ভারতের প্রথম রাজ্য হিসেবে উত্তরাখণ্ডে কার্যকর হয়েছে অভিন্ন দেওয়ানি বিধি। সেই বিধিতেই ৩৭টি এমন সম্পর্কের কথা উল্লেখ আছে, যা কি না অবৈধ হিসেবে বিবেচিত হবে। পুরুষদের জন্যে এমনই নিষিদ্ধ একটি সম্পর্ক হল - মায়ের মায়ের বাবার বিধবাকে বিয়ে করা যাবে না। আবার আইনে বলা হয়েছে, মেয়ের মেয়ের ছেলের বিধবাকেও বিয়ে করতে পারবেন না কোনও পুরুষ। এদিকে মহিলাদের ক্ষেত্রে বাবার বাবার মায়ের বরকে বিয়ে করা যাবে না। এরই সঙ্গে বাবার মায়ের মায়ের বর, মায়ের বাবার মায়ের বর এবং মায়ের মায়ের মায়ের বরকে বিয়ে করতে পারবেন না মহিলারা। (আরও পড়ুন: NPS বাৎসল্যে করছাড়ের ঘোষণা বাজেটে, কারা লাভ পাবেন এর?)
আরও পডুন: ৮-১২ লাখ আয়ে কাটবে কর, পরি TDS রিফান্ডে ফিরবে টাকা? 'কনফিউজড' DMK MP
এই ধরনের প্রায় অবাস্তব সম্পর্ককে তালিকাভুক্ত করে কেন নিষিদ্ধ করা হয়েছে? এই বিষয়ে টাইমস অফ ইন্ডিয়াকে অভিন্ন দেওয়ানি বিধি কমিটির সদস্য মনু গৌড় বলেন, 'বর্তমানে গড় বিয়ের বয়েস বেড়ে গিয়েছে। তবে আগেকার দিনে অনেকেরই খুব ছোট বয়সে বিয়ে হত। তাই এখনও যাতে কোনও ভাবে এটা না হয়, তার জন্যেই এই নিয়ম।' এরই সঙ্গে অভিন্ন দেওয়ানি বিধিতে লিভ-ইন পার্টনারদের রেজিস্ট্রেশন করানো বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। নয়া আইন অনুযায়ী, নিয়ম না মানলে বা রেজিস্ট্রেশনে কোনও ভুল তথ্য দিলে জেলেও যেতে হতে পারে দোষীদের। আইনে এর সাজা হিসেবে তিন মাসের কারাবাস কিংবা ২৫ হাজার টাকা জরিমানা অথবা উভয় শাস্তিরই বিধান আছে। এদিকে নয়া অইনে আরও বলা হয়েছে, কেউ যদি লিভ-ইনের রেজিস্ট্রেশন করাতে এক মাসের বেশি দেরি করেন, তা হলে তিন মাসের জেল কিংবা ১০ হাজার টাকা জরিমানা অথবা উভয় শাস্তি পাওয়ার সম্ভাবনা আছে। (আরও পড়ুন: আয়করে 'বেসিক এক্সেম্পশন' বেড়েছে এবারের বাজেটে, জেনে নিন বিশদে)
আরও পড়ুন: 'মধ্যবিত্তকে চিট করা হয়েছে', অঙ্ক কষে আয়কর সমীকরণ বোঝালেন TMC সাংসদ
প্রসঙ্গত, উত্তরাখণ্ডের অভিন্ন দেওয়ানি বিধি আইন বিবাহ এবং বিবাহবিচ্ছেদ, উত্তরাধিকার, লিভ-ইন সম্পর্ক এবং সম্পর্কিত বিষয়গুলি পরিচালনা ও নিয়ন্ত্রণ করবে। এই আবহে নিয়মে বলা আরও হয়েছে, ২১ বছর বয়সির ছোট কেউ যদি লিভ-ইন সম্পর্কে থাকেন, তাহলে তাঁকে অভিভাবকের সম্মতি নিতে হবে এর জন্যে। অপরদিকে বিয়ের ক্ষেত্রে ছেলে-মেয়ে সর্বনিম্ন বয়স থাকবে ২১ বছর। এদিকে নিজ নিজ সম্প্রদায়ের রীতি-রেওয়াজ মেনে বিয়ে করতে পারবেন দম্পতি। তবে রেজিস্ট্রেশন বাধ্যতামূলক হবে সেই ক্ষেত্রেও। (আরও পড়ুন: বাড়ি ভাড়ার ওপরে TDS সীমা বাড়ল, বাজেটে বড় ঘোষণা নির্মলার)
এদিকে অভিন্ন দেওয়ানি বিধিতে বহুবিবাহ ও 'হালাল' নিষিদ্ধ হয়েছে। নয়া আইনে ধর্ম নির্বিশেষে প্রত্যেক নারীর অধিকার পুরুষের সমান হবে। এবার থেকে ধর্মীয় বিধানের জোরে নারীর অধিকার খর্ব করা যাবে না। এছাড়া লিভ-ইন সম্পর্কে থাকাকালে সন্তান হলে সেই সন্তান বাবা ও মায়ের উত্তরাধিকার লাভ করবে। অপরদিকে নয়া আইনে বলা হয়েছে, নারী ও পুরুষ একাধিক বিয়ে এবং একাধিক সঙ্গীর সঙ্গে যৌন সম্পর্ক চালিয়ে যেতে পারবে না। এদিকে অভিন্ন দেওয়ানি বিধি আদিবাসীদের ক্ষেত্রে বলবৎ হবে না। জন্ম, বিয়ে, উত্তরাধিকার, নারীর অধিকারের মতো ক্ষেত্রে আদিবাসী সমাজের নিজস্ব বিধান চালু আছে। সেগুলি বহাল থাকবে বলে জানানো হয়েছে।