরবতের দোকানটি। বর্তমানে হৃষিকেশবাবুর তৃতীয় প্রজন্ম দিব্যেন্দু শ্রীমানি দোকান সামলান। তাঁর কথায়, ‘এটা পুরোপুরি ফেক নিউজ। ২০১৮ সালে ৪ সেপ্টেম্বর আমাদের পুরনো দোকানটি নিয়ে একটি গণ্ডগোল হয়। সেই গণ্ডগোলের কথা তখন সোশ্যাল মিডিয়াতে ভাইরাল হয়েছিল। সম্প্রতি সেটাই আবার সমাজমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ছে।’ কী গণ্ডগোল হয়েছিল তাও জানালেন দিব্যেন্দু। ‘প্রোমোটারের চক্রান্তে দীর্ঘদিনের ওই এক চিলতে জায়গাটি ছেড়ে দিতে হয়েছিল। কিন্তু পরিস্থিতি সামলে ফের শ্রীমানি বাজারেই একটি দোকান খুলতে পেরেছি। পুরনো ওই জায়গায় বর্তমানে আমাদেরই একজন কর্মচারী অন্যায়ভাবে আদি কপিলা আশ্রম নামে ফের দোকান শুরু করেছে। বলা বাহুল্য, প্রোমোটার এই বিষয়ে মদত দিয়েছেন ওই কর্মীকে। ভাইয়ে ভাইয়ে ঝগড়া হয়ে দোকান আলাদা হয়েছে — এমন একটি মিথ্যে কথা বলে কর্মীটি ক্রেতাদের ভুল বোঝান রোজ। কিন্তু তাঁরা ১০০ বছরের পুরনো এই কথাটি লেখেন না, লিখতে পারবেন না। কারণ সেই সংক্রান্ত সব ডকুমেন্ট আমাদের কাছেই একমাত্র আছে। কর্মচারীকে মালিক কখনওই সব শিখিয়ে দেন না। তাই কিছু বিশেষ শরবত রয়েছে, যা ওরা বানাতে পারেন না। এগুলো একমাত্র আমাদের দোকানে এলেই পাবেন।’
আরও পড়ুন - HT Bangla Special: পড়ে যেতে যেতে সামলে নেওয়া…, বাঙালি জীবন যখন সাইকেলের খণ্ডকাব্য

কী সেই বিশেষ শরবত?
‘আবার খাই মালাই শরবত, আবার খাব মালাই শরবত, কাঁচা আমের শরবত— এই তিনটে আমাদের স্পেশাল আইটেম। এগুলি একমাত্র আমরাই তৈরি করে থাকি।’ দিব্যেন্দুবাবুর কথায়,‘এছাড়াও আমাদের বেশ কিছু স্পেশাল শরবত রয়েছেন যেমন
কেশর মালাই শরবত। এই শরবতটি মান্না দে খেতে বেশ পছন্দ করতেন। আবার আমাদের দোকানের দধিতিও অনেকে খেতে পছন্দ করেন। দধিতি দইয়ের ঘোলের স্পেশাল শরবত। নামটা স্বয়ং ঠাকুর্দাই রেখেছিলেন।’
সুখবর পেয়ে স্বস্তির শ্বাস
প্রাচীন ও বিখ্যাত দোকান হলেই তার ভুয়ো সংস্করণ প্রায়ই দেখা যায়। তবে বাঙালির নস্টালজিয়ার সঙ্গে একপ্রকার জড়িয়ে গিয়েছে কপিলা আশ্রমের শরবত। ফলে দোকান বন্ধ হওয়ার খবরে আঘাত পেয়েছিলেন অনেকেই। দিব্যেন্দুবাবুর কথায়, ‘ইতিমধ্যেই খবর পেয়ে অনেকে এসে খোঁজ করে গিয়েছেন। খবর নিয়েছেন। সবাইকেই জানিয়েছি খবরটা ভুয়ো। এমন কোনও সম্ভাবনাই নেই।’ ফলে আপাতত সুখবর পেয়ে স্বস্তির শ্বাস ফেলার পালা নস্টালজিক বাঙালির।