স্ত্রীয়ের সঙ্গে ঝগড়া করতে করতে, ছয় মাস বয়সী বাচ্চা মেয়েকেই জানালা থেকে ছুঁড়ে ফেলে দিলেন বাবা। মর্মান্তিক এই ঘটনাটি ঘটে গিয়েছে চিনে। স্থানীয় সংবাদ সূত্রে জানা গিয়েছে যে মাতাল অবস্থায় এই কাণ্ড বাঁধিয়েছেন এই ব্যক্তি। রাগের মাথায় ষষ্ঠ তলার অ্যাপার্টমেন্টের জানালা থেকে ছুড়ে ফেলে দেন মেয়েকে। শিশুটিকে দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলেও শেষ রক্ষা হয়নি। জানা গিয়েছে, এমন মর্মান্তিক কাজের জন্য চার বছরের জেল হয়েছে অভিযুক্ত বাবার।
কীভাবে এই মর্মান্তিক ঘটনা ঘটল
জানা গিয়েছে, অভিযুক্ত বাবার নাম ঝাও। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ঝাও তাঁর স্ত্রীর সঙ্গে রাতের খাবারের সময় ওয়াইন পান করেন। এরপর তাঁর স্ত্রী কিছু ঘরের কাজ করার জন্য বাচ্ছাটিকে বাবার কাছে রেখে যান। বাচ্চাটি সেসময় কাঁদছিল। কিন্তু ঝাও শিশুটিকে থামানোর চেষ্টা করেননি। এতে তাঁর স্ত্রী বিরক্ত হন এবং হতাশা প্রকাশ করেন। এরপরেই দুজনে তর্ক শুরু করেন, জোরালো হয় ঝগড়া। রাগের মাথায়, ঝাও শিশুটিকে কোলে নিয়ে অ্যাপার্টমেন্টের জানালার দিকে চলে যান।
ঝগড়া চলাকালীনই, ঝাও শিশুটিকে শান্ত করার জন্য তাঁকে দোলাতে চেষ্টা করেন, কিন্তু সে সময় মাতাল অবস্থায় থাকায়, তিনি ঘটনাক্রমে বাঁচাটিকে জানালার বাইরে ফেলে দেন। কোনওক্রমে হাত পিছলে গিয়েই এই ঘটনা ঘটেছে বলে দাবি করেছেন তিনি। এরপর, দুজনেই ঝগড়া থামিয়ে, মেয়েকে খুঁজতে দ্রুত নীচে নেমে যান। ঝাও তড়িঘড়ি শিশুটিকে হাসপাতালে নিয়ে যান ঠিকই, কিন্তু সেখানেই তাকে মৃত ঘোষণা করা হয়। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, মস্তিষ্কে গুরুতর আঘাত এবং একাধিক অঙ্গের ক্ষতির কারণে শক থেকে বাচ্চা মেয়েটির মৃত্যু হয়েছে।
ঝাওয়ের স্ত্রী নিজেই মেয়েকে জানালা দিয়ে ছুঁড়ে ফেলে দেওয়ার অভিযোগ করেন তাঁর বিরুদ্ধে। এরপর হাসপাতাল পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করে। যদিও আদালতে দাঁড়িয়ে স্ত্রী বলেছিলেন যে ঝাও প্রায় প্রতিদিনই মদ খান, কিন্তু তিনি সবসময় তাঁদের মেয়ের প্রতি যত্নবানই ছিলেন। উল্লেখ্য, পশ্চিম চিনের জিনজিয়াং অঞ্চলের একটি আদালত ঝাওকে নিজেরই সন্তানের হত্যার জন্য দোষী সাব্যস্ত করেছে। তবে, ঝাও যে ইচ্ছাকৃতভাবে এমনটা করেননি তারও প্রমাণ মিলেছে। তাই অবশেষে ঝাওকে তাঁর অসাবধানতার জন্য চার বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
প্রসঙ্গত, এর আগেও এমনই একটা ঘটনা ঘটে ২০২১ সালে। চিনে বাবা-মা ভুল করে তাঁদের তিন বছরের বাচ্চা মেয়েকে গাড়িতে পাঁচ ঘণ্টা রেখে যাওয়ার পর বাচ্চাটি মারা যায়। গত বছর গাড়ি থেকে ফোন আনতে গিয়ে আরও এক বাবা তাঁর চার বছরের মেয়েকে সমুদ্রের কাছে একা রেখে যান। মেয়েটি সমুদ্রে ভেসে যায়, এবং তার মৃতদেহ দুই সপ্তাহ পরে পাওয়া গিয়েছিল। উভয় ক্ষেত্রেই, নিহতদের বাবা-মাকে তাঁদের কর্মের জন্য আইনত দায়ী করা হয়নি।