১ জানুয়ারি থেকেই বস্ত্রশিল্পে জিএসটি বৃদ্ধি হবে বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছে মোদী সরকার। আর এই সিদ্ধান্তই বহু ছোট বস্ত্রবয়ন শিল্পীর জন্য দুঃসংবাদ ডেকে আনবে বলে দাবি মোদী সরকারের বিরোধী শিবিরের। এই সিদ্ধান্তের বিরোধিতায় এদিন টুইট করেন অমিত মিত্র। রাজ্যের প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী তথা তৃণমূল নেতা তাঁর টুইট তোপে সাফ জানিয়েছেন, কেন্দ্রের এই সিদ্ধান্তে দেশের প্রায় দেড় কোটিরও বেশি মানুষ কর্মচ্যূত হবেন।বস্ত্রশিল্পে জিএসটি বদ্ধি ইস্যুতে অমিত মিত্র তাঁর টুইটে লেখেন, মোদী সরকারের এমন সিদ্ধান্ত কার্যকরী হলে দেড় কোটির বেশি মানুষ কর্মহীন হবেন। টুইটে অমিত মিত্র গোটা বিষয়টি নিয়ে ব্যাখ্যা করে লেখেন, 'বস্ত্র শিল্পের ওপর জিএসটি বাড়িয়ে পাঁচ শতাংশ থেকে বারো শতাংশ করা হচ্ছে। ফলে দেড়কোটি মানুষের চাকরি চলে যাবে, একলক্ষ ইউনিট বন্ধ হবে।' সাফ বার্তায় তিনি জানান দেন যে, কোভিডের ধাক্কায় ইতিমধ্যেই কাজ হারিয়েছেন বহুজনই। সেখানে বস্ত্রশিল্পে জিএসটি বাড়ালে তার ধাক্কায় বহু ইউনিট বন্ধ হতে পারে। ফলে একটি বড়সড় আশঙ্কার কালো মেঘ যে সামনে রয়েছে, তা নিজের টুইটে জানান দেন রাজ্যের প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী।নিজের টুইটে অমিত মিত্র লেখেন, 'মোদী সরকার ১ জানুয়ারি থেকে আরও একটি ভুল করতে চলেছে। বস্ত্রশিল্পে জিএসটি ৫ থেকে ১২ শতাংশ করলে দেড়কোটি মানুষ কাজ হারাবেন আর ১ লাখ ইউনিট বসে যাবে। মোদীজি এখনই একটি জিএসটি কাউন্সিলের বৈঠক ডাকুন। আর লাখ লাখ মানুষের মাথায় এই ঘাতক তরবারি পড়ার আগে নিজের সিদ্ধান্ত বদলান।' এদিকে, অমিত মিত্রের টুইটের সপক্ষে মত পোষণ করে রাজ্যের মন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য। তাঁর মতে, যদি বস্ত্রশিল্পে জিএসটি বাড়ে তাহলে ক্রেতার সংখ্যা কমবেই। ফলে যাঁরা ছোট ব্যবসায়ী বা যাঁরা সদ্য বুটিক খুলেছেন, তাঁদের ব্যবসায় সমস্যা হবে। এদিকে, বিষয়টি নিয়ে বিজেপি খুব একচুল জমি ছাড়েনি তৃণমূলকে একহাত নিতে। রাজ্যের প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্রের টুইট প্রসঙ্গে বিজেপির তরফে শমীক ভট্টাচার্যের দাবি, অমিত মিত্রের 'আমলেই বাংলা একটি দেউলিয়া রাজ্যে পরিণত হয়েছে।' বিষয়টি বিশ্লেষণ করে শমীক ভট্টাচার্য বলেন, বস্ত্রশিল্পে জিএসটি বাড়িয়ে যেমন ১২ শতাংশ করা হচ্ছে, তেমনই কাঁচামাল যাঁরা কেনেন, তাঁদের ক্ষেত্রে জিএসটি ১৮ শতাংশ থেকে কমে ১২ শতাংশ করা হয়েছে। এরই সঙ্গে তিনি বলেন, ভারতে বস্ত্র শিল্পে শেষ ২ বছরে ৩০০ শতাংশের বৃদ্ধি দেখা গিয়েছে। ফলে এই সেক্টরকে আলাদা গুরুত্ব দিয়ে দেখছে সরকার। আর গোটা ব্যবস্থার মধ্যে ভারসাম্য রাখা হচ্ছে বলেও ব্যাখ্য়া করেন বিজেপি নেতা শমীক ভট্টাচার্য। তাঁর মতে এতে কোনও কারখানার দরজায় তালা পড়বে না। এমন পরিস্থিতিতে বছর ঘুরতেই শুরু হবে, বস্ত্রশিল্পে জিএসটি বৃদ্ধির প্রক্রিয়া। এই অবস্থায় রাজনৈতিক টানাপোড়েনের মাঝে , বাস্তবের ছবি কেমন হবে, তা নিয়ে রয়েছে বহু জল্পনা।