নতুন করে অস্থির হয়ে উঠেছে বাংলাদেশ। বিভিন্ন জায়গায় সংখ্যালঘুদের উপর হামলার ঘটনা ঘটছে। সেই পরিস্থিতিতে বাংলাদেশে গিয়ে আক্রান্ত হলেন বেলঘড়িয়ার এক যুবক। আক্রান্ত যুবকের নাম সায়ন ঘোষ। অভিযোগ, তিনি ভারতীয় এবং একজন হিন্দু জানার পরে তাঁর উপর ছুরি দিয়ে হামলা চালানো হয়। এছাড়াও, এই ইট, পাথর দিয়ে তাঁকে মারধর করা হয়। ঘটনায় তিনি শরীরের বিভিন্ন জায়গায় চোট পেয়েছেন। বাংলাদেশ পুলিশের বিরুদ্ধেও হয়রানির অভিযোগ তুলেছেন তিনি। কোনওক্রমে বাংলাদেশ থেকে এপারে পালিয়ে প্রাণে বেঁচেছেন যুবক।
আরও পড়ুন: বৈধ ভিসা থাকা সত্বেও ইসকনের ৫৪ জন ভক্তকে ভারতে প্রবেশ করতে দিল না বাংলাদেশ সরকার
জানা গিয়েছে, গত ২৩ নভেম্বর ব্যক্তিগত কাজে ঢাকায় গিয়েছিলেন সায়ন। ২৬ তারিখ তাঁর ফেরার কথা ছিল। তার আগের দিন বন্ধুর সঙ্গে ঢাকায় কেনাকাটা করতে বেরিয়েছিলেন। সেই সময় তাঁর ধর্মীয় পরিচয় এবং ভারতীয় নাগরিক জানতে পেরে কয়েকজন বাংলাদেশি যুবক তাঁর উপর হামলা চালায়। কেড়ে নেওয়া হয় তাঁর মোবাইল থেকে শুরু করে মানিব্যাগ। এর পাশাপাশি ছুরি নিয়ে তার উপর হামলা চালানো হয়। ইট এবং পাথর দিয়ে তাঁর মাথায় আঘাত করা হয়। তবে কেউই তাঁকে সাহায্যের জন্য এগিয়ে আসেনি। পরে ওই যুবক পুলিশের কাছে গিয়েছিলেন। কিন্তু পুলিশও তাঁকে সাহায্য করেনি বরঞ্চ তাঁকে নানাভাবে হয়রানি করেছে। পরে তিনি দর্শনা হয়ে গেদে সীমান্ত দিয়ে দেশে ফিরেছেন। বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের উপর কীভাবে অত্যাচার চলছে সেই ঘটনার সাক্ষী থাকলেন ওই যুবক। এখনও তাঁর চোখে মুখে রয়েছে আতঙ্কের ছাপ।
সায়ন বলেন, ‘ঢাকায় এক পরিচিতর বাড়িতে গিয়েছিলাম। সেখানেই ছিলাম। ফিরে আসার আগের দিন বন্ধুর কথাতেই ঢাকার বাজারে ঘুরতে গিয়েছিলাম। সেখানে যেতেই কয়েকজন ঘিরে ধীরে এবং আমার নাম, পরিচয় জানতে চাই । তখন আমি জানিয়েছিলাম আমি হিন্দু এবং ভারত থেকে এসেছি। তা জানার পরে তারা আমাকে এক পাশে নিয়ে যায়। এরপর আমার পকেট থেকে মোবাইল, মানিব্যাগ ছিনতাই করে নেই। টাকা পয়সা যা ছিল সব নিয়ে নেয়। তারপর তারা আমাকে মারধর করে ছুরি দিয়ে আঘাত করার পাশাপাশি ইট পাথর দিয়ে আমাকে বেধড়ক মারধর করে। সব মিলিয়ে দলে ৫ থেকে ৬ জন ছিল।’ তাঁর সঙ্গে থাকা বন্ধুকেও মারধর করা হয়।
সায়নের কথায়, বাংলাদেশি যুবকরা তাঁকে উদ্দেশ্য করে বলছিল, ‘তুই ভারতীয় হিন্দু কেন আমাদের দেশে এসেছিস।’ তিনি জানান, আশেপাশের লোকজন ছিল। কিন্তু, তারা কেউ সাহায্যের জন্য এগিয়ে আসেনি বলে অভিযোগ সায়নের। এমনকী পুলিশের কাছে অভিযোগ জানাতে গেলে নানাভাবে হয়রানি হতে হয়। শুধু তাই নয়, চিকিৎসা পরিষেবার জন্যও তাঁকে হয়রানি শিকার হয়। বিভিন্ন হাসপাতালে ঘুরতে হয়। পরের দিন আবার তিনি থানায় অভিযোগ জানানোর চেষ্টা করেন। তখন স্থানীয় কিছু নেতা তার বন্ধুর বাড়িতে এসে হুমকি দেয় বলে অভিযোগ। এরপরেই তিনি ভারতে পালিয়ে আসেন।