প্রায় ১০০ দিন আগে মানুষের মস্তিষ্কে চিপ ইনস্টল করেছিল ইলন মাস্কের টেক স্টার্টআপ নিউরালিংক। এই ব্রেইন-কম্পিউটার ইন্টারফেস (বিসিআই) চিপটির নাম লিঙ্ক। পরে তা পরীক্ষা করতে গিয়ে জানতে পেরেছিল, মস্তিষ্কে স্থাপিত ওই চিপে বিশেষ কিছু ত্রুটি ছিল, যা শীঘ্রই সংশোধন করা প্রয়োজন। যেমন ভাবা তেমন কাজ। অনায়াসেই কিছু সময়ে সংশোধন করা হয়েছিল চিপটির ত্রুটি। কিন্ত কীভাবে মস্তিষ্কের ভিতরে বসানো চিপটির ত্রুটি সাড়ানো সম্ভব হয়েছে? উঠছে প্রশ্ন।
- নিউরালিংক এর চিপের কোন কোন ত্রুটি সংশোধন করা হয়েছে
যে ব্যক্তির মাথায় প্রথমবার লিঙ্ক ইনস্টল করা হয়েছিল, সেই প্রথম ব্যক্তি হলেন নোল্যান্ড আরবাঘ, যিনি এই বছরের জানুয়ারিতে এটি নিজের মাথায় ইনস্টল করিয়েছিলেন। এই চিপটিতে ৬৪টি নমনীয় থ্রেড রয়েছে, যার মাধ্যমে এটি মস্তিষ্কের সঙ্গে সংযোগ স্থাপন করে। লিঙ্ক চিপ ইনস্টল করার পরে, এই থ্রেডগুলো ব্যক্তির চিন্তাশক্তির বিকাশ করে মস্তিককে নিয়ন্ত্রণ করতে পারে। নিউরালিংক একটি ব্লগ পোস্টে বলেছে যে লিঙ্কটির কিছু থ্রেডই কোনওভাবে স্থান থেকে সরে গিয়েছিল, যার কারণে এটি যথাযথ পরিমাণে ডেটা প্রেরণ করতে সক্ষম হয়নি।
সংস্থাটি আরও বলেছে যে এই ত্রুটিটি সমাধান করতে, কোম্পানি তাদের অ্যালগরিদমে কিছু পরিবর্তন করেছে, যা এটি থেকে প্রাপ্ত নিউরাল সংকেত বাড়িয়ে দিয়েছে। এর সঙ্গে কম্পিউটারের কার্সারকে যাতে সহজে পরিচালনা করা যায়, তার জন্য সংকেত অনুবাদ করার কৌশলও উন্নত করা হয়েছে। ব্যবহারকারীর ইন্টারফেসকে উন্নত করা হয়েছে। সংস্থাটি আরও বলেছে যে এই পরিবর্তনগুলির সঙ্গে, নোল্যান্ডের চিপ আগের চেয়ে ভালভাবে কাজ করতে শুরু করেছে।
প্রসঙ্গত, এই চিপটি অস্ত্রোপচারের সময় মস্তিষ্কে বসানোর জন্য ডিজাইন করা হয়েছিল। কোম্পানির দাবি, এর সাহায্যে প্যারালাইসিসে আক্রান্ত রোগীরা তাদের শরীরে যোগাযোগ ও নিয়ন্ত্রণ করতে পারবেন। সত্যিই তাই হয়েছে।
- যে ব্যক্তির মাথায় চিপটি রয়েছে, কী বলছেন তিনি
যে ব্যক্তির মাথায় চিপ বসানো হয়েছিল, তিনি আগে থেকেই হাত ও পা নাড়াতে পারতেন না, এখন তিনি শুধুমাত্র মস্তিষ্কের মাধ্যমেই ল্যাপটপ চালান, ভিডিয়ো গেম খেলেন, হাতের প্রয়োজনই পড়ে না। নোল্যান্ড এ প্রসঙ্গে জানিয়েছেন, সবচেয়ে বড় স্বাচ্ছন্দ্যের বিষয় হল যে আমি আমার বিছানায় শুয়েও লিঙ্ককে ব্যবহার করতে পারি। অন্য কোন সহায়ক প্রযুক্তি হলে আমাকে সাহায্য করার জন্য কিংবা আমাকে বসানোর জন্য কারও না কারও সাহায্যের প্রয়োজন হত। আর বসাটা আমার উপর মানসিকভাবে এবং আমার শরীরের উপরও চাপ সৃষ্টি করে। কিন্তু লিঙ্ক আমাকে আমার নিজের মতো করে বাঁচার আশ্বাস জুগিয়েছে। সারাদিন ধরে কাউকে এখন আর আমার সঙ্গে অ্যাডজাস্ট করার দরকার নেই।