ওবিসি সমরক্ষণ নিয়ে বিভ্রান্তির জেরে ইতিমধ্য়েই উচ্চ মাধ্যমিক স্তর থেকে শুরু করে স্নাতক কিংবা স্নাতকোত্তর স্তরে - রাজ্যের উচ্চ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলিতে ভর্তি নিয়ে জটিলতা তৈরি হয়েছে। তার রেশ গড়াল মেডিক্যালের স্নাতকোত্তর পর্যায়ে ভর্তি নিয়েও। ঘটনা গড়াল আদালত পর্যন্ত। শেষ পর্যন্ত কলকাতা হাইকোর্টই স্থির করে দিল, কীভাবে ওবিসি সংরক্ষণের নির্দেশ মেনে প্রকাশ করতে হবে মেধাতালিকা!
উল্লেখ্য, বর্তমানে ডাক্তারি পড়ার প্রবেশিকা পরীক্ষা অন্য়ান্য প্রবেশিকা পরীক্ষার মতো কেন্দ্রীয়ভাবে নেওয়া হয়। এর জন্য আবেদনকারীদের সর্বভারতীয় প্রবেশিকা পরীক্ষা 'নিট' পাস করতে হয়। তবেই তাঁরা এমবিবিএস পড়ার সুযোগ পান। কিন্তু যাঁরা ডাক্তারিতে কোনও স্নাতকোত্তর কোর্স করতে চান, তাঁদের প্রবেশিকা পরীক্ষা নেয় রাজ্য সরকার। যার নাম - জয়েন্ট এন্ট্রান্স টেস্ট ফর মেডিক্যাল অ্য়ান্ড অ্য়ালায়েড সায়েন্স পোস্ট গ্র্যাজুয়েশন কোর্স।
শেষবার এই পরীক্ষা হয়েছিল গত বছরের (২০২৪) ৩০ জুন। সেই পরীক্ষায় সফল হয়েছিলেন মামনি সাউ নামে এক পরীক্ষার্থী। কিন্তু, তারপরও তাঁকে কাউন্সেলিংয়ের জন্য ডাকা হয়নি। দীর্ঘ সময় পেরিয়ে গিয়েছে এবং ইতিমধ্য়ে ২০২৫ সালের এন্ট্রান্স পরীক্ষার বিজ্ঞপ্তিও প্রকাশ করা হয়েছে। এই প্রেক্ষাপটে আদালতে মামলা রুজু করেন মামনি। মামলা চলে বিচারপতি কৌশিক চন্দের বেঞ্চে।
মামলা চলাকালীন ওবিসি সংরক্ষণ নিয়ে বিভ্রান্তির বিষয়টি সামনে আসে। উল্লেখ্য, এর আগে কলকাতা হাইকোর্টেরই বিচারপতি তপোব্রত চক্রবর্তী ও বিচারপতি রাজাশেখর মান্থার ডিভিশন বেঞ্চের নির্দেশ দিয়েছিল, ২০১০ সালের পর ইস্যু করা সমস্ত ওবিসি সার্টিফিকেট বাতিল করতে হবে। বদলে পশ্চিমবঙ্গ অনগ্রসর শ্রেণি কমিশন আইন ১৯৯৩ অনুসারে নতুন করে সংরক্ষণের তালিকা তৈরি করিয়ে তা বিধানসভায় পাস করাতে হবে।
সেই তালিকায় ওবিসি তালিকাভুক্ত ৬৬টি গোষ্ঠীকেই রাখতে হবে এবং ওবিসি-এ ও ওবিসি-বি তালিকাভুক্তদের জন্য ৭ শতাংশ সংরক্ষণ নিশ্চিত করতে হবে।
বুধবার (২১ মে, ২০২৫) বিচারপতি কৌশিক চন্দ নির্দেশ দেন, কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ যে নির্দেশ দিয়েছিল, সেই অনুসারেই ২০২৪ সালের পরীক্ষায় সফল পরীক্ষার্থীদের মেধাতালিকা পুনরায় প্রকাশ করতে হবে। এবং যোগ্য প্রার্থীদের কাউন্সেলিং আগামী একমাসের মধ্যে শেষ করতে হবে।