নেপালে প্রবল বর্ষণের জেরে ভূমিধস, বন্যা ও বজ্রপাতে গত ২৪ ঘণ্টায় মৃত্যু হল ১৪ জনের। যার মধ্যে শুধুমাত্র ভূমিধসেই মৃত্যু হয়েছে ৮ জনের। এছাড়া বজ্রপাতে প্রাণ হারিয়েছেন ৫ জন এবং বন্যায় এক জনের মৃত্যু হয়েছে। পাশাপাশি আহত হয়েছেন বহু মানুষ। এই ঘটনায় শোক প্রকাশ করেছে নেপালের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। এইসব প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের পরেই আহতদের উদ্ধারে তৎপরতার সঙ্গে কাজ শুরু করেছে এনডিআরএমএ।
আরও পড়ুন: প্রবল বৃষ্টিতে হড়পা বান ও ভূমিধস, বিধ্বস্ত নেপালে ৭ শিশু-সহ মৃত কমপক্ষে ৩৮
সাধারণত জুন মাসের প্রথম বা দ্বিতীয় সপ্তাহে নেপালে বর্ষা ঢুকে পড়ে। এ বছর নির্দিষ্ট সময়েই ১৩ জুন আনুষ্ঠানিকভাবে হিমালয়ের দেশটিতে প্রবেশ করেছে বর্ষা। তারপর থেকেই প্রাকৃতিক দুর্যোগে দেশের বিভিন্ন অংশে দুর্ঘটনা ঘটেছে। ভূমিধস, হড়পা বান, বজ্রাপাতে মৃত্যু লেগেই রয়েছে। তবে এরফলে বুধবার সবচেয়ে বেশি মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে দেশটিতে। জানা যাচ্ছে, গত ১৭ দিনে নেপালে বজ্রপাতের ফলে মৃত্যু হয়েছে কমপক্ষে ১৩ জনের এবং ভূমিধসের কারণে ১৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। প্রবল বর্ষণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে দেশটির ৩৩ টি জেলা। একাধিক জায়গায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
চলতি বর্ষায় গোটা দেশজুড়ে ভূমিধস, বন্যা ও বজ্রপাতের ফলে ১৪৭ টি ঘটনার খবর পাওয়া গিয়েছে। সাধারণত জুনের মাঝামাঝি থেকে সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝি পর্যন্ত দেশটিতে সক্রিয় থাকে মৌসুমী বায়ু। এই সময়ের মধ্যে প্রতিবছর প্রচুর ক্ষয়ক্ষতি হয় দেশটিতে। এবারও ক্ষয়ক্ষতি অব্যাহত রইল।
জানা গিয়েছে, কাঠমান্ডু থেকে প্রায় ১২৫ কিলোমিটার পশ্চিমে লামজুং জেলায় ভূমিধসে তিনটি বাড়ি একেবারে নিশ্চিহ্ন হয়ে গিয়েছে। তাতে দুই শিশুসহ চারজন নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছেন জেলা প্রশাসক বুদ্ধ বাহাদুর গুরুং। নেপালের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, ২৬ জুন ভূমিধস এবং বন্যার ৪৪টি ঘটনা ঘটেছে। মৃত ১৪ জনের মধ্যে দুজনকে এখনও শনাক্ত করা সম্ভব হয়নি। এছাড়া ভূমিধসে আহত হয়েছে ১০ জন। চলতি বর্ষায় এখনও পর্যন্ত এদিনই সবচেয়ে বেশি প্রাণহানি হয়েছে।
২৯ এপ্রিল প্রকাশিত সাউথ এশিয়ান ক্লাইমেট আউটলেট ফোরামের ২৮ তম অধিবেশনের একটি বিবৃত অনুযায়ী, এই অঞ্চলের উত্তর, পূর্ব এবং উত্তর-পূর্ব অংশের কিছু এলাকা ছাড়া দক্ষিণ এশিয়ার বেশিরভাগ অংশে এবার বর্ষায় বেশি বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। ফলে আগামীতে নেপালে প্রাণহানির ঘটনা বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।