বাংলাদেশে হিন্দুদের ওপর অত্যাচার নিয়ে মহম্মদ ইউনুসকে 'কথা শোনান' নরেন্দ্র মোদী। এদিকে যেদিন ব্যাঙ্ককে মোদী-ইউনুস বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়, সেদিন প্রায় ভোরেই রাজ্যসভাতে পাশ হয়েছিল ওয়াকফ সংশোধনী বিল। তবে নিজেদের দেশ নিয়ে চোখ বন্ধ করে রেখে এবার সেই ওয়াকফ বিল নিয়ে আপত্তি জানাল বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস। বাংলাদেশি এই দলের দাবি, মুসলিম সম্প্রদায়ের ধর্মীয় অধিকার এতে খর্ব করা হবে। বাংলাদেশে ইসলামি শাসন কার্যকর করতে চাওয়া খেলাফত মজলিসের আরও দাবি, এই ওয়াকফ বিল ভারতের সংবিধান বিরোধী। (আরও পড়ুন: চিনকে টেক্কা দিতে ভারতের হাতিয়ার 'ত্রিঙ্কোমালি', শ্রীলঙ্কায় বড় চাল মোদীর)
আরও পড়ুন: ইউনুসকে মোদীর বার্তার পরই লাঙ্গলবন্দে বাংলাদেশি উপদেষ্টা, হিন্দুদের বললেন…
এই ইস্যুতে খেলাফজ মজলিসের আমির মাওলানা মামুনুল হক ও মহাসচিব মাওলানা জালালুদ্দিন আহমদ বলেন, 'মুসলিম সমাজের ধর্মীয় বিশ্বাস, ইতিহাস এবং জনকল্যাণমূলক কর্মকাণ্ডের ভিত্তি ওয়াকফ। এই বিল আগের ওয়াকফ আইনকে দুর্বল করে দেবে। এতে ওয়াকফ সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করার পথ তৈরি হয়েছে।' এদিকে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারকে সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলিম রাষ্ট্র হিসেবে ভারতীয় মুসলমানদের পাশে দাঁড়াতে আহ্বান জানায় হেফাজত মজলিস। (আরও পড়ুন: ব্যাঙ্ককের বৈঠকে হাসিনাকে নিয়ে ইউনুসকে কী বলেন মোদী? বড় দাবি বাংলাদেশ সরকারের)
আরও পড়ুন: মার্কিন মুলুকে 'দাম' নেই বাংলাদেশিদের! ভিসা থাকা সত্ত্বেও বিতাড়িত বহু
প্রসঙ্গত, লোকসভার এবং রাজ্যসভাতে পাশ হয়েছে ওয়াকফ (সংশোধনী) বিল। রাজ্যসভায় এই বিলটি পাশ করাতে বিজেপির প্রয়োজন ছিল ১১৯টি ভোটের। তারা সেই সংখ্যা থেকে বেশ কিছুটা বেশি ভোটই পায়। ৩৩ ভোটের ব্যবধানে বিলটি পাশ হয় সংসদের উচ্চকক্ষে। এর পক্ষে পড়েছিল ১২৮টি ভোট, বিপক্ষে পড়ে ৯৫টি ভোট। এর আগে লোকসভায় এই বিলের পক্ষে ভোট দিয়েছিলেন ২৮৮ জন সাংসদ, বিপক্ষে ভোট দিয়েছিলেন ২৩২ জন সাংসদ।
উল্লেখ্য, ওয়াকফের অধীনে ভারতে মোট ৮.৭ লক্ষ সম্পত্তি আছে। ৯.৪ লক্ষ একর জমি নিয়ন্ত্রণ ও পরিচালনা করে ওয়াকফ। যার আনুমানিক মূল্য ১.২ লক্ষ কোটি টাকা। দেশে সবচেয়ে বেশি ওয়াকফ সম্পত্তি আছে উত্তরপ্রদেশে (২,৩২,৫৪৭, দেশের মোট ওয়াকফ সম্পত্তির ২৭ শতাংশ)। তারপরই তালিকায় আছে পশ্চিমবঙ্গ। রিপোর্ট অনুযায়ী, পশ্চিমবঙ্গে মোট ৮০ হাজার ৫৪৮টি ওয়াকফ সম্পত্তি রয়েছে। বাংলায় ওয়াকফ সম্পত্তির ওপরে রয়েছে ১৫৮টি স্কুল, ৪টি মডেল ইংলিশ মিডিয়াম মাদ্রাসা, ১৯টি মুসলিম হস্টেল, ৯টি হাসপাতাল বা স্বাস্থ্যকেন্দ্র। বীরভূমে ওয়াকফের জমির ওপরে রয়েছে একটি শপিং কমপ্লেক্সও। তবে এত সম্পত্তি থাকা সত্ত্বেও ভারতে ওয়াকফের বার্ষিক আয় নাকি মাত্র ১৬৩ কোটি টাকা। এই আবহে বিজেপি ওয়াকফ সম্পত্তি পরিচালনায় গাফিলতির অভিযোগ তুলেছে। এই আবহে ওয়াকফ পরিচালনায় স্বচ্ছতা আনতেই নাকি এই সংশোধনী বিল আনা হয়েছিল।