বিশ্ব ব্যাঙ্কের সঙ্গে রাজ্য পরিবহণ দফতরের একটি গুরুত্বপূর্ণ চুক্তি হয়েছে। অথচ সে বিষয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে কিছু জানানোই হয়নি বলে দাবি করলেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর অজান্তে এই চুক্তি হওয়ায় প্রশাসনিক মহলে আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছে। সোমবার রাজ্য মন্ত্রিসভার বৈঠকে এই প্রসঙ্গ উঠতেই মুখ্যমন্ত্রীর রোষের মুখে পড়েন পরিবহণমন্ত্রী স্নেহাশিস চক্রবর্তী।
আরও পড়ুন: নতুন মহকুমা হচ্ছে ফরাক্কা, মন্ত্রিসভার বৈঠকে মিলল ছাড়পত্র, কথা রাখলেন মমতা
সূত্রের খবর, সম্প্রতি পরিবহণ দফতর বিশ্ব ব্যাঙ্কের সঙ্গে একটি আর্থিক ও পরিকাঠামোগত চুক্তি সম্পন্ন করে। কিন্তু, এই চুক্তি সম্পর্কে মুখ্যমন্ত্রীকে কিছুই জানানো হয়নি। অথচ রাজ্য সরকারের কোনও নীতিগত সিদ্ধান্ত গ্রহণের আগে মুখ্যমন্ত্রীর কাছে অনুমতি নিতে হয়। বৈঠকে এ নিয়ে তীব্র অসন্তোষ প্রকাশ করেন মমতা।
বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী স্পষ্টভাবে বলেন, কোনও দফতর এই ধরনের গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিলে তা আগে তাঁকে জানাতে হবে। তিনি পরিবহণমন্ত্রীকে নির্দেশ দেন, চুক্তির সমস্ত তথ্য ও নথি দ্রুত তাঁর দফতরে পাঠাতে হবে। এই পরিস্থিতিতে পরিবহণ দফতরের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন উঠছে প্রশাসনের অন্দরমহলে।
এদিকে, এদিন মন্ত্রিসভার বৈঠকে আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় ছিল সরকারি আইন পরিকাঠামো সংক্রান্ত নির্দেশের অগ্রগতি। আগেই এই বিষয়ে কড়া নির্দেশ দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। কিন্তু, এখন দেখা যায়, বেশ কিছু ক্ষেত্রেই কাজ তেমনভাবে এগোয়নি। সেই কারণে আইনমন্ত্রী মলয় ঘটককে অতিরিক্ত দায়িত্ব দেওয়া হয়, যাতে তিনি বিষয়টি আরও ভালোভাবে পর্যবেক্ষণ করতে পারেন। পাশাপাশি মন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্যকেও কিছু নতুন দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তৃণমূল কংগ্রেসের লিগ্যাল সেলের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে তাঁকে। দলীয় ও সরকারি স্তরে দুই ক্ষেত্রেই চন্দ্রিমার গুরুত্ব যে বাড়ছে বলে মত রাজনৈতিক মহলের।
বৈঠকে আসে মুর্শিদাবাদ প্রসঙ্গ। মুর্শিদাবাদ সংক্রান্ত একটি ঘোষণা বাস্তবায়নের সিদ্ধান্ত নেয় মন্ত্রিসভা। মুখ্যমন্ত্রী কিছু দিন আগে ফরাক্কা সফরে গিয়ে ঘোষণা করেছিলেন, ফরাক্কাকে আলাদা মহকুমা করা হবে। সেই প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী ফরাক্কা, শামসেরগঞ্জ, সুতি-১ ও সুতি-২ ব্লক মিলিয়ে গঠিত হবে নতুন মহকুমা। মন্ত্রিসভার অনুমোদনের পর প্রশাসনিক প্রক্রিয়া দ্রুত শুরু হবে বলে সরকারি সূত্রে জানানো হয়েছে।