কেন ভারতীয় সেনার হাতে মহাকুম্ভ মেলার দায়িত্ব তুলে দেওয়া হল না? পদপিষ্টের ঘটনার পরই উত্তরপ্রদেশের যোগী আদিত্যনাথ সরকারকে তুলোধোনা করে এমনই প্রশ্ন তুললেন পঞ্চায়তি আখাড়ার মহামণ্ডলেশ্বর প্রেমানন্দ পুরি। তিনি দাবি করেছেন, প্রশাসনিক ব্যর্থতা এবং অবব্যস্থাপনার কারণেই মহাকুম্ভে বিপর্যয় নেমে এসেছে। রাজ্য প্রশাসন স্রেফ ভিআইপিদের তোষামদের কাজে ব্যস্ত থেকেছে। সাধারণ পুণ্যার্থীদের নিয়ে কোনও মাথাব্যথা ছিল না বলে আক্রমণ শানান পঞ্চায়তি আখাড়ার মহামণ্ডলেশ্বর।
সেনাকে দায়িত্ব দিলে এরকম বিপর্যয় হত না, মত সাধুর
মৌনী অমাবস্যার দিনে মহাকুম্ভের ত্রিবেণী সংগমের কাছে পদপিষ্টের ঘটনার মধ্যেই সংবাদসংস্থা এএনআইয়ের সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ‘আজ প্রশাসনিক কারণে কলঙ্কিত হতে হল কুম্ভকে। আগেরবার স্নানের পরে আমরা সব আখাড়ার লোকজন প্রশাসনকে বলেছিলাম। যখন প্রশাসনের অনুমান ছিল যে ৪০-৫০ কোটি পুণ্যার্থী আসতে পারেন, তাহলে কেন সেনার হাতে মহাকুম্ভ (মেলার) দায়িত্ব তুলে দেওয়া হল না?’
তিনি স্পষ্টভাবে বলেন, ‘এত মানুষকে সামলানোর ক্ষমতা পুলিশ-প্রশাসনের নেই। আর সেটার ফলস্বরূপ আজ কোনও বাবা সন্তান হারিয়েছেন। (কান্নায় ভেঙে পড়েন) কেউ পুত্রকেে হারিয়েছেন (যদিও সরকারিভাবে কারও মৃত্যুর খবর জানানো হয়নি)। অত্যন্ত দুঃখের ঘটনা।’ তাঁর মতে, সেনার হাতে যদি মহাকুম্ভ মেলার দায়িত্ব তুলে দেওয়া হত, তাহলে এরকম বিপর্যয় হত না। সেনা পুরোটা ভালোভাবে সামলাত।
'স্রেফ তোষামদের রাজনীতিতে ব্যস্ত ছিল'
সেই রেশ ধরেই রাজ্য প্রশাসনের উপরে চূড়ান্ত ক্ষোভপ্রকাশ করে পঞ্চায়তি আখাড়ার মহামণ্ডলেশ্বর আরও বলেন, ‘অকাজের প্রশাসন স্রেফ তোষামদের রাজনীতিতে ব্যস্ত ছিল। শুধু কোনও ভিআইপি এলে শুধুমাত্র তাঁর সেবায় ব্যস্ত ছিল। আমি দেখলাম, যে ভিআইপি এসেছেন, প্রশাসন শুধুমাত্র তাদের দেখভাল করতে ব্যস্ত থাকল। এই কুম্ভ নিয়ে প্রশাসনের কোনও মাথাব্যথা ছিল না। কোনও ব্যবস্থা নিয়েই মাথাব্যথা ছিল না প্রশাসনের।’
যদিও প্রশাসনিক ব্যর্থতার কোনও অভিযোগে ভ্রূক্ষেপ করেননি উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী। বুধবার সকালে তিনি জানান, আখাড়া মার্গের ব্যারিকেড টপকানোর সময় কয়েকজন পুণ্যার্থী গুরুতর আহত হয়েছেন। যাঁরা আহত হয়েছেন, তাঁরা হাসপাতালে ভরতি করা হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে ইতিমধ্যে (সকাল ১০টা পর্যন্ত) প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে চারবার কথা হয়েছে। যাঁরা আহত হয়েছেন, তাঁদের পর্যাপ্ত চিকিৎসার ব্যবস্থা করেছে প্রশাসন।
গুজবে কান দিতে নিষেধ যোগীর
সেইসঙ্গে উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী দাবি করেন, মহাকুম্ভের পরিস্থিতি এখন নিয়ন্ত্রণে আছে। কিন্তু মৌনী অমাবস্যার পুণ্যস্নানের জন্য আজ প্রচুর পুণ্যার্থী এসেছেন। তাঁদের ত্রিবেণী সংগমের নাকের দিকে যেতে বারণ করেছেন যোগী। যে পুণ্যার্থী যেখানে আছেন, তাঁদের সেখানেই গঙ্গায় পুণ্যস্নান করার পরামর্শ দিয়েছেন উত্তরপ্রদেশ মুখ্যমন্ত্রী। আর বলেছেন যে কেউ যেন কোনও গুজবে কান না দেন।
(আপডেট: বুধবার সন্ধ্যা ৬ টা নাগাদ মহাকুম্ভের ডিআইজি বৈভব কৃষ্ণ জানিয়েছেন, ৩০ জনের মৃত্যু হয়েছে। আহত হয়েছেন ৬০ জন।)