এক যুবকের মৃত্যুকে কেন্দ্র করে চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগ তুলে ব্যাপক উত্তেজনা ছড়াল কলকাতার বেহালার একটি হাসপাতালে। মৃত যুবকের নাম শেখ মেহবুব আলম (৩০)। তিনি ঠাকুরপুকুরের বাসিন্দা। গতকাল রাতে দিঘা থেকে ফেরার পথে ওই যুবককে বিদ্যাসাগর স্টেট জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানেই মৃত্যু হয় যুবকের। ঘটনাকে কেন্দ্র করে রোগী পরিবারের কয়েকশো হাসপাতালের ভিতরে ঢুকে ভাঙচুর করার পাশপাশি নার্সদের মারধর করে বলে অভিযোগ। প্রাণ বাঁচাতে এক নার্স শৌচালয়ে ঢুকে দরজা আটকে দেন। এই ঘটনার পরেই কর্মবিরতির হুঁশিয়ারি দিয়েছেন নার্সরা। ইতিমধ্যেই পুলিশ এই ঘটনায় ২৮ জনকে আটক করেছে।
আরও পড়ুন : চিকিৎসকের উপর পুলিশি জুলুমের প্রতিবাদ জানাল ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন
কী ঘটেছিল?
জানা গিয়েছে, গতকাল রাত ৮.২০ টা নাগাদ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় যুবককে। চিকিৎসকরা ইসিজি করিয়ে ব্যথার ওষুধ দেন। এরপরেই যুবকের হৃদযন্ত্র বিকল হয়ে যায়। সিপিআর দেওয়া হয়। কিন্তু, তাঁকে বাঁচানো সম্ভব হয়নি। ৮.৫০ টা নাগাদ তাঁর মৃত্যু হয়। পরে রাত সাড়ে ১০ টা নাগাদ হাসপাতাল চত্বরে কয়েক শো মানুষ জড়ো হয়। এদিকে, মৃতদেহ বাড়ির লোকের কাছে হস্তান্তর করা হয়। তবে রোগীর পরিজনরা চিকিৎসাহ গাফিলতির অভিযোগ তুলে চিকিৎসার নথি চাইতে শুরু করেন। তবে হাসপাতলের তরফে জানানো হয়, নির্দেশ ছাড়া এইভাবে সরকারি হাসপাতালের চিকিৎসা সংক্রান্ত নথি কাউকে দেওয়া সম্ভব নয়।
এদিকে, এরইমধ্যে প্রায় দেড়শো লোক ইমারজেন্সি অবজার্ভেশন ওয়ার্ডের ভিতরে ঢুকে পড়ে হামলা চালায়। সেখানে ব্যাপক ভাঙচুর করে। সেখানে থাকা দুজন রোগীকে তৎক্ষণাৎ হাসপাতালের তরফে অন্যত্র সরিয়ে দেওয়া হয়। এক নার্সকে মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। হাসপাতালের বাইরের গেটেও ভাঙচুর করা হয়। নার্সদের অভিযোগ পুলিশকে খবর দেওয়া হলেও পুলিশ অনেক দেরিতে ঘটনাস্থলে পৌঁছেছে। পরে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। শেষ তথ্য অনুযায়ী ২২ জনকে আটক করা হয়েছে।
নার্সদের সংগঠন ‘নার্সেস ইউনিটি’-র পক্ষ থেকে ভাস্বতী মুখোপাধ্যায় বারবার এমন ঘটনার জন্য প্রশাসনের দিকে আঙুল তুলেছেন। চিকিৎসক এবং নার্সদের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। তাঁর অভিযোগ, রাজ্য সরকার নিরাপত্তা দেওয়ার কথা বললেও এদিনের ঘটনায় নিরাপত্তারক্ষীদের দেখা গেল না। প্রসঙ্গত, আরজি করের ঘটনার পরেই নিরাপত্তার দাবিতে টানা আন্দোলন করেছিলেন জুনিয়র ডাক্তাররা। তারপরেও বিভিন্ন হাসপাতালে এভাবেই চিকিৎসক, স্বাস্থ্যকর্মীদের উপর হামলা চলছে বলে অভিযোগ। ভাস্বতী হুঁশিয়ারি দিয়ে জানিয়েছেন, এরকমভাবে চলতে থাকলে তারা কর্মবিরতির পথে হাঁটবেন।