বৃদ্ধ জো বাইডেনের মানসিক এবং শারীরিক সমস্যাগুলিকে নাকি তাঁর প্রেসিডেন্ট পদে বসার প্রথম দিন থেকেই আড়াল করে এসেছেন হোয়াইট হাউসের কর্মী ও আধিকারিকরা! এমনকী, বিশেষ কিছু ঘটনা ঘটার পর প্রেসিডেন্টের ঘোষিত নির্ঘণ্টও বদলে ফেলা হয়! বৃহস্পতিবার সামনে এসেছে এমনই চাঞ্চল্যকর তথ্য।
প্রসঙ্গত, আমেরিকার ইতিহাসে এখনও পর্যন্ত জো বাইডেনই প্রবীণতম ব্যক্তি হিসাবে প্রেসিডেন্ট পদে শপথ নেন। তাঁর সমস্যাগুলি ওয়াশিংটনেরও অজানা ছিল না। লক্ষ্যণীয় বিষয় হল, ইদানীংকালে যত জন মার্কিন প্রেসিডেন্ট হয়েছেন, তাঁদের সকলের তুলনায় অনেক কম পরিমাণে বড় সাংবাদিক সম্মেলন করেছেন বাইডেন। এমনকী, একাধিকবার মঞ্চে উঠেও বিপর্যস্ত হয়ে পড়েন বাইডেন।
এ নিয়ে মার্কিন সংবাদমাধ্যমের সামনে মুখ খুলেছেন ডেমোক্র্যাট এমপি এবং অর্থদাতারা। ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল-কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তাঁদের দাবি, হোয়াইট সব জানত। কিন্তু, এত দিন ধরে পুরোটাই গোপন করে রাখা হয়েছিল।
করোনাকালে মার্কিন প্রেসিডেন্টের কুর্সিতে বসেছিলেন জো বাইডেন। তাঁর বয়সের কথা মাথায় রেখেই প্রায় সঙ্গে সঙ্গে বাইডেনের চারপাশে এক অতিশয় পোক্ত ঘেরাটোপ তৈরি করে ফেলেন প্রেসিডেন্টের জন্য নিযুক্ত সরকারি কর্মীরা। এমনকী, ২০২১ সালের জানুয়ারি মাস থেকে প্রেসিডেন্টের ব্যক্তিগত আলাপচারিতাও নিয়ন্ত্রণ করা হয়।
এখানেই শেষ নয়। মার্কিন প্রেসিডেন্টের সমস্য়াগুলি যাতে আমজনতা এবং বিশ্ববাসীর সামনে প্রকাশ না হয়ে যায়, তা নিশ্চিত করতে হোয়াইট হাউসের কর্মী ও আধিকারিকরা বারবার তাঁরে কর্মসূচি এবং সেই সংক্রান্ত নির্ঘণ্ট বদলেছেন। দৈনন্দিনভাবেই এটা করা হত। যখনই দেখা যেত প্রেসিডেন্ট ক্লান্ত বোধ করছেন বা স্পষ্টভাবে কথা বলতে পারছেন না, তখনই তাঁর বিভিন্ন কর্মসূচির সময়সূচি পুনরায় নির্ধারণ করা হত।
২০২১ সালের বসন্ত ঋতু আসতে আসতে বিষয়টা বেশ জটিল হয়ে দাঁড়িয়েছিল। প্রেসিডেন্টের 'ভালো দিন এবং খারাপ দিন' অনুসারে তাঁর বৈঠকগুলি নির্ধারণ করা হত!
সংশ্লিষ্ট সাক্ষাৎকারে কোনও এক সূত্র মার্কিন সংবাদমাধ্যমকে বলেছেন, জাতীয় নিরাপত্তাব্যবস্থার সঙ্গে যুক্ত আধিকারিকরা তাঁকে একবার বলেছিলেন - 'প্রেসিডেন্টের ভালো দিন থাকে। খারাপ দিনও থাকে। এবং আজ ছিল খারাপ দিন। তাই, আমরা এই কর্মসূচিটি আগামিকাল করব।'
বস্তুত, বাইডেনের জন্য যে এই সমস্ত বিশেষ ব্যবস্থা করা একান্ত প্রয়োজনীয়, সেটা প্রথম সামনে আসে, যখন ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিরুদ্ধে তাঁর একটি বিতর্কসভা চরম ফ্লপ হয়।
এটা অবশ্য এখনকার ঘটনা নয়। তখন জো বাইডেন ছিলেন আমেরিকার ডেমোক্র্যাট প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী। সেই সময় সংশ্লিষ্ট মার্কিন আধিকারিকরা স্বীকার করেছিলেন, বাইডেনের পক্ষে দিনে ছ'ঘণ্টার বেশি কাজ করাটা বেশ কঠিন। এবং সেই ছ'ঘণ্টা মূলত রোজ বিকেল ৪টেয় শেষ হয়ে যায়!