বুধবার চিনের বিদেশমন্ত্রী ওয়াং ই-র সঙ্গে বৈঠক হল ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা ꦰউপদেষ্টা অজিত ডোভালের। ভারত-চিনের মধ্যকার ২৩তম বিশেষ প্রতিনিধি বৈঠক ছিল এটি। ২০১৯ সালের ডিসেম্বরের পর এই প্রথম এই পর্যায়ের বৈঠক হয় দুই দেশের মধ্যে। এবং বৈঠকের পরে দুই দেশের তরফ থেকে প্রকাশ করা হল দু'টি ভিন্ন বিবৃতি। যেখানে চিনের বিবৃতে দাবি করা হয়েছে, ৬টি ক্ষেত্রে দুই পক্ষ সহমত পোষণ করেছে, সেখানে ভারতের বিদেশ মন্ত্রকের প্রকাশিত বিবৃতিতে এমন কোনও কিছু বলা হয়নি। এদিকে চিনের বিবৃতিতে ২০০৫ সালের চুক্তির কথাও উল্লেখ করা হয়েছে। উল্লেখ্য, দুই দেশের সীমান্ত সমস্যা মেটাতে ২০০৫ সালে একটি চুক্তি হয়েছিল𓄧। তবে ভারতের বিবৃতিতে সেই চুক্তি সংক্রান্ত কোনও উল্লেখও দেখা গেল না।
বিদেশ মন্ত্রকের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, 'কাজানে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের নেওয়া সিদ্ধান্ত অনুযায়ী দুই দেশের সিনিয়র প্রতিনিধিরা মিলিত হয়েছেন সীমান্ত ইস্যুর সমাধান সূত্র খুঁজতে। ২০২০ সালে ভারত ও চিনের মধ্যে সীমান্তে যে বিরোধ দেখা দিয়েছিল, ত🐟ারপরে এটাই প্রথম এই ধরনের বৈঠক ছিল দুই দেশের মধ্যে।' এরপর বিবৃতিতে বলা হয়েছে, '২০২০ সালের থেকে শিক্ষা নিয়ে সীমান্তে শান্তি বজায় রাখার বিষয়ে বিভিন্ন ইস্যু নিয়ে আলোচনা হয়েছে দুই পক্ষের। এছাড়াও আঞ্চলিক এবং বৈশ্বিক বে কিছু ইস💝্যু নিয়ে আলোচনা হয়েছে দুই পক্ষের।'
এদিকে চিনের বিদেশ মন্ত্রকের তরফ থেকে প্রকাশিত বিবৃতিতে শিরোনামেই দাবি করা হয়েছে, সীমান্ত ইস্যুতে ভারত এবং চিনের প্রতিনিধিদের বৈঠকে ৬টি পয়েন্টের ওপর সহমতে পৌঁছানো গিয়েছে। যদিও ভারতের বিবৃতিতে এর কোনও উল্লেখ নেই। প্রসঙ্গত, বিগত কয়েক বছর ধরেই ডেপস্যাং এবং ডেমচকে ভারতীয় সেনাকে টহলে বাধা দিচ্ছিল চিনের পিপলস লিবারেশন আর্মি বা পিএলএ। তবে রিপোর্টে দাবি করা হয়, এই দুই জায়গায় ভারতীয় সেনার টহলদারির অধিকার পুনঃপ্রতিষ্ঠিত হয়েছে ২০২৪ সালের অক্টোবর থেকে। তবে জানা গিয়েছিল, ডেপস্যাঙের ওয়াই জংশনে স্থায়ী স্থাপত্য গড়েছে চিܫনা সেনা। এই ওয়াই জংশন হয়েই প্যাট্রলিং পয়েন্ট ১১, ১১এ, ১২ এবং ১৩-তে যেতে হয় ভারতীয় সেনাকে।
উল্লেখ্য, লাদাখের ডেপস্যাং এবং ডেমচকে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখায় সেনা প্রত্যাহার হয়েছে দিওয়ালির আগেই। ভারত ও চিন, দুই দেশের সেনাই যৌথ ভাবে সেখানে 'যাচাই পর্ব' চালিয়েছে। জানা গিয়েছে, ২০২০ সালের এপ্রিলের আগে যেখানে যার অবস্থান ছিল, প্রায় সেখানেই ফিরে গিয়েছে ভারত ও চিনা সেনার জওয়ানরা। এই আবহে লাদাখে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে বলে আশা করা হচ্ছে। এর আগে প্𓂃রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখার কাছে যে সব অস্থায়ী তাঁবু খাটানো হয়েছিল, তা খুলে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। এই আবহে সেনা প্রত্যাহারের প্রক্রিয়া দুই 🍨পক্ষের তরফ থেকই সঠিক ভাবে সম্পন্ন করা হয়েছে কি না, তা নিশ্চিত করতেই 'ভেরিফিকেশন' চলেছিল।
এর আগে শেষবার ২০২২ সালে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখার কাছে গোগরা হট স্প্রি𒐪ং এলাকার প্যাট্রোলিং পয়েন্ট ১৫ থেকে সেনা প্রত্যাহার করেছিল দুই দেশ। এরপর থেকে অবশ্য ভারত-চিন আলোচনা একপ্রকার থমকেই গিয়েছিল। তবে প্রধানমন্ত্রী মোদী রাশিয়ায় ২০২৪ সালের ব্রিকস সম্মেলনে যোগ দিতে যাওয়ার আগেই ভারতের বিদেশ মন্ত্রক ঘোষণা করে, প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখায় ভারতের টহলের অধিকার মেনে নিয়েছে চিন। এই আবহে প্রায় পাঁচ বছর পরে লাদাখের ডেপস্যাং এবং ডেমচকে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখায় টহলদারি নিয়ে জট কেটেছে। এর আগে ইকোনমিক টাইমসের রিপোর্টে দাবি করা হয়, প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখার পশ্চিম দিকে ভারত নিয়ন্ত্রিত এলাকায় 'বটলনেক' অঞ্চলে টহলদারির ক্ষেত্রে ভারতকে আর বাধা দেবে না চিন।