বউবাজারের মদন দত্ত লেনের একাধিক বাড়িতে ফাটলের ঘটনায় মেট্রো কর্তৃপক্ষের উপর ক্ষোভ উগরে দিলেন মেয়র ফিরহাদ হাকিম। ইস্ট–ওয়েস্ট মেট্রোর কাজের জেরে এবার মদন দত্ত লেনের ১০টি বাড়িতে ফাটল ধরেছে বলে অভিযোগ। সুতরাং বউবাজারে ফের ফিরল ২০১৯ সালের ভয়ঙ্কর আতঙ্কের স্মৃতি। আবার ভিটেহারা হলেন বউবাজারের বাসিন্দারা। আর তাই ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন কলকাতা পুরসভার মেয়র ফিরহাদ হাকিম।
ঠিক কী বলেছেন মেয়র? বউবাজারে আবার ফাটল ধরেছে এই খবর পেয়েই এলাকা পরিদর্শনে যান মেয়র ফিরহাদ হাকিম। পরিদর্শনে গিয়েছিলেন নয়না বন্দ্যোপাধ্যায়ও। এলাকা পরিদর্শনের পর মেট্রোর কাজ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন মেয়র ফিরহাদ হাকিম। তিনি বলেন, ‘যতক্ষণ না পর্যন্ত রেলবোর্ডের শীর্ষস্থান থেকে কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে ততক্ষণ পর্যন্ত এই পরিস্থিতি চলতেই থাকবে। কারণ এখানে যারা কাজ করছেন বা যারা কন্ট্রাক্ট নিয়েছেন তারা কেউই বিষয়টা সামলে উঠতে পারছেন না। আমি অবশ্য ইঞ্জিনিয়ার নই। কিন্তু দীর্ঘদিন কাউন্সিলর থাকার সুবাদে আমার মনে হচ্ছে যে জায়গায় মেশিন আটকে গিয়েছিল ওখানেই ওয়াটার পকেট তৈরি হয়েছে। সেই ওয়াটার পকেট থেকে জল রিভার্সে যাওয়ার জন্যই মাটি ধুয়ে কাদায় পরিণত হচ্ছে। আর তার ফলেই এই বিপত্তি ঘটছে। এইরকমভাবে চলতে থাকলে দু’দিন অন্তরই এলাকার বাড়িগুলিতে ফাটল দেখা দেবে।’
মেয়রের ক্ষোভ ঠিক কোন বিষয় নিয়ে? মেট্রো সূত্রে আগেই জানা গিয়েছে, মাটির নীচে সুড়ঙ্গ খোঁড়ার জন্য যে বোরিং মেশিন আনা হয়েছিল, সেগুলি মাঝপথে মুখোমুখি আটকে যায়। ৯ মিটারের একটি স্ল্যাব তৈরি করতে গিয়েই বারবার বাধা পেতে হচ্ছে ইঞ্জিনিয়ারদের। আর মাটির নীচ থেকে জল বেরিয়ে যাওয়াতেই ফাটল ধরছে এলাকার বাড়িগুলিতে। মেয়রের ক্ষোভ, ‘আমরা ক্ষতিগ্রস্তদের শিফট করব। তাদের খাবারের ব্যবস্থা করব। কিন্তু আবার এই একই সমস্যা দেখা দেবে। আমি বসে আছি বৈঠক করবার জন্য। কিন্তু রেলের শীর্ষস্তর থেকে এই বিষয়টা নিয়ে একটা বিস্তারিত আলোচনার প্রয়োজন রয়েছে। যথাযথ সিদ্ধান্তও নিতে হবে। প্রয়োজন হলে ওই এলাকার কতগুলি বাড়ি ভেঙে ফেলে একেবারে নীচ থেকে পাইলিং করে সেখানে বিল্ডিং তুলতে হবে। যার যত স্কোয়্যার ফিট সেটা দিতে হবে। দরকার হলে মেন রাস্তা থেকে এফএআর বা ফ্লোর এরিয়া রেশিও করতে হবে। এখন এখানে মেট্রো কাজের সঙ্গে যারা যুক্ত রয়েছেন তাদের সেই সিদ্ধান্ত নেওয়ার এক্তিয়ার নেই। ফলে রেলবোর্ডকেই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে হবে।’