একগুচ্ছ বিমান এবং রণতরীতে গোটা এলাকা ঘিরে চিনের হুমকিতে তাইওয়ানের রক্তচাপ ক্রমশ বাড়ছে। বিশেষজ্ঞরা অবশ্য মনে করছেন, এর মাধ্যমে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে সরাসারি চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়েছে বেজিং। বুধবার নতুন করে তাইওয়ানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রক তাদের জলসীমার আশেপাশে দুটি চিনা বিমান এবং ১২টি নৌবাহিনীর জাহাজের গতিবিধি পর্যবেক্ষণ করেছে।
এক্স পোস্টে তাইওয়ানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রক জানিয়েছে, 'আজ সকাল ৬টা পর্যন্ত তাইওয়ানের চারপাশে পিএলএ বিমানবাহিনীর দুটি বিমান এবং ১২টি রণতরীকে দেখা গিয়েছে। ২টি বিমানের মধ্যে ২টি মধ্যরেখা অতিক্রম করে তাইওয়ানের উত্তর ও পূর্বাঞ্চলীয় এয়ার ডিফেন্স আইডেন্টিফিকেশন জোন প্রবেশ করেছে। আমরা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করেছি এবং সেই অনুযায়ী প্রতিক্রিয়া জানিয়েছি।' মঙ্গলবারের আগে, তাইওয়ানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রক ৩টি পিএলএ বিমান, ১১টি চিনা জাহাজ তাদের চারপাশে চলাচল করতে দেখেছে।
দ্য ইউরেশিয়ান টাইমসের প্রতিবেদন অনুসারে, ১ থেকে ২৭ মে পর্যন্ত হলুদ সাগর থেকে দক্ষিণ চিন সাগর পর্যন্ত প্রায় ৭০টি চিনা জাহাজ, যার মধ্যে নৌবাহিনীর জাহাজও রয়েছে, তাদের গতিবিধি পর্যবেক্ষণ করা হয়েছে।এই তথ্য দিয়েছেন একজন নিরাপত্তা কর্মকর্তা যিনি নাম প্রকাশ না করার শর্তে কথা বলেছেন। সাম্প্রতিক বছরগুলিতে, চিন তাইওয়ানের চারপাশে যুদ্ধজাহাজ এবং যুদ্ধবিমানের মোতায়েন বাড়িয়েছে, তাইপেকে তাদের সার্বভৌমত্বের দাবি মেনে নিতে চাপ সৃষ্টি করছে। নিরাপত্তা কর্মকর্তা বলেছেন, 'তাদের সামরিক কার্যক্রম এবং ধূসর অঞ্চলের কার্যকলাপে পুরো দ্বীপ শৃঙ্খল জুড়ে উল্লেখযোগ্য মোতায়েন জড়িত, যা একটি ব্যাপক সর্বোচ্চ চাপের কৌশলের প্রতিনিধিত্ব করে।' তিনি আরও জানান, 'গড়ে ৫০ থেকে ৭০টি নৌ ও সরকারি জাহাজ কার্যক্রম চালাচ্ছে, সঙ্গে বিভিন্ন সামরিক বিমানের শতাধিক উড্ডয়ন হয়েছে, যা ধারাবাহিকভাবে উত্তেজনা সৃষ্টির মিশনে নিয়োজিত।'
আরও পড়ুন-'কাশ্মীরের স্বার্থে আমরা...,' পাকিস্তানের ব্যর্থতার কথা প্রায় মেনেই নিলেন বিলাওয়াল!
এর আগে তাইওয়ানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রক জানিয়েছে, মে মাসে মোট ৭৫টি চিনা বিমান তিনটি যুদ্ধ প্রস্তুতি টহল মিশনে দ্বীপের কাছে অংশ নিয়েছিল। এই ক্রিয়াকলাপগুলি চিনের সামরিক সম্প্রসারণ প্রচেষ্টার ইঙ্গিত দেয়, যার লক্ষ্য পুরো দ্বীপ শৃঙ্খল নিয়ন্ত্রণ এবং তাদের সক্ষমতা বৃদ্ধি করা।১৯ মে, তাইওয়ানের পেঙ্ঘু দ্বীপপুঞ্জের কাছে তাইওয়ান প্রণালীতে ৩০টি অজ্ঞাত পরিচয়ের চিনা জাহাজ দেখা গেছে, যেগুলির কোনও নথিপত্র বা বন্দর নিবন্ধন ছিল না। এই জাহাজগুলি ইচ্ছাকৃতভাবে ভীতি প্রদর্শনের জন্য মোতায়েন করা হয়েছিল, বলে মন্তব্য করেছেন নিরাপত্তা কর্মকর্তা।
আরও পড়ুন-'কাশ্মীরের স্বার্থে আমরা...,' পাকিস্তানের ব্যর্থতার কথা প্রায় মেনেই নিলেন বিলাওয়াল!
উল্লেখ্য, চিনের এই সামরিক কার্যক্রম তাইওয়ানের স্বাধীনতার দাবিকে দমন করার জন্য একটি কঠোর বার্তা হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। তাইওয়ানের বর্তমান প্রেসিডেন্ট লাই চিং-তে ক্ষমতায় আসার পর থেকে চিন তাইওয়ানের আশপাশে বেশ কয়েকটি বড় মাপের সামরিক মহড়া পরিচালনা করেছে।