প্রিম্যাচিওর শিশুদের জন্য একটি প্রশংসনীয় উদ্যোগ নিয়েছিল পাকিস্তানের একটি হাসপাতাল। দেশে প্রথম মাতৃদুগ্ধের ‘ব্রেস্ট মিল্ক ব্যাঙ্ক’ চালু করা হয়েছিল। যারফলে বহু মায়ের সুবিধা হয়েছিল। তবে ধর্মগুরুরা এটিকে ইসলাম বিরোধী বলে প্রতিবাদ করতেই অবশেষে চালু হওয়ার মাত্র এক মাসের মাথায় সেটি বন্ধ হয়ে গেল। এই অবস্থায় পুনরায় মিল্ক ব্যাঙ্কটি খোলার জন্য চিকিৎসক এবং জাতীয় ইসলামিক কাউন্সিল আলোচনা করছে।
আরও পড়ুন: বুকের দুধের উৎপাদন কমে যাচ্ছে? এই টোটকাগুলি মেনে চললে একরত্তির আর সমস্যা হবে না
করাচির হাসপাতালটি এই মিল্ক ব্যাঙ্ক চালু করার জন্য ডিসেম্বরে একটি ইসলামিক সেমিনারি থেকে ধর্মীয় অনুমোদন পেয়েছিল। অবশেষে জুন মাসে এই ব্যাঙ্ক চালু করা হয়েছিল। তবে ইসলামিক ধর্মীয় গুরুদের আপত্তির কারণে সেই অনুমোদনটি প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়। ফলে বাধ্যতামূলকভাবে বন্ধ হয়ে যায় মিল্ক ব্যাঙ্কটি। এই হাসপাতালের নাম হল- সিন্ধু ইনস্টিটিউট অফ চাইল্ড হেলথ অ্যান্ড নিওনাটোলজি হাসপাতাল। সেখানকার একজন চিকিৎসক এবং হাসপাতালের আধিকারিক জামাল রাজা বলেন, ‘প্রিম্যাচিওর শিশুদের বেঁচে থাকার সম্ভাবনাকে আরও বাড়িয়ে তোলার একমাত্র উপায় হল মায়ের বুকের দুধ। তবে অনেক শিশুই পর্যাপ্ত দুধ পায় না। তারফলে এই ধরনের শিশুর বাঁচার সম্ভাবনাও ক্ষীণ হয়ে পড়ে। মানুষের কোনও ধারণা নেই এটা কি। শুধুমাত্র অপুষ্টিজনিত কারণে ভোগা শিশুদেরই এই দুধ দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়।
উল্লেখ্য, পাকিস্তানে নবজাতকের মৃত্যুর হার প্রতি ১০০০ জনে ৩৯ জন। এই উদ্যোগের মূল উদ্দেশ্য ছিল দেশে প্রিম্যাচিওর শিশুদের বেঁচে থাকতে সাহায্য করা। জাতিসংঘের শিশু সংস্থার মতে, দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে পাকিস্তানে নবজাতকের মৃত্যুর হার সবচেয়ে বেশি পাকিস্তানে। সেই কারণেই এই উদ্যোগ নেওয়া হয়। ইসলামি উপদেষ্টা সংস্থা জামিয়া দারুল উলুম ২০২৩ সালের ডিসেম্বরে এই সুবিধাটিকে অনুমোদন দিয়েছিল।
তবে এই নিয়ে আপত্তি জানিয়েছিল সরকারের ন্যাশনাল কাউন্সিল অফ ইসলামিক আইডিওলজি। তাদের বক্তব্য, ইসলামিক নিয়ম অনুযায়ী, স্বামী এবং স্ত্রী একই মহিলার স্তন্যপান করতে পারবে না। ফলে এই মিল্ক ব্যাঙ্কটি অ ইসলামিক।কাউন্সিলের গবেষণা প্রধান ইনামুল্লাহ জানান, শিশুটির পরিবারকে অবশ্যই জানতে হবে যে দাতারা কারা। এই ধরনের পরিবারের মধ্যে ভবিষ্যতে বিবাহের সম্পর্ক যেন গড়ে না ওঠে।